আজ ২১ ডিসেম্বর ২০২৫—উত্তর গোলার্ধের জন্য বছরের সবচেয়ে ছোট দিন এবং সবচেয়ে দীর্ঘ রাত। আজই সংঘটিত হচ্ছে শীত অয়নান্ত, যার মধ্য দিয়ে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক হিসাবে শীত ঋতুর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
আবহাওয়াবিদদের হিসাবে শীতকাল শুরু ধরা হয় ১ ডিসেম্বর থেকে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অনেকের কাছেই শীত অয়নান্তের দিনটিকেই প্রকৃত শীতের সূচনাদিবস হিসেবে বিবেচনা করা হয়—এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিজ্ঞাপন
কখন ঘটছে শীত অয়নান্ত?
শীত অয়নান্ত কোনো পুরো দিনজুড়ে চলা ঘটনা নয়; এটি ঘটে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তে। ইউএসএ টুডে–র তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৯টা ৩ মিনিটে শীত অয়নান্ত সংঘটিত হবে। এই সময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে হেলে থাকে।

কেন আজ রাত সবচেয়ে দীর্ঘ?
বিজ্ঞাপন
আজ সূর্য অবস্থান করবে মকরক্রান্তি রেখার ঠিক ওপর। এর ফলে দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা যাবে বছরের সবচেয়ে বড় দিন এবং সবচেয়ে ছোট রাত। বিপরীতভাবে, উত্তর গোলার্ধে সূর্যের আলো পড়বে সবচেয়ে কম। তাই এখানে দিন হবে সবচেয়ে ছোট এবং রাত হবে সবচেয়ে দীর্ঘ।
ঋতু পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক কারণ
পৃথিবী তার নিজ অক্ষের ওপর প্রায় ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি কাত হয়ে রয়েছে। এই কাত হয়ে থাকাই পৃথিবীতে ঋতু পরিবর্তনের মূল কারণ। অনেকের ধারণার বিপরীতে, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ঋতু পরিবর্তনের প্রধান কারণ নয়।
আরও পড়ুন: পৃথিবী স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত ঘুরছে, ছোট হচ্ছে দিন-রাত
বিজ্ঞানীরা জানান, জানুয়ারি মাসে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকে। তবুও সে সময় উত্তর গোলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে। এতে স্পষ্ট হয়, পৃথিবীর কক্ষপথ নয়—বরং তার কাত হয়ে থাকা অক্ষই ঋতু পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
এরপর কী ঘটবে?
শীত অয়নান্তের পর সূর্য ধীরে ধীরে বিষুবরেখার দিকে উত্তরমুখী যাত্রা শুরু করে, যা প্রায় ছয় মাস স্থায়ী হয়। এই যাত্রার শেষ পর্যায়ে আসে গ্রীষ্ম অয়নান্ত। সে সময় সূর্য অবস্থান করে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর এবং উত্তর গোলার্ধে দেখা যায় বছরের সবচেয়ে বড় দিন।

শীত ও গ্রীষ্ম অয়নান্তের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে দুটি বিষুব—একটি মার্চ মাসে এবং অন্যটি সেপ্টেম্বর মাসে। এই দুই সময় দিন ও রাত প্রায় সমান হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবে এই দুই বিষুব দিয়েই শুরু হয় যথাক্রমে বসন্ত ও শরৎ ঋতু।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে শীত অয়নান্ত
জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে শীত অয়নান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এদিন সূর্য আকাশে তার সবচেয়ে নিচু অবস্থানে থাকে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি সূর্য ওঠা বা অস্ত যাওয়ার সময়ের চূড়ান্ত সীমা নয়—সেই সময়গুলো কয়েক দিন আগ-পিছ হতে পারে।
এজেড

