জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০২ মে ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম
প্রথমবারের মতো ২১ জন ট্রেইনি পাইলটকে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এরমধ্যে প্রথম দফায় ১০ জনকে পাঠানো হলেও পরে আরও ১১ জন ট্রেইনি পাইলট প্রশিক্ষণ নিতে ফ্লোরিডায় যাবেন। এক মাস পর দ্বিতীয় ধাপে বাকি ১১ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে।
ইউএস-বাংলার সঙ্গে ১০ বছরের সেবা দেওয়ার চুক্তিতে ট্রেইনি পাইলটদের উচ্চতর এই প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। প্রশিক্ষণ চলাকালে তারা ১০ মাস ফ্লোরিডায় থাকবেন। এতে প্রতিজন পাইলটের প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ হবে ৬৪ হাজার ডলার। সবশেষ প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে প্রক্রিয়াগত কিছু কাজ শেষে এই ২১ জন পাইলট হিসেবে ইউএস-বাংলার বিমানে ক্যারিয়ার শুরু করবেন।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২ মে) বিকেলে উত্তরায় ইউএস-বাংলার পুরোনো কার্যালয়ে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রথম দফায় প্রশিক্ষণে যাওয়া ১০ ট্রেইনি পাইলট ছাড়াও ইউএস-বাংলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ওয়াহেদুল আলম, ইউএস-বাংলার অ্যাকাউন্টেবল ম্যানেজার (সিইও) লুৎফর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম, এয়ার অ্যাস্ট্রার (ডিএফও) জামিল আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, সারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত পাইলটের চাহিদা বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে। ভারতে তারা ১০০০ হাজার পাইলট তৈরির কাজ করছে। ইউএস-বাংলাকে এ জন্য ধন্যবাদ দেব।
প্রশিক্ষণে যাওয়া ট্রেইনি পাইলটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা যারা এ সুযোগ পেয়েছ, সত্যি ভাগ্যবান। তবে তোমরা শুধু ইউএস-বাংলাকে প্রেজেন্ট করতে যাচ্ছো তা নয়, পাশাপাশি দেশকেও রিপ্রেজেন্ট করবে। ভুলে গেলে হবে না প্রশিক্ষণের বাইরে তোমাদের অন্যকিছু ভাবা যাবে না। কারণ, এখানে দেশের সম্মানও জড়িত।
এ দিন অনুষ্ঠানে ফ্লোরিডায় যাওয়ার তালিকায় থাকা এক নারীসহ দুই ট্রেইনি পাইলটও নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এরমধ্যে সামিয়া নওশিন সারাহ বলেন, এটা আমাদের স্বপ্ন ছিল। ইউএস-বাংলা আমাদের যে সুযোগ দিচ্ছে তা সত্যি বিরল।
এছাড়া আশরাফুল ইসলাম বলেন, মধ্যবিত্তের সন্তান হিসেবে এমন স্বপ্ন পূরণ করা কঠিন। তাও সেটি আমেরিকার মতো দেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া। আজ আমাদের সেই স্বপ্নটি ইউএস-বাংলার মাধ্যমে পূরণ হতে যাচ্ছে।
অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২২ সালের শুরুতে স্টুডেন্ট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হিউম্যান রিসোর্সের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে ২০২২ সালের মে থেকে জুলাই মাসে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ২১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে বাছাই কমিটি। যারমধ্যে আজ প্রথম ধাপে ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত স্মির্না বিচের এপিক ফ্লাইট একাডেমীতে ১০ মাসের ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স সম্পন্ন করতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেশ ত্যাগ করবেন।
ধারাবাহিকভাবে আগামী জুন মাসে দ্বিতীয় পর্বে আরও ১১ জন প্রশিক্ষণার্থী ফ্লোরিডার উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করবেন। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএসিপিএল) প্রাপ্ত হবেন এই ২১ ট্রেইনি পাইলট। পরে সফলভাবে ফ্লাইট ট্রেনিং শেষ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফটের ট্রেইনি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। যার মধ্যদিয়ে একজন পাইলট প্রশিক্ষণার্থীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার অপেক্ষা ঘুচবে ইউএস-বাংলার। সেই সঙ্গে এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইতিহাস সৃষ্টি করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
স্টুডেন্ট পাইলটের মতো এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। দেশের স্বনামধন্য এয়ারলাইনটির ২ হাজার ৩৫০ জনেরও অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এরমধ্যে দেশি-বিদেশি পাইলট রয়েছে ১৯০ জনেরও বেশি।
এমআইকে/আইএইচ