images

সারাদেশ

বকশীগঞ্জে থানার ওসি’র অপসারণ করার দাবি

জেলা প্রতিনিধি

১৯ জুন ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে হত্যা মামলার সব আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিকরা। বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানার ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তার অপসারণ দাবি করেন জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।

আজ সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত সাংবাদিক নাদিম স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে এ দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা’র সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জামালপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, রাজাকার পরিবারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ১১ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের ইন্ধনে তার সন্ত্রাসী বাহিনী সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলা করেছিল। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ এবং ভিডিওবার্তায় নিরাপত্তাহীনতার কথা বললেও ওসি সোহেল রানা সে সময় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ১৪ জুন ফের তিনি বাবু চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলে ঘটনাটি ‘চোখে সামান্য আঘাত লেগেছে’ বলে মন্তব্য করেন ওসি সোহেল রানা। সাংবাদিক নাদিম নিহত হওয়ার পরও ওসির ভূমিকা রহস্যজনক।

টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল ২৪ এবং দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার আনোয়ার হোসেন মিন্টু বলেন, পুলিশ এ পর্যন্ত ১৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করলেও এদের মধ্যে এজাহারভূক্ত আসামি মাত্র ৫ জন। মামলার প্রধান আসামি বাবু চেয়ারম্যানসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডে পুলিশের অভিযান ব্যর্থ।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিক নাদিমের হত্যাকারী বাবু চেয়ারম্যানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চাচাতো ভাই সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেছুর রহমান পান্না এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের ইন্ধন থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এ সময় সাংবাদিকরা রাষ্ট্রকে নিহত সাংবাদিকের পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করেন।

শোকসভায় সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, আমি যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই এবং আমার স্বামী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো সাংবাদিককে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, জামালপুর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ৭১'র সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ, জামালপুর প্রেসক্লাবের সহসভাপতি অধ্যাপক মো সুরুজ্জামান, কালের কন্ঠের প্রতিনিধি মোস্তফা মনজু, জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত জামান, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

উল্লেখ, বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার কলেজ মোড় এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন গোলাম রব্বানী নাদিম। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন নাদিমের ওপর হামলা করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যু হয়।

প্রতিনিধি/একেবি