বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিস্ফোরণ হতে পারে ফেলে রাখা পুরনো ফোন ও ডিভাইস

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৪:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

বিস্ফোরণ হতে পারে ফেলে রাখা পুরনো ফোন ও ডিভাইস

অনেকেই ফোন পুরনো হলে ব্যবহার করেন না। ড্রয়ারে কিংবা বাক্সে ভরে রাখেন। এমনকি করে চার্জার, রাউটার, ল্যাপটপ কিংবা পুরনো ব্যাটারিও ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখেন। এই অভ্যাস যদি আপনার থাকে তবে এখনই সাবধান হোন। কেননা, ফেলে রাখা পুরনো গ্যাজেট বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লাগতে পারে। 

প্রতিটা ইলেকট্রনিক ডিভাইসেরই একটা এক্সপায়ারি ডেট থাকে। কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এই তথ্য ব্যবহারকারীদের জানায় না। 


বিজ্ঞাপন


কেউ কেউ পুরনো ফোনসহ অন্যান্য গ্যাজেট বিক্রি করে দেন। কেউ কেউ এগুলো বিক্রি না করে জমিয়ে রাখেন। কিন্তু সেই বহু পুরাতন ডিভাইসই আমাদের জীবনে ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে, এই ধরনের পুরনো ডিভাইস ডিসপোজ করা উচিত বা রিসাইকেল করে নেওয়া দরকার। 

কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা এই ধরনের পুরনো ডিভাইস কিনে নিয়ে রিসাইকেল করে। তবে তার আগে আপনার জেনে নেওয়া দরকার যে, কোন কোন পুরনো ডিভাইস আপনার বাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে থাকলে সমস্যা হতে পারে এবং সেগুলো রিসাইকেল করা দরকার।

phoneফোন

ফিচার ফোন, এমনকি স্মার্টফোনেও থাকে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। তাই পুরনো ফোন আপনার ড্রয়ারে বেশি দিন রেখে দিলে বড় বিপদ হতে পারে। অনেক সময়ই দেখা যায়, পুরনো ফোন আরও যত পুরনো হতে থাকে, তার ব্যাটারি ফুলে ঢোল হয়ে যায়। এর ফলে ফোন বার্স্ট করে বড়সড় বিপত্তি ঘটে যেতে পারে। অজান্তে অনেকেই আহত হতে পারেন।


বিজ্ঞাপন


পুরনো রাউটার

বাড়িতে পুরনো রাউটার থাকার অর্থ হল সাইবার ক্রিমিনালদের সরাসরি আমন্ত্রণ পাঠানো। আর সাইবার ক্রিমিনাল যদি আপনার বাড়ির অতিথি হয়ে যায়, তাহলে কত বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন আপনি হতে পারেন, একবার কল্পনা করে দেখুন। সফিস্টিকেটেড হ্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে পুরনো রাউটারগুলো কখনই সুরক্ষা প্রদান করতে পারে না। তাই হ্যাকাররাও পথ খোঁজেন, কোথায় পুরনো ডিভাইস রয়েছে। এছাড়াও ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত অনেক পুরনো দিনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস শর্ট সার্কিট এবং আগুনও ধরাতে পারে।

phoneপুরনো পাওয়ার ক্যাবল

যেকোনো ক্যাবেলই পুরনো হয়ে গেলে তাদের নিরোধক বৈশিষ্ট্য হারাতে পারে। ফলে, সেই তারগুলো চেক না করা হলে শক, স্পার্ক এবং আগুনও ধরাতে পারে। এছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে অব্যবহৃত তারও পুরনো হয়ে গেলে প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই, পুরনো তার ফেলে দিন।

পুরনো বাল্ব ও টিউবলাইট

আমরা বাড়িতে অনেক সময়ই পুরনো বাল্ব বা টিউবলাইট রেখে দেই। সেগুলোতে অনেক ছোট অংশ থাকে-টাংস্টেন ফিলামেন্ট, কেমিক্যাল এবং গ্যাসও থাকে এগুলোর মধ্যে। এখন কোনও ক্রমে সেই পুরনো বাল্ব বা টিউবলাইট যদি ভেঙে যায়, তাহলে তার টুকরো-টুকরো অংশগুলো আপনার জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখবেন, এই সব ডিভাইসের মেটাল এবং গ্লাস রিসাইকেল করা যেতে পারে।

পুরনো চার্জার

পুরনো চার্জার সার্কিন বোর্ড ব্যবহার করে, যেগুলো হাই-মলিকিউলার পলিমার, গ্লাস ফাইবার, হাই পিওরিটি কপার ফয়েল এবং প্রিন্টেড কম্পোনেন্ট দ্বারা কম্পোজ করা হয়। জেনে রাখুন, চার্জারের সার্কিট বোর্ডের বয়স বাড়লে তা আপনার বাড়িতে আগুন ধরাতে পারে এবং বিস্ফোরণও হতে পারে। এই চার্জারের সার্কিন বোর্ডগুলো রিপ্লেস করা যেতে পারে।

phoneপুরনো ইয়ারফোন এবং স্পিকার

ইয়ারফোন এবং স্পিকারে থাকে একাধিক টক্সিক মেটিরিয়াল। ম্যাগনেট (মেটাল), কপার কয়েল, প্লাস্টিক এবং ব্যাটারির মতো উপাদান থাকে। এগুলোকে যদি যথাযথ ভাবে নিস্ক্রিয় করতে না পারেন, তাহলে তা পরিবেশের জন্য খতরা হয়ে দেখা দিতে পারে। এই ধরনের ডিভাইসের ব্যাটারির সামান্য লিকেজ আপনাকে ভয়নাক বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি পুরনো বা ভেঙে গিয়েছে বা নষ্ট হয়ে গিয়েছে এমন হেডফোন, সংস্থাগুলোর কাছে জমা দিয়ে দিতে পারেন রিসাইকেল করার জন্য।

পুরনো হার্ড ড্রাইভ

পুরনো হার্ড ড্রাইভ নিরাপদ দেখাতে পারে, কিন্তু ব্যবহার না করলে সেটি ড্রয়ারে ঢুকিয়ে রাখা মোটেই ভালো কাজ নয়। হার্ড ড্রাইভে থাকে অ্যালুমিনিয়াম, প্রোটেক্টিভ পলিমার, প্লাস্টিক এবং ম্যাগনেটের মতো উপাদান। এই ধরনের উপাদানগুলো আপনার পরিবেশকে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। পুরনো হার্ডড্রাইভও আমরা রিসাইকেল বা নিষ্ক্রিয় করতে পারি। তবে তা ঠিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা দরকার, যাতে ডেটা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা দেখা না যায়।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর