images

সারাদেশ

ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের ঘোষণা থেকে সরে এল স্যান্ডর

জেলা প্রতিনিধি

২২ জুন ২০২৩, ০৭:৫১ পিএম

সেবাদান বাবদ সরকারের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধে অনাকাঙ্খিত বিলম্ব ও অসহযোগিতার অভিযোগে ২২ জুন বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রেক্ষিতে ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রাখা হয়নি বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে স্যান্ডরের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে। এর ফলে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রাখা হয়নি। যথারীতি কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা চালু রাখা হয়েছে। 

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে ডায়ালাইসিস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেডের ম্যানেজার (হিসাব) নাজমুল হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পরিশোধে গড়িমসির কারণে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কিডনি রোগের জটিলতায় ভুগতে থাকা রোগীদের ডায়ালাইসিস সেবা ফের বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাথে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিডনি ডায়ালাইসস সেবা দেওয়া হয়েছে রোগীদের।  

ডায়ালাইসিস সেবা চালু রাখায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়লাইসিস করতে আসা রোগীরা। এর মধ্যে ইয়াসমিন আক্তার নামে এক কিডনি রোগী বলেন, ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু সেবা চালু রাখায় এখন স্বস্তি বোধ করছি। কারণ সময়মতো চিকিৎসা না পেলে রক্তস্বল্পতা, শ্বাসকষ্ট ও শরীর ফুলে গিয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে কিডনি ডায়ালাইসিস রোগীদের। 

পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড ঢাকার জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের দুটি সেন্টার স্থাপন করে। এর মধ্যে চমেক হাসপাতালে ৩১টি মেশিনে এ ডায়ালাইসিস সেবা দেয়া হয়।

এক্ষেত্রে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সুপারিশ করা দরিদ্র রোগীদের প্রতি সেশনে ৪৮৬ টাকা ব্যয়ে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হতো এবং সরকার প্রতি সেশনে রোগীদের জন্য ২ হাজার ১৮০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। 

এদিকে ডায়ালাইসিস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডরের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ীই প্রতি বছর ডায়ালাইসিস ফি ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতেও এই ফি বাড়িয়ে ৫১০ টাকা এবং সরকারের ভর্তুকি ২৭৮৫ টাকা করা হয়। 

এরপর ১৯ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে কাঁচামাল সংকটে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখে স্যান্ডর। এছাড়া ৮ জানুয়ারি ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ করা নিয়ে আন্দোলনে নামে রোগীরা। 

এ অবস্থায় কোম্পানির কর্মকর্তারা চলতি মাস থেকে আবার প্রথম ৪ সেশনের প্রতিটির জন্য ২ হাজার ৯৩৫ টাকা এবং বাকি ৪ সেশনের প্রতিটির জন্য ৫৩৫ টাকা দিতে হবে বলে জানায়।  

প্রতিনিধি/একেবি