images

ককপিট

তৃতীয়বার বিধ্বস্ত হওয়া চীনা এফ-৭ যুদ্ধবিমানে কী আছে?

এভিয়েশন ডেস্ক

২১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম

চীনা এফ-৭ যুদ্ধবিমান বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মতো বিধ্বস্ত হয়েছে। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এই প্রশিক্ষণ বিমান এফ-৭ বিজিআই উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয় বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।

বাংলাদেশে এই মডেলের বিমান এর আগেও আরও দুইবার দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। এতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন। এবার এই দুর্ঘটনার পরে চীনা এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। তবে বিমানটি সম্পর্কে জানে না অনেকেই। পাঠকদের জন্য চীনা এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। প্রস্তুতকারক চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশন। জানা যায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে এই সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক মডেলের যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর চীন এই সিরিজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।

fbgi

এফ-৭ বিজিআই (যেখানে আই বলতে ইমপ্রুভড বা আগের ভার্সনের চেয়ে উন্নত বোঝানো হয়) যুদ্ধবিমানটি মূলত এফ-৭ বিজি-এর উন্নত রূপ, যার মূল ভার্সন জে-৭ জি। এই এফ-৭ বিজিআই মূলত বাংলাদেশের জন্যই আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল।

এফ-৭ বিজির তুলনায় এফ-৭ বিজিআইয়ের বেশ কিছু চোখে পড়ার মতো আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন— এফ-৭ বিজিআইয়ে তিনটি মাল্টিফাংশনাল ডিসপ্লে এবং আরও শক্তিশালী ফায়ার কন্ট্রোল রাডার রয়েছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২০১১ সালে ১৬টি যুদ্ধবিমান সরবরাহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সাল নাগাদ এই যুদ্ধবিমানগুলোর ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।

বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই এফ-৭ বিজিআই ভ্যারিয়েন্ট। তবে এফ-৭ এমবি ও এফটি-৭ ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে। তবে মোট ফাইটার ভ্যারিয়েন্ট ৩৬টি।

f7gi1

লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর গতি সাধারণত শব্দের গতির অন্তত ২ দশমিক ২ গুণ। এগুলোতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ডপয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো ভার বহন করতে পারে।

এ ধরনের যুদ্ধবিমানের ককপিটে একজনমাত্র পাইলট বসতে পারেন। ককপিট সম্পূর্ণ কাচের। এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা হয়েছে কেএলজে-৬ এফ রাডার। এই যুদ্ধবিমান ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ৫০০ মিটার বা ৫৭ হাজার ৪২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, বেশিরভাগ রাশিয়ার মিগ-২১ ও অন্যান্য সমসাময়িক অনেক যুদ্ধবিমানের চেয়ে এটি বেশি দ্রুত ম্যানুভার বা দিক পরিবর্তনে সক্ষম। এর পাল্লা কমবেশি ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার।

এমএইচটি