অনেকেই অসুস্থাজনিত কারণে কথা বলতে পারেন না। কেউবা হাতও নাড়াতে পারেন না। পক্ষাঘাতগ্রস্থ মানুষের জন্য সুখবর। আপনি মনে মনে যা ভাবছেন তা লিখে প্রকাশ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। সম্প্রতি এই নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে টেক দুনিয়ায়।
এই প্রযুক্তির বিশেষ চমক হল মানুষের মস্তিষ্কে যে ভাবনা চলছে তা খাতায় কলমে প্রকাশ করা যাবে। মনে করা হচ্ছে যে সব মানুষ কথা বলতে পারেন না তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে এই প্রযুক্তি।
বিজ্ঞাপন
অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছাড়াই তাদের মনের কথা লেখায় তুলে ধরা যাবে। নিখুঁত না হলেও এআই প্রযুক্তি সফলভাবে ব্যক্তির চিন্তাভাবনার সারাংশ তৈরি করতে পারবে। এই প্রযুক্তি বা সিস্টেমের নাম সেমান্টিক ডিকোডার। এখানে এক ধরনের এফএমআরআই স্ক্যানার ডেটা ব্যবহার করা হয়।
অস্টিন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের গবেষকরা এই প্রযুক্তিটি তৈরি করেছেন। তাদের মতে, এটি এমন মানুষের কাজে আসতে পারে যারা মানসিক ভাবে সচেতন কিন্তু শারীরিক ভাবে কথা বলতে পারেন না।
এই প্রযুক্তি আংশিকভাবে ট্রান্সফরমার মডেলের উপর নির্ভর করে। যা ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি এবং গুগল বার্ডেও রয়েছে। এই ডিকোডিং সিস্টেমের সুবিধা হল এটিতে অন্যগুলোর মতো অস্ত্রোপচারের দরকার নেই। পাশাপাশি নির্ধারিত কোনো তালিকা থেকে শব্দ ব্যবহার করতে হয় না।
কীভাবে মস্তিষ্কের ভাবনা লেখায় প্রকাশ পাবে?
বিজ্ঞাপন
মস্তিষ্কের চিন্তা ভাবনা ট্র্যাক করে একটি এফএমআরআই স্ক্যানার। যেখানে ব্যক্তিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটি পডকাস্ট শোনানো হয়। তারপর সেই ব্যক্তি যদি তার চিন্তা ভাবনা ডিকোড করার জন্য রাজি থাকে তাহলে তাকে একটি গল্প কল্পনা করতে বলা হয়।
এই কল্পনা শুরু হলেই স্ক্যানার সেই চিন্তাভাবনা লেখায় প্রকাশ করতে শুরু করে। অস্টিনের নিউরোসায়েন্স এবং কম্পিউটার সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক অ্যালেক্স হুথ বলেন, নন-ইনসেসিভ পদ্ধতির ক্ষেত্রে আগে যা করা হয়েছে তার থেকে এটি অনেক বাস্তব।
গবেষকদের মতে, শব্দ প্রতিলিপি নয় বরং এই সিস্টেম এমন ভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যাতে ব্যক্তির চিন্তাভাবনার সম্পূর্ণ সারাংশ প্রকাশ করা যায়। যখন একটি ডিকোডারকে মানুষের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ নিরীক্ষণ করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তখন মেশিনটি এমন লেখা তুলে ধরার চেষ্টা করে যা তাঁর ভাবনার উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলতে পারে।
এমনকি ওই অংশগ্রহণকারীরা যারা এই মেশিন ব্যবহার করতে চায় তাদের একটি ভিডিও দেখিয়ে চিন্তা করতে বলা হয়। সেই ক্রিয়াকলাপও লেখায় প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে এই মেশিন।
এজেড

