বোরহান উদ্দিন
১৪ মে ২০২৩, ০৮:৫১ এএম
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কয়েকদিন ধরে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। তবে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকে ঘূর্ণিঝড় দেখার অদ্ভূত কৌতুহলী মন নিয়ে সমুদ্রপাড়ে আসেন। কেমন গতিতে মোখা এগিয়ে আসছে তা দেখতে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে আসেন এসব মানুষ। কিন্তু ভয়াবহ হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা মোখার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচাতে এসব মানুষকে সৈকত থেকে সরিয়ে যেতে বলা হলেও অনেকে তা মানছেন না। শেষ পর্যন্ত পর্যটকরা সমুদ্রপাড় ছাড়লেও সেজন্য রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়েছে টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যদের। তাদের ‘অ্যাকশনে’ ফাঁকা হয়ে গেছে সমুদ্র সৈকত এলাকা।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে টুরিস্ট পুলিশের এমন অবস্থানের কারণে রোববার পুরো সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়েনি।
সকালে সরেজমিন কক্সবাজারের কলাতলী ও সুগন্ধা বিচ ঘুরে দেখা গেছে, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে টুরিস্ট পুলিশের একদল সদস্য যাতে করে কেউ বীচে নামতে না পারেন সেজন্য কাজ করছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ সাগরের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। হ্যান্ডমাইকে সাইরেন বাজিয়ে তাদের সরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।
স্থানীয় অনেককে বীচের কাছে গিয়ে ঘুরে আসতে দেখা গেছে। অবশ্য তাদের দাবি, সমুদ্রের আচরণ সম্পর্কে তারা অনেকটা জানেন। যে কারণে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকায় কাছাকাছি যাচ্ছেন।
টুরিস্ট পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়ার পর থেকেই পর্যটকরা যেন ঝুঁকিতে না পড়েন সেজন্য কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।
সমুদ্র উত্তাল থাকলে কাছে যেতে বারণ করতে পর্যটকদের মাঝে প্রচারণাও চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। এছাড়া নিয়মিত টহলও জোরদার করা হয়েছে।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক সোবহান মোল্লা ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এসপি স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতে যাতে কোনো ধরণের সমস্যা না হয়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পর্যটকদের ক্ষতি না হয় সেজন্য কাজ করছি। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপকতার কথা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এরমধ্যেও কৌতুহলী মানুষ অনেকে এখানে এসেছেন। তাদেরও নিরাপদে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।’
কক্সবাজারে শহরের অটোচালক নূরুল আমিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘শনিবার ঢাকা থেকে অনেক মানুষ এসেছে যারা সমুদ্র কেমন উত্তাল হয় এইটা দেখার জন্য। দেখে মনে হয়েছে এরা সবাই শিক্ষিত মানুষ। খারাপ লেগেছে। তাদেরও তো অন্যদের চেয়ে বেশি ভালো বোঝার কথা ছিল।’
সকালে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, ভাটার সময় হলেও সমুদ্রে ঢেউয়ের গর্জন শোনা যায় অনেক দূর থেকে শোনা যায়। ক্রমেই ঢেউয়ের আকৃতি বড় হতে দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন, জোয়ার আসা পর্যন্ত এমনটা চললেও আরও বড় আকারের ঢেউ আঁছড়ে পড়বে।
বিইউ/এমআর