বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘যৌন হয়রানি রোধে আইনটি অপরাধীদের জন্য আতঙ্কের’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

‘যৌন হয়রানি রোধে আইনটি অপরাধীদের জন্য আতঙ্কের’

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে প্রস্তাবিত আইনটি অপরাধীদের জন্য আতঙ্ক তৈরি করবে বলে মনে করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু।

প্রস্তাবিত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২২’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে প্রস্তাবিত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২২’(খসড়া) শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধির নিয়ে আরও আলাপ আলোচনা করে আইনের খসড়াটি আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। যৌন হয়রানির প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ক্ষেত্রে আমাদের নানা দুর্বলতা রয়েছে বিধায় এই আইনটির প্রয়োজন আছে। আইন প্রণয়নে সব কিছুর সমাধান না হলেও আইনটি অপরাধীদের জন্য আতঙ্ক তৈরি করবে। আইনটি ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে ভিকটিমদের জন্য একটা সুরক্ষা তৈরি করবে।

টুকু বলেন, আমি মনে করি খসড়ায় উল্লেখ করা অভিযোগ কমিটির স্থলে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি যুক্ত করা দরকার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আদিবা আঞ্জুম মিতা, বাসন্তী চাকমা, লেবার আপিলেট ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র জেল জজ ও বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি তানজিনা ইসমাইল, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শিশু ও সমন্বয় উইং) মো. মুহিবুজ্জামান, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান, হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি মোসা. ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।


বিজ্ঞাপন


আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ-সভাপতি শাহিন আক্তার ডলি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের পরিচালক নাছিমা আক্তার জলি।

নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম’ কন্যাশিশু তথা নারীর অবস্থা ও অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তনে কর্মরত সমমনা সরকারি-বেসরকারি ১৯৮টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাজের সমন্বয় এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম। কন্যাশিশুর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণসচেতনতা সৃষ্টি ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে অ্যাডভোকেসির জন্য ফোরাম-এর সকল সংগঠনের সহায়তায় তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছে।’

জলি বলেন, বাংলাদেশে নারী ও শিশুর জন্য নিরাপদ কর্মস্থল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পাবলিক প্লেসে সামগ্রিক (হাট-বাজার, রাস্তা, খেলার মাঠ, মার্কেট ও পরিবহন) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালাসমূহের আলোকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ আইন (খসড়া) প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনটির পর্যালোচনা করার প্রয়োজনেই এই সভার আয়োজন।

সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম মিতা বলেন, আইনটিতে সবার দিক বিবেচনা করতে হবে, যাতে কেউ আবার অপব্যবহারের সুযোগ না পায়।

সংরক্ষিত আসনের আরেক সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করতে হলে পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে। আইনটি চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে আরও মতামত গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে সমতল ও পাহাড়ের আদিবাসীদের মতামত নেওয়া দরকার।

অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামান বলেন, আইনের খসড়ায় উল্লিখিত যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শব্দগুলি পরিবর্তন করে যৌন হয়রানি উল্লেখ করা উচিত। কারণ যৌন কামনা চরিতার্থ করার বিষয়টি মামলাকে দুর্বল করবে। আর খসড়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির বিষয়ে বলা হয়েছে কিন্তু পথে-ঘাটে হয়রানির শিকার হলে কী হবে সেটিও যুক্ত করা দরকার।

আর শেখ আশফাকুর রহমান বলেন, খসড়ায় বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও অসামঞ্জস্য বিষয়গুলো বের করে সমন্বয় করতে হবে

পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, খসড়াটি করা হয়েছে ২০১৯ সালে। ইতোমধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতে খসড়ায় নতুন করে অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর