images

কৃষি ও পরিবেশ

জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার চায় বাংলাদেশ

বোরহান উদ্দিন

১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১২ পিএম

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ২০৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচারও দাবি করেছেন।

তিনি বলেন, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্য পূরণে উন্নত দেশগুলোকে দ্রুত নির্গমন হ্রাসে উদ্যোগী হতে হবে এবং প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

কপ-২৯ এ অনুষ্ঠিত ‘প্রাক-২০৩০ উচ্চাভিলাষ’ বিষয়ক বার্ষিক উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। একইসঙ্গে তিনি জলবায়ুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কীভাবে প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা মোকাবিলা করছে, তা তুলে ধরে সমন্বিত বৈশ্বিক উদ্যোগের ওপর জোর দেন। 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, এই বছর দু’টি ভয়াবহ বন্যা বাংলাদেশে ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি করেছে, যা জাতীয় বাজেটের ১.৮ শতাংশের সমান। গত ১৮ মাসে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ১৫টি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটি। এর মধ্যে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের অবদান মাত্র ০.৪ শতাংশ হলেও দেশটি চরম ক্ষতির শিকার।

467471215_540450062098611_6437715345930895729_n

তিনি আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২২ শতাংশ নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ২৭ মিলিয়ন টন নির্গমন শর্তহীনভাবে এবং ৬১ মিলিয়ন টন শর্তসাপেক্ষে কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজস্ব তহবিল এবং ১৩৫ বিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক সহায়তা।

তিনি বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে উন্নত দেশগুলোকে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) শক্তিশালী করতে হবে, বাজার পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে এবং উচ্চমানের জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।

পরে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে 'ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণ মূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি' শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির জন্য বৈশ্বিক কার্যকরী ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এর আগে, সকালে পরিবেশ উপদেষ্টা নেপালের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী Ain Bahadur Shahi Thakuri এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আলোচনা হয় জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলার প্রশমন, অভিযোজন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে। বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রী জানান নেপাল বাংলাদেশকে আরও জলবিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী। 

এছাড়াও লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার ওপর জোর দেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।  

বিইউ/এমএইচএম