নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম
দেশের প্রত্যন্ত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৮) জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে দুই দিনের জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাতিনাজ ফিরোজ, এশিয়ান পিপলস্ মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি)’র সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশীদ, জাপানের প্রতিনিধি মাকিকু আরিমা, নেপালের প্রতিনিধি অর্জুন কারকি, ‘তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন’এর ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কাইনান হাউটন, ইউএনডিপি’র সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক, সিইআর প্রতিনিধি চৌধুরি মোহাম্মদ শাহরিয়ার আহমেদ, আইইইএফএর প্রতিনিধি শফিকুল আলম, কোষ্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র প্রমুখ।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে কম দায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে। আবার যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, জলবায়ু অভিযোজনে তারাই সবচেয়ে কম সক্ষমতাসম্পন্ন। তাই এই সংকট মোকাবেলায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে ধনী দেশগুলোকে বাধ্য করতে সম্মিলিত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, বর্তমানের যে জলবায়ু সংকট তা মানবসৃষ্ট। নানাভাবে আমরা পরিবেশকে নষ্ট করছি। সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলো বিভিন্ন লাভজনক প্রকল্পের আওতায় এনে প্রতিনিয়ত তা ধ্বংস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। এই সমাবেশ থেকে নিজেদের করণীয় খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ি ধনী দেশগুলোকে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে বাধ্য করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
এপিএমডিডির সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল বলেন, বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি গতিতে জলবায়ু পরিবর্তন সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের পৃথিবীর গড় তাপমাত্রার ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ধনী দেশগুলো ক্রমাগত কার্বন নিঃসরণের ফলে তা আপাতদৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভব। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিউট্রাল হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের ধারে কাছেও নেই আমরা। আগামী দুই-তিনটি বছর আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে ধনী দেশগুলোকে বাধ্য করতে হবে।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনের এই আলোচনায় দেশি-বিদেশি নয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।
ডিএইচডি/জেবি