শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

‘স্মার্ট জাতি বিনির্মাণে স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য’

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৩, ০২:২০ পিএম

শেয়ার করুন:

‘স্মার্ট জাতি বিনির্মাণে স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য’

স্মার্ট জাতি বিনির্মাণের জন‌্য স্মার্ট যোগাযোগ ব‌্যবস্থা অপরিহার্য। বাংলাদেশে এখন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো এবং যুগোপযোগী পরিবহণ সেবা টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। একটি দক্ষ পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে সরকার গৃহীত বিভিন্ন যুগান্তকারী কর্মসূচি দেশের পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী গতকাল সোমবার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীতে ফেরি চলাচলের উদ্বোধন উপলক্ষে উপজেলার রসুলপুর ফেরিঘাটে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


‘বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও’ হাওরাঞ্চলের অনুন্নত যাতায়াত বোঝাতে বহুকাল ধরে প্রচলিত প্রবাদটি আজ থেকে  ‘বাতিলের খাতায়’ পড়তে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, হাওরবাসি বিশেষ করে খালিয়াজুরীর মানুষের জন‌্য আজকের এই দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই দিনটি খালিয়াজুরীর ইতিহাসে অন‌ন‌্য একটি দিন। ভৌগলিক কারণে বেঁচে থাকার জন‌্য আমাদের লড়াই করতে হয়। ধনু নদীতে ফেরি চালু হওয়ার ফলে আমাদের দূর্ভোগ লাগব হতে চলেছে। 

mustafaতিনি বলেন, এর ফলে পুরোপুরি পাল্টে যাবে হাওর পাড়ের অর্থনীতি। জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে হাওরের এই বিচ্ছিন্ন জনপদ। এতে যাত্রীদের যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে তেমনি তৈরি হবে নতুন নতুন বাজার। চাঙ্গা হবে স্থানীয় অর্থনীতি। সমৃদ্ধ হবে হাওর পাড়ের পর্যটন শিল্পের।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০১৮ সাল থেকে ফেরি ব‌্যবস্থা চালু করার প্রচেষ্টা শুরু করি। আজ থেকে ফেরিটি চালু হওয়ায় খালিয়াজুরীর মানুষের জীবনে যোগাযোগ ব‌্যবস্থায় এক নতুন অধ‌্যায়ের সূচনা হলো। 

তিনি বলেন, হাওরের মানুষের জন‌্য ডিজিটাল সংযুক্তির কাজটিও আমরা করেছি। এর ফলে হাওরবাসির জীবনধারায় অভাবনীয় পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। তিনি বলেন, হাওরবাসির পশ্চাদপদতার অবসান  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। আমরা আর পিছিয়ে থাকবো না। খালিয়াজুরী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারিদের দুর্গ উল্লেখ করে তিনি  উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন‌্য হাওরবাসির প্রতি আহ্বান জানান। 


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, আমরা আজীবন পিছিয়ে থাকতে পারি না। সামনে এগুনোর জন‌্য আমাদের নিজেদেরকে সঠিক নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ‌্যতা অর্জন করতে হবে। আমরা হাওর এলাকা থেকে দেশের শতকরা ২৫ ভাগ ধান ও  শতকরা ২৫ ভাগ মিঠাপানির মাছের যোগান দিয়ে থাকি। স্মার্ট বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় সামনের পৃথিবীতে আমাদের পরিবর্তন অনিবার্য। তিনি ছেলে মেয়েদের স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

খালিয়াজুরী উপজেলা চেয়ারম‌্যান রাব্বানী জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুয়েল সাংমা এবং সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান বক্তৃতা করেন।

রাব্বানী জব্বার বলেন, খালিয়াজুরী হাওর এলাকা হওয়াতে শুকনো মৌসুমে এখানে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হয়। এখানকার ধনু নদী পারপারে তেমন কোনো সুব্যবস্থা না থাকায় ফসলগুলো বিক্রির জন‌্য সুষ্ঠু বাজার ব‌্যবস্থা গড়ে উঠেনি। এ কারণে এই অঞ্চলের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। এই ফেরির ফলে পাল্টে যাবে এই জনপদের জীবনধারা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বছরের প্রায় আট মাস পানির নিচে থাকে হাওরে ঘেরা এই উপজেলা। পানি নেমে যাওয়ায় নভেম্বর থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত স্থলপথেই যোগাযোগ করেন এখানকার মানুষ। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে থমকে আছে এখানকার অর্থনীতি। পণ্য পরিবহন, যাতায়াত সবকিছুই চলে নৌকায়।

জেলা সদর থেকে খালিয়াজুরীর দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে রসুলপুর ঘাট পর্যন্ত ছোট বড় যানবাহন চলাচল করলেও ধনু নদী পাড় হতে না পারায় খালিয়াজুরীতে চলতো না কোনো গাড়ি। বছরের ৪ মাস অটো কিংবা মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতে হয় এখানে। ভাড়া যেমন বাড়তি লাগে তেমনি সংকট রয়েছে যানবাহনের।  এতে যাত্রীদের যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে তেমনি তৈরি হবে নতুন নতুন বাজার। ২৯৭ দশমিক ৬৪ বর্গ কিলোমিটারের এই উপজেলাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে ধনু ও সুরমা নদী। হাওরের এই নদীগুলোকে ঘিরেই জমে উঠে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য। এ নদী পথ সংযুক্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ, সিলেট, ভৈরবসহ বড় বড় নদী বন্দরগুলোর সঙ্গে।

এর আগে মন্ত্রী ফেরিচালুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর