বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জমিতে তিন ফসলের পথ দেখাচ্ছে ব্রি ধান ১০২, হচ্ছে বাড়তি আয়

ওয়াজেদ হীরা
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৩, ০৩:১৭ পিএম

শেয়ার করুন:

একটি জমিতে হচ্ছে তিনটি ফসল। দুইবার হচ্ছে প্রদান খাদ্য শস্য ধান। আর এরমধ্যে হচ্ছে আরও একটি ফসল সরিষা বা স্বল্প মেয়াদের যেকোনো শাকসবজি। অথচ এক বছর আগেও আমনের পর মাঝে বোরো লাগানোর আগ পর্যন্ত জমি থাকতো খালি। এখন সেই খালি জমিতে বাড়তি আয় হচ্ছে কৃষকের। আর এই বাড়তি আয়ের পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক আবিষ্কৃত নতুন জাতের একটি ধান ব্রি ১০২। একদিকে ধানে ভরে উঠছে কৃষকের গোলা, অন্যদিকে একই জমি থেকে বাড়তি আয়ে লাভবান হয়ে খুশির হাসি চাষিদের মুখে।

সম্প্রতি কয়েকটি ফসলের মাঠ ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন


টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মুশুদ্দি কামারপাড়া গ্রামের কৃষক ৫৫ বছর বয়সী আব্দুল মজিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার চাচাতো ভাই এটি (ব্রি ১০২) করেছে এবার। আমরা দেখে খুবই খুশি। ব্রি’র এই নতুন জাতের ফলনটা বেশ ভালো, আবার রোগও কম। খরচ অন্যান্য ধানের মতোই। কিন্তু সুবিধা হলো এরমধ্যে আরও একটা ফসল করা যায়। এখানে সরিষা করেছে। আমরা অনেক কৃষক এটা দেখে খুবই আগ্রহী। আগামীতে আমরাও করবো। এবার ৯৬ জাতের ধান করেছি, সেখানেও ভালো ফলন পেয়েছি। আগামীতে এই নতুন জাত ১০২ করবো।

মুশুদ্দির কামারপাড়া গ্রামে কৃষক মিজানুর রহমানের জমিতে ব্রি রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগ প্রদর্শনী প্লট করেন। কৃষক মিজানুর ঢাকা মেইলকে বলেন, এক একর জমিতে ব্রি ১০২ নতুন জাত চাষ করি। এটিতে রোগ একেবারেই কম। আমি গত আমনে ব্রি ধান ৭৫ করেছিলাম। এরপর বারি সরিষা ১৪ করেছি। এরপরেই বোরোতে ১০২ জাতের ধানটি চাষ করি। মাঝখানে আমি সরিষা করে ২৩ মণ সরিষা পাই। ৩ হাজার ২শ টাকা মণ সরিষা বিক্রি করেছি। এই আয়টা অন্য বছর হয়নাই। জমি খালি থাকতো।

নতুন জাতের খরচ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, অন্য জমিতে আনুমানিক খরচ বিঘাতে ১১ হাজার টাকার মতো। কিন্তু সরিষার পর এটি করায় আমার কম হয়েছে। কারণ, হিসেবে আমার মনে হয়েছে সরিষায় কিছু সার দিয়েছি সেটি পরে বোরোতে কম লেগেছে জমিতে। আমি এটি করে খুব খুশি। এলাকার অন্য কৃষকরা প্রতিদিন এটি দেখে আগামীতে করবে বলে এখনই বীজ চাচ্ছে কেউ কেউ।


বিজ্ঞাপন


জমির দিকে তাকিয়ে ধান গাছ দেখিয়ে মিজানুর বলেন, সকাল সকাল বেশ ঝড় হয়েছে। অন্য ধান থাকলে মাটির সাথে মিশে যেতো। এই ধান কিছুটা শুয়েছে তবে ক্ষতি হয়নি। তিন ফসলি জমি হইছে এখন আমাদের, আগে শুধু দুইবার ধানই করতাম।

ব্রি ১০২ জাত ও বৈশিষ্ট্য

১. বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী। ২. আধুনিক উফসী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ৩. অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার আকৃতি ব্রি ধান ২৯ এর মতো। ৪.পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৩ সে.মি.। ৫. চাল লম্বা, চিকন ও সাদা। ৬. জিংকের পরিমাণ ২৫.৫ মিলিগ্রাম/কে.জি.। ৭. জীবনকাল ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে দুই দিন কম এবং গড় ফলন ব্রি ধান ২৯ অপেক্ষা বেশি। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৫০ দিন। ব্রি ধান ১০২ এর ফলন হেক্টরপ্রতি ৮.১০ টন, তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরপ্রতি ৯.৬০ টন ফলন দিতে সক্ষম।

কৃষি প্রধান বাংলাদেশের খাদ্যে সমৃদ্ধির জন্য এখনও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব রাখছে চাল। আমাদের দেশে যে সকল ফসল আবাদ হয় তার মধ্যে ধান অন্যতম। ভাত এখনও দেশের অন্যতম প্রধান খাদ্য হওয়াতে প্রতিনিয়ত ধান বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করছেন যেন ধানের ফলন বেশি হয় ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকা যায়। খাদ্যে স্বস্তি রাখতে সেই পথে হেটে গবেষণার মাধ্যমে নানা জাত সামনে নিয়ে আসছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রি।

paddyব্রি ১০২ জাত ও বৈশিষ্ট্য

১. বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী। ২. আধুনিক উফসী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ৩. অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার আকৃতি ব্রি ধান ২৯ এর মতো। ৪.পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৩ সে.মি.। ৫. চাল লম্বা, চিকন ও সাদা। ৬. জিংকের পরিমাণ ২৫.৫ মিলিগ্রাম/কে.জি.। ৭. জীবনকাল ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে দুই দিন কম এবং গড় ফলন ব্রি ধান ২৯ অপেক্ষা বেশি। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৫০ দিন। ব্রি ধান ১০২ এর ফলন হেক্টরপ্রতি ৮.১০ টন, তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরপ্রতি ৯.৬০ টন ফলন দিতে সক্ষম।

ব্রি রাইস ফার্মি সিস্টেম বিভাগ যা বলছে

সরিষা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দুই ফসলি শস্য বিন্যাসকে তিন ফসলি শস্য বিন্যাসে রূপান্তর প্রদর্শনীর প্রধান গবেষক ড. আমিনা খাতুন, যিনি ব্রি বিজ্ঞানী সমিতির সভাপতিও। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, এটি এই মুশুদ্দিতে প্রথম করেছি। এতে ফলন ভালো এবং রোগ কম। কৃষকরা এটি করে এতো খুশি, যা ভাষায় বুঝানো যাবে না। এখানে মাঝখানে একটা ফসল সরিষা বা শীতকালীন স্বল্প সময়ের সবজি করা সম্ভব। এবছর এখানে কৃষকরা সরিষা করে লাভবান হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৯২ জাতের ধানের আবাদে ধান পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৯ মেট্রিক টন। ব্রি ধান ১০২ এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৮.৬ টন। তাছাড়া এ ধানে জিংকের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ২৫ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম। সুতরাং এই দুটি জাত আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

paddyব্রি রাইস ফার্মি সিস্টেম বিভাগের প্রধান ড. মো. ইব্রাহিম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের কাজ গবেষণা করা। আমাদের ফিল্ডে লোক নাই। ফিল্ডের ডিএই মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যায়। আমাদের ডিভিশন থেকে আমাদের থোক বরাদ্দ দেয়, সেখান থেকে কিছু করতে পারি। এবার কালিগঞ্জ, ধনবাড়ি, ত্রিশাল, সিলেট, হবিগঞ্জ, খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা কিছু এলাকায় প্রদর্শনী আছে আমাদের। এসব জায়গায় গাজীপুর থেকে সরাসরি কোঅরডিনেট করা হয়। আমাদের ব্রি থেকে এবার তিনটি জায়গায় সরাসরি ব্রি ১০২ প্রদর্শনী করেছি। এর বাইরে নতুন জাত হিসেবে অনেক স্থানে ডিএই মাধ্যমে ১০২ প্রদর্শনী করেছে। আমাদের ১১টা রিজিওনাল স্টেশন এসব বিস্তারে কাজ করছে। সব স্থান থেকে ইতিবাচক সারা পাচ্ছি বলে জানান এই বিজ্ঞানী।

