শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

মা-শিশুর পুষ্টির উন্নয়ন কার্যক্রম টেকসইয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭ আগস্ট ২০২২, ০৮:০৭ এএম

শেয়ার করুন:

মা-শিশুর পুষ্টির উন্নয়ন কার্যক্রম টেকসইয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

একটি সুস্থ ও মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার বৃদ্ধি এবং মাতৃ ও শিশু পুষ্টি উন্নয়নের কার্যক্রম টেকসই করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২২’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মায়ের দুধ পান: শিক্ষা ও সমর্থনের পদক্ষেপ’ যথার্থ হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মাতৃদুগ্ধপান শিশুদের পুষ্টিপূরণ এবং সম্মিলিত শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটায়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। মাতৃত্বকালীন ছুটি বেতনসহ ৬ মাসে উন্নীত করেছি। সাধারণভাবে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান রয়েছে। প্রতিবছর শিশু অপুষ্টির হার ১.২৭ শতাংশ কমেছে। এসডিজি -৩ শিশু সম্পর্কিত সূচকগুলো, যথা- ৫ বছর বয়সের নিচে শিশু মৃত্যুহার ৩১ এবং নবজাতকের মৃত্যুহার ১৭ ইতোমধ্যেই মাইলফলক অতিক্রম করেছে সময়ের আগে।

এসডিজি-২এর শিশু সম্পর্কিত সূচকগুলো, যথা কৃশকায় শিশুর হার ৮ ভাগে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, যা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের খুব কাছাকাছি রয়েছে। এসডিজি -২ এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে খর্বাকৃতি শিশুর হার ৩১ভাগ থেকে ২৫ভাগ এবং কম ওজনের জন্ম নেয়া শিশুর হার ২২ভাগ থেকে ২০ভাগ এ কমিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের শতকরা ৬৫ ভাগ শিশু ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খায়। ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভ (WBTi) এর প্রতিবেদন, ২০২০ অনুযায়ী বাংলাদেশ ৯৭টি দেশের মধ্যে ৯১.৫/১০০ স্কোর পেয়ে সারা বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে গ্রিন জোনে আছে।


বিজ্ঞাপন


শেখ হাসিনা বলেন, গুঁড়াদুধের বিপণন নিয়ন্ত্রণে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য ও বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও তা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি বিপণন নিয়ন্ত্রন আইন, ২০১৩ এবং এর বিধিমালা-২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। শিশুখাদ্য ও বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য এবং তা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ আইন)-২০১৩ প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, রেলস্টেশন সব জায়গায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে, চিড়িয়াখানায়, বিভিন্ন রেলস্টেশনে, শপিং মলে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপন করেছি। এছাড়াও হাইকোর্ট থেকে বিভিন্ন শিল্প কারখানাগুলোতে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৪র্থ সেক্টর হেলথ, নিউট্রিশন ও পপুলেশন প্রোগ্রাম এবং দ্বিতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার আওতায় মাতৃ ও শিশু পুষ্টিসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে মা ও শিশুর পুষ্টি উন্নয়নের লক্ষ্যে মাত্রা সহায়ক দলের প্রশিক্ষণ ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আশা করেন অতি শীঘ্রই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মাতৃ ও শিশু পুষ্টি বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা  এসডিজি অর্জন করব। তিনি  দেশের সর্বস্তরের শিশুকে ৬ মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করানো, ৬ মাসের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়ানো এবং দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ চালিয়ে যাওয়ার অগ্রগতির ধারাকে জোরদার করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় পুষ্টিসেবা ও বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন (বিবিএফ) সহ সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান।

‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২২’- উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর