নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৭ পিএম
পৃথিবীব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়কে সামনে রেখে প্রত্যেক বছর পালিত হয় বিশ্ব খাদ্য দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও ১৬ অক্টোবরের অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ব খাদ্য দিবস। এই উপলক্ষে ১৬-২০ অক্টোবর চলমান বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম এশিয়াব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে সমনে নিয়ে আসাসহ অত্র অঞ্চলের তীব্র খাদ্য সমস্যাকে তুলে ধরার জন্য বেশ কিছু দাবিসহ খাদ্য ও জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে এই কর্মসূচিটির আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকার কামরাঙ্গীরচর শেখ জামাল হাই স্কুলের সামনে এশিয়াব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে খাদ্য ও জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে নাগরিক সমাবেশ ও নৌর্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
এশিয়া পিপলস্ মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিএমডিডি) আয়োজনে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই কর্মসূচি খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে জোরদার, বৃহৎ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কৃষি-খাদ্যকে একচেটিয়াকরণে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এশিয়ার জনগণের ওপর বিরুপ প্রভাব তুলে ধরতে এশিয়ার ৮টি দেশে একযোগে আয়োজিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ব্রতী, সিপিআরডি, বনলতা নারী সংস্থা, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, ইকুইটি বিডি, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটি, নিরাপদ চিকিৎসা চাই ও সচেতন নাগরিক সমাজ যৌথভাবে এই প্রোগ্রামটির আয়োজন করেছে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, বর্তমানে অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যা অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা বলে আসছে। এর কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তিত হওয়া। সামনের দিনগুলোতে তা আরও চরম আকার ধারণ করবে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ
তিনি আরও বলেন, পূর্বে বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ হিসেবে পরিচিত থাকলেও বর্তমানে আমরা তার প্রতিফলন দেখতে পাই না। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ক্ষরা, বন্যা, নদী ভাঙন, উত্তরবঙ্গের মরুকরণসহ বিভিন্ন অস্বাভাবিক আবহাওয়াজনিত ঘটনাগুলো উন্নতদেশগুলোর অনিয়ন্ত্রিত প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ ও পরিবেশ দূষণের কারণেই ঘটছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে আমাদের মতো দেশগুলো খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে আছে। কাজেই আমাদের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আপনাদের সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানাই। একই সাথে, দায়ী দেশগুলো যদি আমাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সকলেই একসাথে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য করা হবে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও মৎস্যচাষ বিভাগের চেয়ারম্যান, মীর মোহাম্মদ আলী এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে আমাদের যে খাদ্য সংকট তার জন্য প্রধানতধনী দেশগুলোই দায়ী। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি একজন মানুষের মৌলিক অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট হলেও উন্নত দেশগুলোর বেপরোয়া পরিবেশ দূষণে তা হুমকির সম্মুখীন। খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগাতে হবে যাতে করে আমাদের মতো গরিব দেশগুলো বৃহৎ কোম্পানিগুলোর স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগী হওয়ার পরিরর্তে নিজেদের জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।
এ সময় অন্যদের মধ্যে নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা, সচেতন নাগরিক সমাজের নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর আদেল, শিশুদের মুক্ত বায়ু সেবন সংস্থার মো. সেলিম, নিরাপদ চিকিৎসা চাইর উম্মে সালমা, বনলাতা নারী উন্নয়ন সংস্থার ইশরাত জাহান লতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএইচডি/এইউ