মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি

একদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকলে যা ঘটবে...

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

social media addiction
মাত্র একটা দিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থেকে দেখুন কী ঘটে। ছবি: ইন্টারনেট।

ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটার (এক্স) এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো আজ সারা বিশ্বের মানুষকে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এখন সামাজিক মাধ্যম আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

গত কয়েক বছরে মানুষ এগুলোর প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছে যে সকাল ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতের ঘুমনোর আগে পর্যন্ত স্মার্টফোনের স্ক্রিনে চোখ আটকে থাকে। অনেকে চাইলেও সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরে থাকতে পারছেন না। এটা এখন একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বিজ্ঞাপন


এটা এমন এক ধরনের আসক্তি, যা ধীরে ধীরে মানসিক এবং শারীরিক অসুস্থতা ডেকে আনতে পারে। যদি আপনি নিজেও এই সমস্যার সম্মুখীন হন, তা হলে জেনে রাখুন, এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব নয়। আমরা আপনাকে ৫টি সহজ উপায় বলছি, যার মাধ্যমে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পেতে পারেন।

addiction

আসক্তি কেন হয়?

সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি বুঝতে হলে আগে জানতে হবে, কেন মানুষ এতটা প্রলুব্ধ হয়। যখন আপনি সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করেন, তখন প্রতি মুহূর্তে কিছু না কিছু নতুন জিনিস দেখতে পান — যা আপনার মস্তিষ্কে উত্তেজনা তৈরি করে। এই উত্তেজনার ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। ডোপামিন হল এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার, যা আমাদের আনন্দ ও তৃপ্তির অনুভূতি দেয়।


বিজ্ঞাপন


এই একই হরমোন তখনও নিঃসরণ হয় যখন কেউ নেশাজাত দ্রব্য গ্রহণ করে। এই আনন্দের অনুভূতি আবার পেতে মস্তিষ্ক আমাদের বারবার সামাজিক মাধ্যম চালাতে বাধ্য করে — আর এখান থেকেই শুরু হয় আসক্তি।

এর পাশাপাশি মস্তিষ্কে কাজ করে FOMO (কিছু না কিছু মিস করে ফেলব এই আশঙ্কা) — এই ভয়ও একটি বড় কারণ, যার জন্য আমরা ঘন ঘন সামাজিক মাধ্যম খুলে দেখতে থাকি।

adic

১. এক দিনের জন্য ডিজিটাল ডিটক্স দিয়ে শুরু করুন

সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে একেবারে দূরে থাকা সহজ নয়। তাই শুরু করুন সপ্তাহে একদিন বা ছুটির দিনে পুরোপুরি সামাজিক মাধ্যম বন্ধ রেখে। প্রথমে একটু কঠিন মনে হলেও ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত হবে। আপনার মস্তিষ্ক ও মন বিশ্রাম পাবে। কয়েক মাস পর আপনি নিজেই অনুভব করবেন যে জীবন কেবল সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। যদি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়, তাহলে সামাজিক মাধ্যমের সব অ্যাপ মুছে দিন।

adicition

২. সোশ্যাল মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করুন

ডিজিটাল ডিটক্স শুরু করার পর পরবর্তী ধাপে ফোনের সামাজিক মাধ্যমের বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করুন। প্রায়ই দেখা যায়, ফোনে একটি বিজ্ঞপ্তি আসলেই আমরা সেটি দেখতে গিয়ে পুরো সামাজিক মাধ্যমের জালে আটকে পড়ি। এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে ফোনের বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করে দিন বা সাইলেন্ট মোডে রাখুন।

৩. ফোন ব্যবহার করার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করুন

যদি আপনি একেবারে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়তে না পারেন, তাহলে ব্যবহারের একটি সীমা নির্ধারণ করুন। আপনার ফোন বা সামাজিক মাধ্যমের অ্যাপগুলোর জন্য প্রতিদিন কতটা সময় ব্যবহার করবেন তা ঠিক করে রাখুন। এখন বেশিরভাগ স্মার্টফোনে স্ক্রিন টাইম বা অ্যাপ সীমা নির্ধারণের ফিচার থাকে। এটি ব্যবহার করে আপনি কোন অ্যাপে কত সময় ব্যয় করছেন তা দেখতে পাবেন এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

young

৪. বাড়িতে ‘ফোন ফ্রি জোন’ তৈরি করুন

আমরা প্রায়ই খাওয়ার সময় বা ঘুমানোর আগে সবচেয়ে বেশি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করি। এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে বাড়িতে ‘ফোন ফ্রি জোন’ বানান। উদাহরণস্বরূপ — বেডরুমে ফোন নিষিদ্ধ করুন, ডাইনিং টেবিলে ফোন না নেওয়ার নিয়ম করুন।

আরও পড়ুন: ২ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ভিডিও! ইউটিউবে সর্বাধিক দেখা বিশ্বরেকর্ড

৫. বাস্তব জীবনের কার্যক্রমে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে হলে বাস্তব জীবনের কিছু কার্যক্রমে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। যেমন: বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, বাগান পরিচর্যা করুন, সঙ্গীত, নৃত্য বা আঁকাআঁকি শিখুন, হাঁটতে বেরোন বা জিমে ভর্তি হন, কোনও খেলাধুলার কার্যক্রমে অংশ নিন। নিজেকে এমনভাবে ব্যস্ত রাখুন যাতে সোশ্যাল মিডিয়া চালানোর প্রয়োজনটাই মনে না হয়।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর