বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি

সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে জন্মগত অধিকারসূত্রে সব মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হলেও বিশ্বেজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভিন্ন। এ অবস্থা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মানবাধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে (জিপিও-এর সামনে) ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে এই দাবি জানানো হয়।


বিজ্ঞাপন


মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতমূলক পরিস্থিতির কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নতুন ধরনের সহিংসতার বৃদ্ধি নারীসহ সবার জীবনের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হলেও পারিবারিক, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ সকল পর্যায়ে নারীর প্রতি অধঃস্তন ও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর জন্য দায়ী পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা।

তারা আরও বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’ নীতির আলোকে নারী-পুরুষের জন্য সমতাপূর্ণ, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক সহিংসতাসহ সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ এবং নারীর বুদ্ধিমত্তা ও তাদের দেশপ্রেমকে মূল্যায়ন করতে হবে। একইসঙ্গে কালোটাকা ও ক্ষমতার অপব্যবহার, মাদকের ব্যবহার রোধ এবং সকলের জন্য সমান আইন প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের ওপর রাষ্ট্রকে গুরুত্ব দিতে হবে।

এতে অংশ নিয়ে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে জন্মগত অধিকারসূত্রে সকল মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ভিন্ন। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন থাকলেও তা যে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না। গাজার চলমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘেরও উদ্বেগ রয়েছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চলমান সকল ধরণের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।

এ সময় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে চলমান সহিংসতা প্রতিরোধ কর জনজীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ওপর জোর দাবি জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন


দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি সিরিষা বলেন, দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষের জমির ওপর কোনো অধিকার নেই। তারা মানুষ হিসেবে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত। সব ধরনের বৈষম্য দূর করে তিনি সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সারাবিশ্ব জুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতের দামামায় বিশ্বশান্তি আজ বিলুপ্ত। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও এর ব্যতিক্রম নয়। সংখ্যালঘু, আদিবাসী, দলিত নারীসহ সকল শ্রেণির মানুষ আজ সহিংসতার শিকার। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলে হবে না। সাধারণ মানুষের কল্যাণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন নিশ্চিতে বিনিয়োগ করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং দুর্নীতি বন্ধে সোচ্চার হতে হবে।

এসময় তিনি ১৯৭২ এর সংবিধানকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উন্নতিসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।

এমএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর