শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তরুণদের নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

তরুণদের নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবার ও সমাজ গঠনে তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন। এ লক্ষ্যে নারী ও কন্যা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে নারী ও মানবাধিকার কর্মীরা। 

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজি ক্লাবের আয়োজনে ‘ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আলোচকরা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৯৭০ সাল থেকে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ও নারী-পুরুষের জন্য সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কন্যা শিশুরা সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জেন্ডার বৈষম্যের শিকার হয়। জেন্ডার বৈষম্য দূর করে জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবার ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। আজকের তরুণ সমাজ ভবিষ্যতের কর্ণধার। তাই তরুণদের নিজেদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে ও নারী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে এস এম আনোয়ারুল কায়েস শিমুল বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজি ক্লাব সব সময় শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মসূচি করে আসছে। এ ধরা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে তরুণদেরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। 

এ সময় তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদকে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহিংসতা মুক্ত ও ক্যাম্পাস গড়ে তুলবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন বলেন, ‘এখনও আমাদের দেশে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান। আমরা যদি নারীদের সম্মান ও যোগ্য মর্যাদা না দেই তাহলে আমাদের দেশ উন্নত হতে পারবে না। নারীদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। এদিক থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সহিংসতা মুক্ত। আমরা ছেলেমেয়ের প্রতি কোনো বৈষম্য করি না। আমরা চাই প্রত্যেকের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ থাকুক এবং তাদের জীবনে কর্মক্ষেত্রে ও পরিবারে এবং সম্পদ-সম্পত্তিতে সমান অধিকার নিশ্চিত হোক। 


বিজ্ঞাপন


এসময় শিক্ষার্থীদের পরিবারে সমতা চর্চা করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদকে ভবিষ্যতে আরও এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করার জন্য অনুরোধ জানান ড. জিয়াউল হক।

এদিকে আলোচনায় অংশ নিয়ে যৌন নিপীড়ন ও উত্যক্তকরণ বন্ধে, ধর্ষণ প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের দিকনিদের্শনামূলক রায় সম্পর্কে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী। আর নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে তরুণ সমাজের ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবী অ্যাডভোকেট দীপ্তি সিকদার।

শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ইশরাত জাহান, রায়না আক্তার, জোবায়দা আক্তার রিনি, মারিয়া মনোয়ারা, ইমতিয়াজ ইকবাল ও মো.সাইফুর রহমান। শিক্ষার্থীরা পরিবার সমাজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা মুক্ত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইস্ট ওয়েস্ট উপাচার্যের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধাক্ষ্য এয়ার কমরেড (অব:) এশফাক এলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম, জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী, ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লবী অ্যাডভোকেট দীপ্তি সিকদার ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজি ক্লাবের মডারেটর মানজুমা আহসান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এমএইচ/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর