অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ২৩ শতাংশ শিশু মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে অনিরাপদ ফেসবুক। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশু এবং শিশুদের অনলাইন যৌন শোষণ প্রতিরোধবিষয়ক এক গবেষণা থেকে এই তথ্য জানা যায়।
সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহসান হাবিব। কর্মশালার আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা টেরে দেস হোমস নেদারল্যান্ডস (টিডিএইচ–এনএল)। সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নূরুল কবির।
বিজ্ঞাপন
গবেষণায় বলা হয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক সুরক্ষার অভাবে শিশুদের অনলাইন যৌন শোষণসহ নানা ঝুঁকি বাড়ছে। ৮ শতাংশ শিশু আংশিক ঝুঁকিতে এবং ৬৯ শতাংশ শিশু আংশিক নিরাপদ অবস্থায় আছে। ফেসবুকে ৭৭ শতাংশ শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে। ইনস্টাগ্রামসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি কম নয়।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান, ডিএমপির উপকমিশনার (নারী সহায়তা ও তদন্ত) ফারহানা ইয়াসমিন, প্রতিবন্ধী বিশেষজ্ঞ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুল হক এবং এক্সেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মহুয়া পাল।
অধ্যাপক আহসান হাবিব বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, তাই শহর-গ্রাম উভয় জায়গায় ডিজিটাল ব্যবহারের হার বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অনলাইনে যৌন হয়রানিসহ নানা ঝুঁকি, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে শিশুদের ওপর। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় নিরাপদ অনলাইন ব্যবহার, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং সহজলভ্য বিচারব্যবস্থায় বিনিয়োগ জরুরি।
তিনি আরও বলেন, একক কোনো উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। শিশু সুরক্ষা এবং অনলাইন সুরক্ষা–সংক্রান্ত আইন–নীতিমালায় প্রতিবন্ধী শিশুদের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিবন্ধিতা কর্মসূচি, ডিজিটাল সাক্ষরতা উদ্যোগ এবং শিশু সুরক্ষা কর্মীদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান বলেন, শিশুরা এখনও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ইন্টারনেটের দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান ফাঁদে পড়ছে তারা। সুস্থ বিকাশে এসব বন্ধ করা জরুরি। সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। শিশু–সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ফর চাইল্ড প্রোটেকশন গঠন করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল কবির বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে অবহেলিত গোষ্ঠীর একটি। বিশ্বে যেখানে প্রায় ১৬ শতাংশ মানুষের প্রতিবন্ধিতা রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের সরকারি হিসাব মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ। দীর্ঘদিনের অবমূল্যায়ন, সামাজিক কলঙ্ক ও অদৃশ্য থাকার অভিজ্ঞতা এই বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। শিক্ষা, চলাচল ও সামাজিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল।
এআর