মশুদ্দি মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষক মো. সায়েদ আলী (৪০) তিন ফসলের জমিতে ধানের পাশাপাশি সরিষায় আয় করেছেন অতিরিক্ত ৬ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘আমনের পর বোরোর মাঝখানে আমরা সরিষা করে ১৫ শতাংশে ২ মণ সরিষা পাইছি, যা ৬ হাজার টাকা বিক্রি করছি। বাড়তি ফসলে বাড়তি আয় আসায় আমরা খুশি। স্যারেরা (কৃষি কর্মকর্তা) কইছে তাই তাদের পরামর্শে নতুন জাতে বেশ ভালো ফলনও পাইছি।’

খন্দকার পাড়া বাড়ির আলামিন মিয়া (৪৫) ভাষ্যও একই রকম। নতুন ফসলের খুশির ঝিলিক তার চোখে মুখে, ফসলে ভরেছে গোলা। মাঝে একটি বাড়তি ফসলে বাড়তি আয়ের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই জমি বোরো কিছু দিন আগে আইসা দেখবেন হলুদ চাদরে মোড়ানো থাকে। সকলে এখন চারদিকে শুধু সরিষা করে।

এলাকার অন্যান্য কৃষকরা বলেন, নতুন জাত হওয়াতে অনেকেই এবার করেন নি। অনেকেই বীজ পায়নি, আবার যারা চাষ করেছেন অনেকেই তাদেরটা দেখেছেন। যেহেতু ফলন ভালো তাই সামনে সকলে করবেন, এমন প্রত্যাশা করেছেন কৃষিকরা।

ব্রি ধান ১০২ বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী ধানটি জিংক সমৃদ্ধ। এই ধানের ভাত খাওয়ার ফলে মানুষের দেহে জিংকের ঘাটতি নিরাময় হবে। ধানটির কৌলিক সারি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা মাঠে চার বছর ফলন পরীক্ষা করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবাদ করে চূড়ান্ত ফলাফল পরীক্ষা করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৬ তম সভায় এ জাতটিকে জিংক সমৃদ্ধ জাত হিসেবে দেশজুড়ে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার দেশের কিছু কিছু স্থানে এটি করা হয়েছে।

paddyঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যা বলছেন

এদিকে ধানের নতুন এই জাতটি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, ব্রি ধান ১০২ সবদিক বিবেচনায় প্রিমিয়াম কোয়ালিটির উচ্চ ফলনশীল একটি ধান। এর ফলন যেটি পেলাম ধারণার চেয়েও বেশি। প্রতি হেক্টরে ১১ মণের মতো পাচ্ছি। এর সাথে ভ্যালু এড করেছে, এটি জিংক সমৃদ্ধ। উৎপাদন যেহেতু বেশি, তাই আমাদের মন্ত্রণালয়ের যে পরিকল্পনা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার, সেক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ফলন বৃদ্ধি চাই। সেই সাথে পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনের দিকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। কৃষকের বোরোর ফলনের ধারনা বদলে দিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাতগুলো। এবার এলাকাভেদে নতুন জাত ব্রি ধান ৮৯, ৯২, বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এবং ব্রি ধান ১০২ জাতগুলোর বিঘাপ্রতি গড় ফলন হয়েছে ৩০-৩৩ মণ। এসব জাতের নতুন ধান চাষ করে কৃষকরা অভূতপূর্ব ফলন পেয়েছেন। ৩৩ শতকে ফলন পেয়েছেন ৩৩ মণ অর্থাৎ শতকে এক মণ ফলন হয়েছে। কোথাও কোথাও তার বেশি ফলনের রেকর্ড রয়েছে। যেখানে ব্রি উদ্ভাবিত পুরনো জাতগুলোর ফলন ছিল বিঘাপ্রতি ২২-২৫ মণ মাত্র।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, প্রতি বছর আমাদের জনসংখ্যার সাথে ২০-২২লক্ষ লোক যোগ হচ্ছে। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হলে অবশ্যই ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ধানগুলো চাষ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। কেননা ব্রি থেকে উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলো ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ এর তুলনায় অনেক বেশি। এগুলো যদি ভালো পরিচর্যা করা যায় তাহলে আরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব। সুতরাং এখন পুরনো জাতগুলো বাদ দিয়ে নতুন জাতের ধান ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২, বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এবং ব্রি ধান ১০২ চাষ করতে হবে। উপরন্তু বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এবং ব্রি ধান ১০২ চিকন, উচ্চ  জিংকসমৃদ্ধ, জিরা টাইপের যা আমাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। এগুলো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বিধায় ধানের বাজারমূল্য অন্য ধানের তুলনায় বেশি।

