জেলা প্রতিনিধি
০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫৪ পিএম
বরিশালের হিজলা উপজেলার দুর্গম কানিবগার চরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইব্রাহিম আখন (৫০) ও ইয়াসিন আখন (৪৫) নামে দু’জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।
এতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে দু’জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরমার্শে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহত ইব্রাহিম ও ইয়াসিন হিজলা থানাধীন মেঘনা নদীর কানিবগার চরের মোসলেম আখনের ছেলে।
হিজলা থানার পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে বরিশালের হিজলা থানাধীন কানিবগার চরে মিজান গ্রুপ ও মিঠু চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে শোনা গেছে। ঘটনাস্থল বরিশাল-ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের বর্ডার এলাকার দুর্গম চর।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়ের আহমেদ মুঠোফোনে ঢাকা মেইলকে বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। আহত দু’জনকে লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একজন গুলিতে জখম রয়েছে। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে মামলা দায়ের করা হবে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, কানিবগার চরে মিজান গ্রুপ ও মিঠু চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ রয়েছে। চরের জমি দখলে নিয়েই দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শুনেছি দু’গ্রুপের লোকজনই আহত হয়েছে। তবে ইব্রাহিম ও ইয়াসিনের আহতের ঘটনা নিশ্চিত হয়েছি। অন্যদেরটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল দুর্গম চর। সেখানেই চাইলেই সময়মতো যাওয়া যায় না।
জমির মালিক দাবি করা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ইব্রাহিম ও ইয়াসিন আমাদের জমিতে চাষাবাদ করে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে রাসেল খাঁ, মিন্টু খাঁ, হালিম খাঁ, নাসির সর্দার, বাকের মৃধ্যা ও সোহাগসহ প্রায় ২০ জনের অস্ত্রধারী লোক ইব্রাহিম ও ইয়াসিনের ওপর হামলা করে। এসময় তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। একপর্যায়ে গুলি করলে ইয়াসিনের বুকে জখম হয়।
আহত ইয়াসিনের স্ত্রী কাজল রেখা বলেন, আমার ভাসুর ইব্রাহিম ও ইয়াসিন ঢাকায় থাকেন। মঙ্গলবার রাতেই তারা ঢাকা থেকে আসেন। এরপরই অতর্কিতভাবে মিন্টু খাঁ ও রাসেল খাঁ দলবল নিয়ে হামলা চালায়। আমার স্বামীর ইয়াসিনের দুই পা ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা। তারা ডাকাত। আমরা স্বামীর বুকে গুলি লেগেছে। আমার ভাসুর ইব্রাহিমের চোখ ওপড়ে ফেলতে চেয়েছিল। একপর্যায়ে দু’জনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
তবে এ ব্যাপারে রাসেল খাঁসহ অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। রাসেলে ভাই আমান উল্লাহ খাঁ গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ভাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। ঘটনার সময় তিনি ভোলা সদর থানা এলাকায় ছিল। থানার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখলে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে আহত ইব্রাহিম ও ইয়াসিন তাদের লোক হিসেবেও দাবি করেছেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, আহত ইব্রাহিমের মাথা-পা ও চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ইয়াসিনের বুকে চর্রা গুলির চিহ্ন রয়েছে। দু’পা ভাঙা মনে হয়েছে। তবে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস