images

সারাদেশ

নবান্নে জামাইদের নিয়ে জমে উঠেছে মাছের মেলা

জেলা প্রতিনিধি

১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৫২ পিএম

সারি সারি দোকানে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বিগ্রেড, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। চলছে হাঁকডাক ও দরদাম। এক কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের মাছ। লোকজনও উৎসাহ নিয়ে দেখছেন, কেউবা কিনছেন।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) নবান্ন উৎসব ঘিরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে দিনব্যাপী বসেছে মাছের মেলা।

এই দিনটির জন্য পুরো বছর অপেক্ষায় থাকেন কালাই উপজেলাবাসী। পঞ্জিকা অনুসারে পহেলা অগ্রহায়ণে বসে এই মাছের মেলা। অগ্রহায়ণ মাসে কিছুটা ঠান্ডা হলেও মেলা জুড়ে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতা আর কৌতুহলী মানুষের ঢল। মেলায় নদী, দিঘি ও পুকুরে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা দেশীয় প্রজাতির টাটকা মাছ কিনতে ভিড় জমান ক্রেতারা ও পাইকাররা।

thumbnail_IMG_20231118_095153

এই অগ্রহায়ণে মাঠ থেকে কৃষকদের ঘরে নতুন ফসল উঠলেই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন উপজেলার কৃষকেরা। আর এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর এখানে বসে মাছের মেলা। মেলায় অংশ নেয় উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জ, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মানুষ। এই উৎসবে প্রতি বাড়িতে মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ আসে মেলায়।

আজ সকালে মেলায় বিশালাকৃতির একটি মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাই পৌর সভার আকন্দ পাড়া মহল্লার মাছ বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম। তিনি ২০ কেজি ওজনের সিলভার মাছটির দাম হাঁকেন ১৬ হাজার টাকা। ২৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিগ্রেড ও সিলভার কার্প মাছ বেশি বিক্রি হয়েছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে।

thumbnail_20231118_100032

কথা হয় ক্রেতা সাবরিনা ইয়াসমিন এশা, আনিছুর রহমান, মুনিষ চৌধুরি, মোস্তাক রহমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে, কিন্তু দাম অনেকটা বেশি।

মাছ ব্যবসায়ী লেবু সরদার, আব্দুল কুদ্দুস মহন্ত মালী জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচাকেনা সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু বেচাকেনা হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ টিকবে।

thumbnail_IMG_20231118_085648

মেলার জন্য এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেছেন চাষি নাহিদ চৌধুরি। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছেন বলে জানান তিনি।

মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা জানান, বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা প্রশান্তি আসে।

thumbnail_20231118_100100

মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ময়েন উদ্দিন জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও নওগাঁ, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে এসেছেন এই মেলায়। মাছের সরবরাহ বেশ ভালো।

এ বিষয়ে কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা বলেন, দেশীয় জাতের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে এসব মাছ চাষ করায় এই জাতগুলো আবার ফিরে এসেছে। আমরা অতিথিপরায়ণ জাতি। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আত্মীয়দের মধ্যে পারস্পরিক মিলনমেলার সুযোগ ঘটে, এটা ভালো দিক।

টিবি