জেলা প্রতিনিধি
০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩৩ পিএম
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পর পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ৪০ হেক্টর জমিতে রবি মৌসুমের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে সহস্রাধিক কৃষকের। কৃষকদের দাবি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় এবার ৪০ হেক্টর জমির প্রায় ২০ কোটি টাকার শীতকালীন ফসল নষ্ট হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, জলাবদ্ধতার কারণ নির্ধারণ করে কৃষি এলাকাগুলোতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নিরসন ও গণসচেতনতা তৈরি করা হবে।
কৃষক আবুল বাশার। দুই একর জমিতে শীতকালীন সবজি খিরা, শশা, মিষ্টি কুমড়া চাষাবাদ করেন। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টির পানি জমে এখন সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষি জমিতে অপরিকল্পিত বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে জলাবদ্ধতায় বছরের দু’বার ফসল নষ্ট হয় বলে দাবি করেন কৃষকেরা।
ওই এলাকার কৃষক মোস্তফা, কবির মিয়াজী, মো. জসিম গাজী ও রফিক দত্ত জানান, তাদের নিজেদের জমির ফসল যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমনি মাড়কী উত্তর ও পশ্চিম পাড়ার প্রায় দুই শতাধিক কৃষকের রবি মৌসুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাড়কী পশ্চিম পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শফিউল্লাহ মিয়াজী জানান, তাদের এলাকার কৃষক খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে রেখেছে তাদের বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের সরেজমিন এসে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এলাকার তিন ফসলি জমিগুলো আর আবাদ হবে না। পতিত পড়ে থাকবে বছরের অধিকাংশ সময়।
বলাখলাল গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, ৫ একর জমিতে লাউ, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, খিরা ও শসা চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির পানিতে সবগুলো ফসলে পচন ধরেছে। এখন কীভাবে চলবে সংসার আর কীভাবে কিস্তি পরিশোধ করবো, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
উপজেলার কালচো উত্তর ইউনিয়নের মাড়কী উত্তর পাড়া, পশ্চিম পাড়া, পৌর এলাকার বলাখাল ও সদর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের ফসলি মাঠে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব মাঠের কৃষকেরা বিভিন্ন সমিতি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তা পড়েছে। কৃষকদের সমস্যা নিরসনের কৃষি অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী।
উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার আগাম শীতকালীন সব্জির মধ্যে ২৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা, আলু, মরচি, খিরা, শসা, টমেটো, ফুলকপি, রসুন ও পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলছেন, সরকারি খাল ভরাট বা মাছ চাষ করে জলাবদ্ধতা তৈরি করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করার কোনো বিধান নাই। ইতোমধ্যে কিছু বাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
উপজেলার প্রায় সাড়ে চার লাখ বাসিন্দা কৃষি ও প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভর। কৃষকদের ফসলি মাঠ সুরক্ষায় দ্রুত হস্তক্ষেপ চান চাষিরা।
প্রতিনিধি/এসএস