ব্রি ধান ১০২ নিয়ে তিনি বলেন, এতে ফলন বেশি, জিঙ্ক সমৃদ্ধ আবার চিকন। বাজারে জিরা নামে যে চালগুলো পাওয়া যায় একই রকম দেখতে এই ধানের চাল। সরিষার পর এটি করা হচ্ছে। ফলে সেচের খরচ কম লাগছে, অন্যান্য খরচ একই রকম। তাই আমি মনে করি ইউরিয়া সারসহ কিছু সারের খরচ কম লাগবে। মার্কেটে বিক্রি করতে গেলে এই ধানের দাম যেকোনো ধানের চেয়ে বেশি হবে, এতে কৃষকের লাভ বেশি হবে। ধনবাড়ি এই মশুদ্দির কৃষকরা একই খরচে একই জমিতে আগের চেয়ে অতিরিক্ত ২৫ হাজার বেশি আয় করেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী সবাই বলেছেন, বাণিজ্যিক কৃষির কথা। এইভাবে জাত উদ্ভাবন, মাঝখানে একটি ফসল আবাদ করে উৎপাদন বাড়াবো। এসব চিন্তা করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এসবের মাধ্যমেই বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিণত হবো। আমরা আরও জাত উদ্ভাবনের কাজ করছি, তাতে সামনে আসলে ফলন আরও বাড়বে।

paddyনতুন জাত নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ

নতুন নতুন কোনো জাত আসলে সে বিষয়ে কৃষকদের উদ্ভুতকরণ নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। মাঠ পর্যায়ে নতুন ফসলকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ কর্মীদের ভূমিকা অনেক। উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের ব্লক সুপারভাইজাররা সরাসরি কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন মত বিনিময় সভা করে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক এসএম সোহরাব উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, এই সকল নতুন নতুন জাত, যা কৃষকদের জন্য লাভবান তা দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে যা করণীয় আমরা সেভাবে কাজ করবো।

টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাই। একটা নতুন ফসল আসলে সেই বিষয়ে জানাই। এবার অনেকেই এই নতুন জাত করেছেন, কেউ এবার দেখেছেন সামনে করবেন। জমিতে তিনটি ফসল হচ্ছে। সেই সাথে আমাদের তেল ফসলের আবাদও কিন্তু বাড়ছে, কৃষক লাভবান হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধি সোহরাব উদ্দিন জানান, তিনি আগে যে জমিতে দুই ফসল করতেন, এবার ব্রি’র বিজ্ঞানীদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এখন আমনের পর সরিষা তারপর বোরো আবাদ করছেন। এভাবে দু’ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করায় তার লাভের পরিমাণ দেড় থেকে দুগুণ বেড়ে গেছে। তিনি আগামীতে এই আবাদ আরও সম্প্রসারণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে। খাদ্য ভান্ডার মজবুত রাখতে এখন থেকেই সুষ্ঠু পরিকল্পনার সাথে উত্তম গবেষণায়ও প্রয়োজন অনেক বেশি। কেননা নগরায়ন আর শিল্পায়নে ক্রমেই কমে আসছে চাষাবাদের জমি। আর মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে কম জমিতে অধিক ফসল উৎপাদন সামনের দিনগুলোতে এক অবিশ্বাস্য চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা নূতনত্ব অধিক ফলনের জাত নিয়ে আসছেন সামনে। এসকল জাতই সামনে পথ দেখাবে স্বস্তি ও মজবুত খাদ্য নিরাপত্তায়।

ডব্লিউএইচ/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর