উপজেলা প্রতিনিধি
২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৫৮ পিএম
বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানচলাচল কম দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত দক্ষিণবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাসের যাত্রীদের জন্য সাভারের নবীননগর বাস টার্মিনালে মোট বাস কাউন্টারের সংখ্যা ৩২টি। তবে রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে গিয়ে দেখা যায়, এর মধ্যে মাত্র ৪ কাউন্টার খোলা রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পরছেন খুলনা, বেনাপোল, বাগেরহাট, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর, বরিশাল, খুলনাসহ কয়েকটি জেলার যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ কাউন্টার থেকে টিকেট দেওয়া হচ্ছে না।
তবে টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দাবি, হরতালের কারণে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ যাত্রী না পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে যারা এসেছেন তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাবার পর টিকিট বিক্রি করা হবে। আবার অনেকে বলছেন রাস্তায় কয়েক জায়গায় গাড়ি পোড়ানোর খবর পেয়ে গাবতলী থেকে বাস ছাড়ছে না অনেক পরিবহন।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, আশুলিয়ার বাইপাইল ও ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, সড়কে তেমন কোনো গণপরিবহন নেই। তাই বেশিরভাগ মানুষই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, লেগুনায় চড়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন। হঠাৎ দুই একটি স্বল্প দূরত্বের বাসের দেখা মিললেও দূরপাল্লার বাসের দেখা মিলেনি কোথাও।
আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে খালার সঙ্গে ফরিদপুর যাবেন শাহরিয়াত আব্দুল্লাহ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ফরিদপুর টেক্সটাইল ইনিস্টিউটে উত্তীর্ণ হয়েছি আমি। সেখানে ভর্তির শেষ দিন আগামীকাল। তাই আজকেই সেখানে যেতে চাচ্ছিলাম ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে। কিন্তু কাউন্টারে এসে জানতে পারলাম হরতালের কারণে বাস ছাড়ছে না। তাই টিকেটও পাচ্ছি না। এখন বাধ্য হয়ে লোকাল পরিবহনে করে ভেঙে ভেঙে রওনা দিতে হবে।
আনিশা আক্তার নামে আরেক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি জিরাবোতে একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতাম। এই মাসে চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছি। তাই আজকে বাসার মালপত্রসহ গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি বেশিরভাগ কাউন্টার বন্ধ। যাও দুই একটি খোলা আছে তারাও টিকেট বিক্রি করছে না। এখন আমি এতো মালপত্র নিয়ে কিভাবে কি করবো বুঝতেছি না।
কমফোর্ট লাইন পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ইয়াকুব আলী ঢাকা মেইলকে জানান, সকাল থেকে কাউন্টার খুলে বসে আছেন কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ যাত্রী না পাবার কারণে বাস ছাড়তে পারছেন না। অন্যদিন এইসময়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি টিকেট বিক্রি হয়ে যায় কিন্তু আজকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ যাত্রী পেয়েছি। এই কজন যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়লে তো তেলের টাকাই উঠবে না। তার ওপর রাস্তায় কয়েক জায়গায় গাড়িতে আগুন দেওয়ার কথাও শুনতে পেলাম। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাস ছাড়া থেকে বিরত রয়েছে পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, মহাসড়কে নিরাপত্তার নিশ্চিতে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিমকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি র্যাবের কয়েকটি গাড়িকেও টহল দিতে দেখা যায়।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহিল কাফী ঢাকা মেইলকে বলেন, সড়কে চলমান যানবাহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক টিম সাভারের মহাসড়কগুলো বিশেষ দায়িত্ব পালন করছেন। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক তৎপর আছে।
টিবি