নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম
প্রতি বছর অমর একুশে বইমেলার শেষ দিনে মাসজুড়ে কত টাকার বই বিক্রি হয়েছে সেটা জানালেও এবার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি সেটা জানাতে পারেনি। ফলে মেলায় বই বিক্রির পরিমাণ নিয়ে বিভ্রান্তিও ছড়িয়েছে। অবশেষে মেলা শেষ হওয়ার চার দিন পর মাসজুড়ে বই বিক্রির পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা দিলো বাংলা একাডেমি। যদিও ঠিক কত টাকার বই বিক্রি হয়েছে এর পুরো বিবরণ জানাতে পারেনি সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত পোস্ট দিয়ে বই বিক্রির হিসাব দেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এ মোট বই বিক্রির পরিমাণ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়েছে। মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রদত্ত প্রতিবেদনে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমির নিজস্ব বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৬১ লাখ বলে জানিয়েছিলেন। অনেকেই সে সংখ্যাকে মেলার মোট বিক্রির পরিমাণ ধরে নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বা অসচেতনভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। এমনকি কোনো কোনো জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন চ্যানেলও দায়িত্বহীনভাবে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করেছে।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, মেলা পরিচালনা কমিটি প্রকাশকদের কাছ থেকে বিক্রয়-প্রতিবেদন চেয়ে থাকে। এবারও চেয়েছে। এবার বইমেলায় অংশগ্রহণকারী সর্বমোট প্রতিষ্ঠান ৭২১টি। এর মধ্যে ১৮টি প্রতিষ্ঠান মিডিয়া ও স্বাস্থ্যসেবার। বাকি ৭০৩টি প্রকাশনা-প্রতিষ্ঠান। এবার যথেষ্ট তাগাদা দিয়ে এবং সময়ক্ষেপণ করে আমরা মোট ৩৫১টি প্রতিষ্ঠানের বই বিক্রির হিসাব পেয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট বিক্রির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্ভাব্য বিক্রির পরিমাণ যোগ করে এ হিসাবে সর্বমোট বিক্রি আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা হতে পারে।
বাংলা একাডেমি জানায়, এবার মেলা শেষে বাংলা একাডেমির মোট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৩ টাকা। যদিও বাংলা একাডেমি ২০২৪ সালে মেলায় এক কোটি ৩৬ লাখ টাকার বই বিক্রি করে। তার আগের বছর করে এক কোটি ৩৩ লাখ টাকার৷
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবার ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলার থিম ছিল ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। মেলার অবয়বে ছিল তিনটি রঙের প্রাধান্য- লাল, কালো ও সাদা। আয়োজকদের ভাষ্য, লাল সংগ্রামের প্রতীক; কালো শোকের প্রতীক আর সাদা শান্তির প্রতীক।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭০৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৮৪ ইউনিটের স্টল বরাদ্দের তথ্য দেওয়া হয়। বাংলা একাডেমিসহ ৩৭টি প্রতিষ্ঠান উভয় প্রান্তে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পায়। এক ইউনিটের ৩৮৪টি, দুই ইউনিটের ২১৯টি, তিন ইউনিটের ৬১টি এবং চার ইউনিটের ২৩টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
শিশুদের জন্য ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০টি ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর রাখা হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে। এই চত্বরে ১৩০টি লিটলম্যাগ স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
জেবি