দেশে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক জাতীয় প্রতিযোগিতা ‘ভিশনএক্সন: এআই-পাওয়ার্ড ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ আয়োজন করতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ (সিএসইডিইউ)। প্রতিযোগিতার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, আর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে ঢাকা পোস্ট। একইসাথে প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে এই উদ্যোগকে সমর্থন দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন।
আয়োজকরা জানান, তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী চিন্তাকে উৎসাহিত করা এবং একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিযোগিতার নিবন্ধন শুরু হয়েছে গত ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ১৫ নভেম্বর (শনিবার), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।
‘ভিশনএক্স ২০২৫’-এ অংশগ্রহণকারীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কম্পিউটার ভিশন, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), রোবটিক্স, মোবাইল ক্লাউড ও বুদ্ধিমান সিস্টেম-ভিত্তিক উদ্ভাবনী প্রকল্প ও ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করতে পারবেন।
আয়োজকদের মতে, এই প্ল্যাটফর্ম তরুণদের প্রযুক্তি জ্ঞানকে বাস্তব প্রয়োগের সুযোগ দেবে এবং সমাজ, শিল্প ও কমিউনিটির বাস্তব সমস্যার কার্যকর সমাধান বের করে আনতে সহায়ক হবে।
প্রতিযোগিতাটি দুইটি ট্র্যাকে অনুষ্ঠিত হবে। বিজনেস আইডিয়া ট্র্যাকে অংশগ্রহণকারীরা নতুন ও উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করবেন, আর প্রজেক্ট শোকেসিং ট্র্যাকে প্রদর্শন করা হবে এআই ভিত্তিক প্রকল্প ও উদ্ভাবন। উভয় ট্র্যাকের চ্যাম্পিয়ন দল এক লাখ টাকা নগদ এবং দুই দিনের ব্যাংকক ভ্রমণ পাবেন। প্রথম রানার আপ দল পাবেন আশি হাজার টাকা এবং দুই দিনের কক্সবাজার ভ্রমণ, আর দ্বিতীয় রানার আপ দল পাবেন পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং দুই দিনের কক্সবাজার ভ্রমণ। এছাড়া বিজয়ী দলগুলোকে মেন্টরশিপ, ইন্টার্নশিপ ও ইনকিউবেশন সহায়তাও দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
দেশের বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। মূল বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে চারটি— কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শিল্পে রোবোটিক্সের প্রয়োগ, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) এবং মোবাইল ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশনস।
দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থী, বা প্রযুক্তি উদ্ভাবক (সর্বোচ্চ বয়স ২৭ বছর) এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন, তবে তাদের দলে অন্তত একজন সদস্যকে অবশ্যই বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হতে হবে। প্রতিটি দলে সর্বোচ্চ তিনজন সদস্য থাকতে পারবে, এবং সদস্যরা ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের হতে পারবে।
আরও পড়ুন: ব্র্যাক হেলথকেয়ারে ডিসকাউন্ট পাবেন বাংলালিংক গ্রাহকরা
প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে নিবন্ধন করা যাবে ওয়েবসাইট visionx.cse.du.ac.bd অথবা ইমেইল [email protected] এর মাধ্যম।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এই সহযোগিতা দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসইডিইউ) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভিশনএক্স বাংলাদেশের এআই গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রথম বড় পদক্ষেপ। তরুণরা এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুধু নতুন ধারণা উপস্থাপনই করবে না, বরং দেশের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির জন্য কার্যকর সমাধান বের করে আনতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিল্পখাতের উদ্ভাবকেরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। এই উদ্যোগ তরুণদের উদ্ভাবনী চেতনা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতা আরও জোরদার করবে।
এজেড

