images

সারাদেশ

ঋণের চাপে ‘চিরকুট’ লিখে আত্মহত্যা, গ্রেফতার ১

জেলা প্রতিনিধি

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানীতে ঋণের চাপে সিরাজুল ইসলাম সুরুজ নামের এক চা দোকানি আত্মহত্যার ঘটনায় তরিকুল ইসলাম নামের এক সুদের কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ডাকবাংলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

গ্রেফতার তরিকুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনাহাটি গ্রামের মৃত শহর আলী মুন্সির ছেলে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান জানান, ৮ সেপ্টেম্বর হলিধানী এলাকায় ঋণের চাপে চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সিরাজুল ইসলাম সুরুজ নামের এক ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে সিরাজুল ইসলাম সুরুজের স্ত্রী ছফুরা খাতুন বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে এজাহার নামীয় আসামি তরিকুলকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। বাকি আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে ঋণের চাপ সইতে না পেরে সিরাজুল ইসলাম সুরুজ নামে এক ব্যবসায়ী শ্বশুর বাড়ি হলিধানী গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের রামচন্দ্র পুর গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে।

আত্মহত্যা আগে একটি চিরকুট লিখে যান সিরাজুল ইসলাম। চিরকুটে তিনি বলেন, সুদখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না! আমার জায়গা-জমি বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেক জনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া তার সাত, আট, দশগুণ পরিমাণ টাকা দিয়েও রেহাই দিল না তারা। কেউ মামলা করেছে, কেউ কেউ অপমান অপদস্থ করেছে। আমি আর সহ্য করতে না পেরে বিদায় নিলাম। আমার জানাজা হবে কিনা জানি না। যদি হয় তাহলে সুদখোররা টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদেরকে দিয়ে দিবেন। এই সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবেন। সুদখোরদের নাম বললাম না কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন তারা কারা।  

মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সবুরা খাতুন বলেন, আমার স্বামী সিরাজুল ইসলাম সুরুজ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে হলিধানী বাজারে একটি কনফেকশনারির দোকান দেন। হঠাৎ করে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে দোকান ছেড়ে দেন। এর মাঝে অনেক পাওনাদার তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। কোনো এক পাওনাদারের ফোনে তিনি ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাবার বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী সুদখোরদের অত্যাচারে এবং তাদের চাপে আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

স্ত্রী সফুরা খাতুন বাদী হয়ে সদর থানায় আত্নহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনহাটি গ্রামের শহর আলী মুন্সির ছেলে তরিকুল ইসলাম সহ সদর থানার হলিধানী ইউনিয়নের কোলা গ্রামের আবু বক্কর মাস্টারের ছেলে ফারুক ডাক্তার, হলিধানী বাজারের লুৎফর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান আনিচ ও সোনারদাইড় গ্রামের সৈয়দ আলী মেম্বরের ছেলে মতিয়ার রহমানকে আসামি করেন। 

প্রতিনিধি/এইচই