স্মার্টফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অনেক ব্যবহারকারীই অভিযোগ করছেন, ফোনে কথা বলার সময় বা সামান্য ব্যবহারে হঠাৎ ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে কিংবা ফোন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে বড় কোনও হার্ডওয়্যার সমস্যা না থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী থাকে কিছু অপ্রয়োজনীয় সেটিংস ও ফিচার। সামান্য সচেতন হলেই সহজে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
অপ্রয়োজনীয়ভাবে চালু থাকা ওয়াই ফাই ও ব্লুটুথ
বিজ্ঞাপন
অনেকেই ওয়াই ফাই কিংবা ব্লুটুথ ব্যবহার না করলেও সারাক্ষণ চালু রেখে দেন। এই দুটি ফিচার চালু থাকলে ফোন ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় নেটওয়ার্ক ও আশপাশের ডিভাইস অনুসন্ধান করতে থাকে। এর ফলে ব্যাটারির ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রয়োজন ছাড়া ওয়াই ফাই ও ব্লুটুথ বন্ধ রাখলে ব্যাটারি ব্যাকআপ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের তালিকা প্রকাশ
কুইক শেয়ার ফিচার ব্যাটারি দ্রুত শেষ করছে
ছবি ও ভিডিও দ্রুত আদানপ্রদানের জন্য কুইক শেয়ার ফিচারটি কার্যকর হলেও এটি সারাক্ষণ চালু থাকলে ব্যাটারি দ্রুত নিঃশেষ হতে পারে। কারণ এই ফিচারটি কাজ করার জন্য একসঙ্গে ওয়াই ফাই ও ব্লুটুথ ব্যবহার করে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে সব সময় সংযোগ খোঁজে। নিয়মিত ব্যবহার না করলে কুইক শেয়ার সেটিংসে গিয়ে এটি বন্ধ রাখাই সবচেয়ে নিরাপদ।
বিজ্ঞাপন
হ্যাপটিক ফিডব্যাক বা ভাইব্রেশনের অতিরিক্ত ব্যবহার
নম্বর ডায়াল করা বা কিবোর্ডে টাইপ করার সময় ফোনে যে ভাইব্রেশন অনুভূত হয়, তাকে হ্যাপটিক ফিডব্যাক বলা হয়। এটি ব্যবহারে আরামদায়ক হলেও প্রতিবার ভাইব্রেশন মোটর চালু হওয়ার কারণে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি ব্যাটারি দ্রুত শেষ হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রয়োজন না হলে এই ফিচার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপ রিফ্রেশের অনুমতি
অ্যাপ ইনস্টল করার সময় বেশিরভাগ অ্যাপই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলার অনুমতি পেয়ে যায়। এর ফলে অ্যাপগুলো ব্যবহার না করলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে ডেটা সিঙ্ক ও কনটেন্ট রিফ্রেশ করতে থাকে। এতে ব্যাটারি অকারণে খরচ হয়। যেসব অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ডে চলার প্রয়োজন নেই, সেগুলোর ব্যাটারি ও ডেটা ব্যবহারের অনুমতি সীমিত করলে ব্যাটারি সাশ্রয় হবে।
লোকেশন সার্ভিস সব সময় চালু রাখা
ডিসপ্লের পর স্মার্টফোনে সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি খরচ করে জিপিএস বা লোকেশন সার্ভিস। অনেক অ্যাপ সারাক্ষণ লোকেশন ব্যবহার করে, যা ব্যবহারকারী টেরও পান না। প্রয়োজন ছাড়া লোকেশন সার্ভিস চালু রাখলে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হওয়া স্বাভাবিক। তাই ম্যাপ বা লোকেশনভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহার ছাড়া বাকি সময় লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখাই উত্তম।
কীভাবে ব্যাটারি ও ফোনের স্থায়িত্ব বাড়াবেন
অপ্রয়োজনীয় সেটিংস বন্ধ রাখা, নিয়মিত অ্যাপ পারমিশন পর্যালোচনা করা এবং ফোন আপডেট রাখা ব্যাটারি সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এতে ফোনে কথা বলার সময় হঠাৎ অফ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়। একটু সচেতন ব্যবহারেই স্মার্টফোনের পারফরম্যান্স ও ব্যাটারি দুটিই দীর্ঘদিন ভালো রাখা সম্ভব।
এজেড

