বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪, ঢাকা

‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ নাজমুন নাহারের ১৫৩ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ নাজমুন নাহারের ১৫৩ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড

বাংলাদেশের পতাকাবাহী প্রথম বিশ্বজয়ী নাজমুন নাহার এবার আফ্রিকা মহাদেশের দ্বীপদেশ মরিশাস ভ্রমণের মাধ্যমে ১৫৩ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন। এরপর তিনি অভিযাত্রা করবেন সিল্ক রুটের দেশ উজবেকিস্থান ও তাজিকিস্তান।

নাজমুন নাহার ৬ অক্টোবর ২০২১ বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিশ্বের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে বিশ্বভ্রমণের এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকার দেশ সাওটোমে ও প্রিন্সিপ ভ্রমণের মাধ্যমে। তারপর ৩১ জানুয়ারি ২০২২ বেঙ্গল ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের সৌজন্যে নাজমুন নাহার ৫ দেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মহামারি করোনার কঠিন সময়ের মধ্যেও তিনি ১৫১তম দেশ হিসেবে ইরাক এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫২তম দেশ হিসেবে রিপাবলিক অব সান মারিনো ভ্রমণ করেন।


বিজ্ঞাপন


এ বছরের শুরুর দিকে ইরাক সফরের মাধ্যমে শুরু হয় নাজমুন নাহারের অভিযাত্রা। তিনি ইরাকের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান এরবিল থেকে সোরান, বেখাল জলপ্রপাত, লালিশ, দুহোক, রাওয়ানদুজ ক্যানিয়ন, রোড গ্রাফিতি, হালগার্ড পর্বত, জোরাগভান উপত্যকা পর্যন্ত তিনি সফর করেছিলেন।

ইরাকের বিভিন্ন প্রদেশ ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি জটিলতা থাকা সত্ত্বেও তিনি ইরাকের কুর্দিস্থান প্রদেশের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করেছেন। সুমেরীয় ও মেসোপটিয়াম সভ্যতার দেশের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মাঝে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা।

nazmun

এছাড়া তিনি রিপাবলিক অব সান মারিনোতে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। দুর্গের টাওয়ার, মধ্যযুগীয় বাজার, অলিম্পিক স্টেডিয়াম, রোকা গুয়াইতা এবং টোরে সেস্তা দুর্গ টাওয়ার, সান পাওলো অ্যাপোস্টলো চার্চ, মাউন্ট টাইটানোর টাওয়ারের শীর্ষ থেকে অত্যাশ্চর্য দৃশ্য অবলোকন করেন যা ডালমাশিয়ান উপকূল পর্যন্ত প্রসারিত ছিলো।


বিজ্ঞাপন


তারপর নাজমুন তার অভিযাত্রা শুরু করেছেন উত্তর মরিশাসের গ্র্যান্ড বে, পোর্ট লুইস, বেলে মার, ফ্লিক অন ফ্লাক, ইলোশেফ, ব্ল্যাক রিভার, মসুসে বে, ১৮ শতকের রামগুলাম বোটানিক্যাল গার্ডেন চলছে তার দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করা এবং বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকাকে সেসকল বিখ্যাত জায়গাগুলোর মধ্যে তুলে ধরা।‌

বাংলাদেশের পতাকা বহনের পাশাপাশি তিনি নো ওয়ার অ্যান্ড পিস, সেভ দ্য প্ল্যানেট, স্টপ চাইল্ড ম্যারেজ, স্টপ সাইবার বুলিং সহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। নাজমুন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে এভাবেই গৌরবের সাথে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে!

২০০০ সলে ভারতের ভুপালের পাঁচমারিতে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তার প্রথম বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। ১ জুন ২০১৮ সালে ১০০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর।

nazmun

নাজমুন দেশে-বিদেশে অর্জন করেছেন বহু সম্মাননা। এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তিনি পেয়েছেন তিনটি সম্মাননা, লন্ডনে স্পেশাল এওয়ার্ড, দেশে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ও উইমেন ওয়ারিয়র অ্যাওয়ার্ড। নাজমুন নাহার তার বিরল অভিযানের জন্য তিনি পৃথিবীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মাননাও 'পিস টর্চ বিয়ারার অ্যাওয়ার্ড' অর্জন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে‌।

এছাড়া তিনি পেয়েছেন পিস রানার অ্যাওয়ার্ড, মিস আর্থ কুইন অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা শীর্ষ দশ সম্মাননা, গেম চেঞ্জার অব বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল উইমেন অব বাংলাদেশ, গ্লোব অ্যাওয়ার্ড, অতীশ দীপঙ্কর গোল্ড মেডেল সম্মাননা, জনটা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, তিন বাংলা সম্মাননা ও রেড ক্রিসেন্ট মোটিভেশনাল অ্যাওয়ার্ড। জাম্বিয়া সরকারের গভর্নর হ্যারিয়েট কায়োনার কাছ থেকে ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ উপাধি, সফল নারী সম্মাননা, লক্ষ্মী তারুণ্য সম্মাননাসহ দেশে-বিদেশে মোট পঞ্চাশটির মতো সম্মাননা পেয়েছেন।

আলোকিত নারী নাজমুন নাহার বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে এভাবে এগিয়ে যাক পৃথিবীর দেশে দেশে।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর