অটোমোবাইল ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৭ এএম
সম্প্রতি সড়কে মোটরসাইকেলে হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়ার বেশ কিছু ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সাধারণত যান্ত্রিক ত্রুটি, জ্বালানি লিক বা ইঞ্জিনের অতিরিক্ত তাপ থেকে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকে। রাইডারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলন্ত অবস্থায় আগুন ধরলে করণীয় এবং আগুন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো জানা থাকা জরুরি।
মোটরসাইকেলে হঠাৎ আগুন ধরলে কী করবেন?
১. শান্ত থাকা ও দ্রুত থামা: আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত রাস্তার একপাশে নিরাপদ জায়গায় বাইকটি থামান।
২. ইঞ্জিন ও ফুয়েল সুইচ বন্ধ করা: বাইক থামানোর সাথে সাথে ইগনিশন কি (চাবি) বন্ধ করুন এবং সম্ভব হলে ফুয়েল ট্যাংক বা পেট্রোল নব দ্রুত বন্ধ করে দিন।
৩. নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়া: আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, তাই বাইক থেকে অন্তত ১০-১৫ ফুট দূরে সরে যান।
৪. আগুন নেভানোর চেষ্টা: যদি ছোট আগুন হয়, তবে বালি বা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করুন। কোনোভাবেই আগুনের ওপর পানি দেবেন না, কারণ তেলের ওপর পানি দিলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে।

৫. হেল্পলাইন: আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য নিন।
মোটরসাইকেলে আগুন ধরা ঠেকাতে করণীয়
ফুয়েল লাইন পরীক্ষা: নিয়মিত ফুয়েল পাইপ এবং ট্যাংকের সিল পরীক্ষা করুন যাতে কোনো লিক না থাকে।
ওয়্যারিং বা বৈদ্যুতিক সংযোগ: বাইকে কোনো লুজ ওয়্যারিং বা অননুমোদিত অতিরিক্ত ইলেকট্রিক গ্যাজেট (যেমন: হাই-ভোল্টেজ হর্ন বা অতিরিক্ত লাইট) লাগানো থেকে বিরত থাকুন। শর্ট সার্কিট আগুনের অন্যতম প্রধান কারণ।
লুব্রিকেন্ট চেক: নির্দিষ্ট সময় পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। পুরোনো বা নষ্ট ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের ঘর্ষণ বাড়িয়ে তাপমাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখার কার্যকর উপায়
উন্নত মানের কুল্যান্ট: লিকুইড কুলড বাইক হলে রেডিয়েটর ও কুল্যান্ট লেভেল নিয়মিত চেক করুন।
এয়ার ফিনস পরিষ্কার রাখা: এয়ার কুলড বাইকের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনের বাইরের ফিনস বা খাঁজগুলো পরিষ্কার রাখুন যাতে বাতাস সরাসরি ইঞ্জিনের তাপ শুষে নিতে পারে।
ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড: আপনার বাইকের ম্যানুফ্যাকচারার যে গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে, সেটিই ব্যবহার করুন।
লং জার্নি বা দীর্ঘ ভ্রমণে করণীয়
১. পর্যাপ্ত বিরতি: প্রতি ৫০-৭০ কিমি বা এক ঘণ্টা রাইড করার পর বাইককে অন্তত ১০-১৫ মিনিট বিশ্রাম দিন। এতে ইঞ্জিন ঠান্ডা হওয়ার সুযোগ পায়।
২. টায়ার প্রেশার: দীর্ঘ পথ চলার আগে টায়ারের হাওয়া বা প্রেশার পরীক্ষা করুন। অতিরিক্ত বা কম হাওয়া ঘর্ষণ বাড়িয়ে চাকা ও ইঞ্জিনকে গরম করে তোলে।

৩. জ্বালানি পূর্ণ করার সময় সতর্কতা: অনেক সময় ট্যাংক একদম কানায় কানায় ভরে ফেললে রোদে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে লিক হতে পারে। তাই কিছুটা ফাঁকা রাখা নিরাপদ।
৪. প্রতিরক্ষামূলক গিয়ার: দীর্ঘ ভ্রমণে সবসময় হেলমেট, গ্লাভস এবং সেফটি জ্যাকেট ব্যবহার করুন, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল ভ্রমণে কত কিলোমিটার পরপর বিরতি নেওয়া উচিত?
সচেতনতা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণই পারে আপনার শখের মোটরসাইকেলটিকে নিরাপদ রাখতে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নিকাণ্ড রোধ করতে।
এজেড