images

সারাদেশ

১৫৮ বছরের ইতিহাস জড়ানো নীলফামারীর চিনি মসজিদ

জেলা প্রতিনিধি

১৯ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৩৩ এএম

Failed to load the video

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে একশ ৫৮ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন চিনি মসজিদ। জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তিনটি গম্বুজসহ ছোট বড় ৫২টি মিনার নিয়ে গড়া এই মসজিদটির সৌন্দর্য আর সুনিপুণ কারুকার্য খুব সহজেই নজর কাড়ে সবার। অনবদ্য নির্মাণশৈলীর প্রাচীন এই স্থাপনাটি দেখতে আসেন দূরদূরান্তের মানুষ।

সৌন্দর্য বাড়াতে মসজিদটির দেয়ালে চিনা মাটির থালার ভগ্নাংশ ও কাচের ভগ্নাংশ বসানো হয়েছে। এই পদ্ধতিকে চিনি করা বা চিনি দানার কাজ বলা হয়ে থাকে। আর এ জন্যই মসজিদটি চিনি মসজিদ বা চিনা মসজিদ নামে প্রসিদ্ধ।
chini mosqueজানা যায়, মসজিদটি দৃষ্টি নন্দন করতে কলকাতা থেকে আনা হয়েছিল মর্মর পাথর ও চিনা মাটির টুকরো। এসব দিয়েই নান্দনিক দৃশ্য ও কুরআনের আয়াত লেখা হয় দেয়ালে। এছাড়াও এর নির্মাণে অনুসরণ করা হয়েছে মুঘল স্থাপত্যশৈলী। ফুলদানী, ফুলের ঝাড়, গোলাপ ফুল, চাঁদ তারাসহ নানা কারুকার্য অঙ্কিত আছে মসজিদটির দেয়ালে। রয়ছে উত্তর ও দক্ষিণে দুইটি ফটক। কারুকার্যমন্ডিত মূল ফটকে ফরাসি বা উর্দু ও বাংলা লেখা চিনি মসজিদ।

জানা যায়, ১৮৬৩ সালে স্থানীয় হাজি বাকের আলি ও হাজি মুকুর নামের দুজন ব্যক্তির উদ্যোগে বাস খড় দিয়ে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে হাজি হাফিজ আব্দুল করিমের উদ্যোগে ১৯২০ সালে মসজিদের ১ম অংশের পাকা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। তখন এর আয়তন ছিল দৈর্ঘ্যে ৪০ ফুট আর প্রস্থে ৩৯ ফুট।

এলাকাবাসীর সহায়তায় তহবিল সংগ্রহ করে ১৯৬৫ সালে মসজিদটির আয়তন আরও কিছুটা বাড়ানো হয়। পরে আরও একবার এলাকাবাসীর অর্থায়নে সংস্কার কাজ করা হয়েছিল নান্দনিক এই মসজিদটিতে।
chini mosqueকুড়িগ্রাম থেকে এ মসজিদে নামাজ পড়তে আসা হাসান সরকার নামের একজন বলেন, ‘এই মসজিদের কথা অনেক শুনেছি। আমার খুব ইচ্ছা ছিল— এই মসজিদে নামাজ পড়ার। বাংলাদেশের মধ্যে এমন সুন্দর মসজিদ আর একটি আছে কিনা জানি না।’

মসজিদ কমিটির সদস্য কবীর হোসেন বলেন, ‘মসজিদটির টিনটি অংশ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু অংশ ব্রিটিশ আমলে, কিছুটা পাকিস্তান আমলে এবং বাকি অংশের কাজ হয় বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর।’

তবে প্রাচীন এই মসজিদটিতে ফাটল ধরায় মুসল্লিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে উল্লেখ করে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. সাঈদ রেজা রিজভি বলেন, ‘মসজিদটির উপর অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাথরগুলোও খসে পড়ছে। এতে এই নির্মাণশৈলী নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে সবাই।’

এএ