বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নকল ফোন চেনার উপায়

বাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল স্মার্টফোন

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

বাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল স্মার্টফোন
নকল ফোন চেনার উপায়

স্মার্টফোন এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বাজারে জালিয়াত চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায়ই নকল স্মার্টফোন চক্রের সন্ধান পায়, যা খবরের শিরোনাম হয়।

বাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল স্মার্টফোন! চেনার উপায় জেনে নিন


বিজ্ঞাপন


স্মার্টফোন এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বাজারে জালিয়াত চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায়ই নকল স্মার্টফোন চক্রের সন্ধান পায়, যা খবরের শিরোনাম হয়।

চক্রগুলো নামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মডেলগুলোর হুবহু নকল তৈরি করে সাধারণ গ্রাহকদের প্রতারিত করে।

কীভাবে বুঝবেন ফোনটি নকল?

১. IMEI নম্বর যাচাই করুন


বিজ্ঞাপন


IMEI (International Mobile Equipment Identity) নম্বর প্রতিটি ফোনের একক পরিচয়।

যেভাবে চেক করবেন:

ফোনে *#06# ডায়াল করুন।

একই নম্বর ফোনের বক্স বা ইনভয়েসে আছে কি না মিলিয়ে দেখুন।

তারপর বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গিয়ে চেক করুন:

এটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC)-এর ইআইআর (EIR) সিস্টেম। এখানে IMEI দিলেই জানা যাবে ফোনটি বৈধ কি না।

২. প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিং লক্ষ্য করুন

আসল ফোনের বক্সে থাকে স্পষ্ট প্রিন্ট, বারকোড ও ব্র্যান্ড লোগো।

নকল ফোনের বক্সে বানান ভুল, অন্ধকার প্রিন্টিং বা অস্পষ্ট লোগো থাকে।

চার্জার, হেডফোন ও ক্যাবল গুলোও নিচু মানের হয়।

fake_phone

৩. সফটওয়্যার ও সেটিংসে অস্বাভাবিকতা দেখুন

আসল ফোনের ‘About phone’ অপশনে নির্ভুল মডেল নম্বর, অ্যানড্রয়েড ভার্সন ও সিকিউরিটি প্যাচ থাকে।

নকল ফোনে ওএস দেখে মনে হবে আসল, কিন্তু সেটি হতে পারে চাইনিজ কাস্টম ROM।

Google Play Protect বা Play Store চালু না থাকলে বুঝবেন কিছু একটা সন্দেহজনক।

৪. ক্যামেরার গুণমান যাচাই করুন

অনেক নকল ফোনে বলা হয় ৫০ মেগাপিক্সেল বা ১০৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, কিন্তু ছবি হয় অস্পষ্ট ও কম রেজোলিউশনের।

গ্যালারি অ্যাপে গিয়ে ছবির Properties চেক করলে সত্যতা ধরা পড়ে।

৫. Benchmark টেস্ট করুন

‘CPU-Z’, ‘Antutu Benchmark’ বা ‘Device Info HW’ অ্যাপ ডাউনলোড করে ফোনের প্রসেসর, র‍্যাম, গ্রাফিক্স চিপ ইত্যাদি যাচাই করুন।

নকল ফোনে এগুলো অনেক ক্ষেত্রেই ভুয়া দেখায়।

৬. মূল্য নিয়ে সন্দেহ করুন

বাজারে যেখানে ফোনটির দাম ৩০ হাজার টাকা, সেখানে কেউ যদি ১৮ হাজারে দেয়, তাহলে তা সন্দেহজনক।

বিশেষ করে অনলাইনে বা অফলাইন দোকানে ‘ফ্ল্যাশ সেল’ বা ‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’ নামে ফাঁদ পেতে থাকে প্রতারকরা।

নকল ফোন কেন ক্ষতিকর?

ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি

ব্যাটারি বিস্ফোরণের সম্ভাবনা

দুর্বল নেটওয়ার্ক ও পারফরম্যান্স

ওয়ারেন্টি বা বিক্রয়োত্তর সেবার অনুপস্থিতি

ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি

কীভাবে বাঁচবেন প্রতারণা থেকে?

রেজিস্টার্ড ডিলার বা অথরাইজড শোরুম থেকে ফোন কিনুন।

বিল, ওয়ারেন্টি কার্ড ও বৈধ ট্যাক্স চালান সংগ্রহ করুন।

বিস্তারিত যাচাই ছাড়া অনলাইন ফেসবুক পেইজ বা অস্পষ্ট সাইট থেকে ফোন কিনবেন না।

ফোন কেনার আগে BTRC ওয়েবসাইটে IMEI চেক করুন।

আরও পড়ুন: আপনার ওয়াইফাই গোপনে কেউ ব্যবহার করছে কি না যেভাবে বুঝবেন

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) ২০২১ সাল থেকে EIR (Equipment Identity Register) চালু করেছে। এর মাধ্যমে সব বৈধ ফোনের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। নকল বা চোরাই ফোন শনাক্ত করে তা নেটওয়ার্কে বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।

নকল ফোন শুধু আপনার টাকা নয়, আপনার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা হারানোর কারণ হতে পারে। প্রযুক্তির যুগে একটু সচেতনতাই আপনাকে বাঁচাতে পারে বড় ক্ষতির হাত থেকে।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর