জেলা প্রতিনিধি
০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৫২ এএম
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা সর্বাত্মক অবরোধের তৃতীয় দিনে যশোরে একটি বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আগুনে পুরো বাসটি পুড়ে গেছে। তবে পার্কিং করে রাখা বাসটিতে যাত্রী না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, বিআরটিসির ওই যাত্রীবাহী বাসটি শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৭টায় মণিহার থেকে ভোলার চরফ্যাশানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। রাতে বাসটি শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এনে পার্কিং করে রাখেন চালক। এরপর গাড়িটিতে মোটরপার্টস তোলা হয়। কাজ শেষে চালক ও হেলপার গাড়ি থেকে নেমে যান।

পরবর্তীতে রাত পৌনে ১১টার দিকে হঠাৎ করে গাড়ির পেছনের অংশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয়রা। ওই সময় দ্রুত আগুন পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। তবে এর আগেই বাসের সিটসহ ভেতরের সিংহভাগ অংশই পুড়ে যায়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে, বাসে আগুনের খবর পেয়ে পুলিশ, ডিবি, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে তারা বাসের চালক, হেলপার, প্রত্যক্ষদর্শীসহ স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের সাথেও কথা বলেন।
বাসটির চালক মিলন হাওলাদার ঢাকা মেইলকে জানান, রাতে গাড়িটি পার্কিং করে তিনি গোসল করতে গিয়েছিলেন। এরমধ্যেই আগুনের খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন গাড়ির পেছনে ও উপরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
একই কথা জানিয়েছেন হেলপার মাসুম বিল্লাহ। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ভোলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাসে পার্টসপাতি তোলার পর আমি গাড়িটির একটু সামনের দিকে গিয়েছিলাম। এরমধ্যে লোকজনের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ফিরে এসে দেখি বাসে আগুন জ্বলছে। কে বা কারা আগুন দিলো, বা গাড়িতে কীভাবে আগুন লাগলো তা দেখিনি।

তবে যশোর জেলা পরিবহন সংস্থার শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুণ অর রশিদ ফুলুর দাবি, বিআরটিসি বাসটি কাউন্টার থেকে একটু দূরে বিপরীত দিকে পার্ক করে রাখা ছিল। সেখানে তেমন লোকজনের উপস্থিতি ছিল না। এই সুযোগেই বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শ্রমিক ইউনিয়নের এই নেতার দাবি, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের মধ্যে মণিহার এলাকায় যাতে কোনো নাশকতা না হয়, সেদিকে শ্রমিকেরা কড়া অবস্থান ছিল। এ কারণে যশোরে অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ফলে মরিয়া হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
সার্বিক বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন ঢাকা মেইলকে বলেন, বিআরটিসি বাসে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। পরে বাসের চালক, হেলপারসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেছি। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা এই নাশকতার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে পুলিশ, ডিবি, র্যাব- সবাই একযোগে কাজ শুরু করেছে। দ্রুত ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি/আইএইচ