সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ঢাকা

মোবাইল ফোনের জাদু কেটে যাবে: উদ্ভাবক

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

মোবাইল ফোনের জাদু কেটে যাবে: উদ্ভাবক

মোবাইল ফোন বর্তমানে মানুষের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যায় স্মার্টফোনেই। এটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এতে আসক্ত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। ফোনের প্রতি এই অতিরিক্ত আসক্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক। তিন বলেন, ‘লোকজন সারাদিন ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। এমন হবে ভাবিনি!’

৫০ বছর আগে বিশ্বের প্রথম তারবিহীন ফোন আবিষ্কার করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলী মার্টিন কুপার। মোবাইল ফোনের প্রতি বর্তমানে মানুষের মোহ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, পকেটের ভিতরে থাকা ছোট যন্ত্রটি বহু সমস্যার সমাধান করতে পারে ঠিকই, কিন্তু মানুষ একটু বেশি মাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছে!


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার ডেল মারেতে এক সাক্ষাৎকারে কুপার বলেন, ‘মন ভেঙে যায়, যখন দেখি কেউ মোবাইল ফোন দেখতে দেখতে রাস্তা পার হচ্ছেন। কিছু মানুষ মারা না গেলে কারও বোধ আসবে না।’

martin-cooper
মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক মার্টিন কুপার

তবে কুপারের হাতে রয়েছে অ্যাপলের ঘড়ি। ব্যবহার করেন আইফোন। এ বিষয়ে বেশ শৌখিন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, নতুন সংস্করণ এলেই তিনি মোবাইল ফোন পরিবর্তন করেন। তবে ফোনে হাজার হাজার অ্যাপ রয়েছে, যার বেশির ভাগের ব্যবহার জানিনা। মূলত কথা বলার জন্যই তিনি ফোন ব্যবহার করেন।

কুপার বলেন, ‘আজ যে মোবাইল ফোনের জাদুতে মজে রয়েছে মানুষ, তাও এক সময় থাকবে না। প্রতিটি প্রজন্ম আরও বুদ্ধি ধরবে, প্রযুক্তি আরও অনেক উন্নত হবে।’


বিজ্ঞাপন


কুপার প্রথম মোবাইল ফোনটি তৈরি করেছিলেন ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল। সেটি ছিল বেশ ভারী। ওই সময়ে তিনি ফোন নির্মাণসংস্থা মটোরোলায় কাজ করতেন। মোবাইল ফোন নির্মাণে লক্ষ লক্ষ ডলারের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তখন মোবাইল ফোন আবিষ্কার নিয়ে ছিল দারুণ প্রতিযোগিতা।

১৯৬০ এর দশকে গাড়িতে ফোন রাখার ব্যবস্থা করেছিল একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেই আবিষ্কার সফলতা পায়নি। কারণ, এটি ব্যবহারে গাড়িতে বিশালাকার ব্যাটারি রাখতে হত। কিন্তু এতে লোকজনের সঙ্গে সবসময় তাদের নিজস্ব ফোন থাকে না।

১৯৭২ সালের শেষের দিকে কুপার ঠিক করেন যে, তিনি এমন একটা যন্ত্র তৈরি করবেন যা কোন ব্যক্তি সবসময় নিজের সঙ্গে রাখতে পারবেন। যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন।

টানা তিন মাস দিনরাত গবেষণা করেন কুপার ও তাঁর বিশেষজ্ঞ দল। পরের বছর ১৯৭৩ সালের মার্চে প্রথম মোবাইল ফোন নির্মাণ করেন কুপার। এটির ব্যাটারির চার্জ দিয়ে সর্বোচ্চ ২৫ মিনিট কথা বলা যেত। তবে এটি মূল সমস্যা নয়। ফোনটি ওজন ছিল ১ কিলোগ্রামেরও বেশি। ফলে ২৫ মিনিটের বেশি এটি হাতে ধরে রাখা যায় না।

মার্টিন কুপার প্রতিদ্বন্দ্বী ফোন প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান বেল সিস্টেমের ড. জোয়েল এঙ্গেলকে প্রথম ফোন করে বলেছিলেন, ‘জোয়েল, আমি মার্টিন কুপার বলছি। আমি একটা হাতেধরা সেলফোন থেকে কথা বলছি। এটি একটি সত্যিকারে সেলফোন, ব্যক্তিগত, এক জায়গা থেকে অন্যত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং হাতে ধরা যায়।’

ফোনের পর জোয়েলের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে কুপার বলেন, ‘তখন লাইনের অপর প্রান্তে ছিল নীরবতা। আমার মনে হয় সে দাঁত কিড়মিড় করছিল।’

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর