নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। একইসঙ্গে এ ঘটনার সাথে বখাটে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (০৩ মে) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বরাতে এতে বলা হয়, নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের স্কুলছাত্রীকে বখাটে কর্তৃক কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী ও বারহাট্টা নারী প্রগতি সংঘের ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য।
বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে তাকে প্রায়ই তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন একই গ্রামের সামসু মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়া। ওই স্কুলছাত্রী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন কাউসার মিয়া। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি কাউসারের পরিবারকে জানায় স্কুলছাত্রীর পরিবার।
গত ২ মে দুপুরের দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে স্কুলছাত্রীর পথ আটকায় কাউসার। একপর্যায়ে ধারাল দা দিয়ে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে আহত করে কাউসার। পরে স্থানীয় লোকজন স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি, স্কুল-কলেজ ও রাস্তায় চলাচলের পথে ছাত্রীরা উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন সহিংসতাসহ বিভিন্ন ধরণের সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এর ফলে তাদের পড়ালেখা করা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। সেই সাথে নারী ও কন্যার জীবনের নিরাপত্তা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং তাদের স্বাধীন চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনধারণ বিঘ্নিত হয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞাপন
বিচার দাবি করে বলা হয়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ স্কুলছাত্রীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নির্মমভাবে আহত করে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি ও দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছে।
একইসঙ্গে মহিলা পরিষধ এ ধরনের নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে নারী ও কন্যার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আশু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও মন্ত্রণালয়ের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে। সেইসাথে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।
এমএইচ/এএস