আধুনিক ব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচানো ও কাজের দক্ষতা বাড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট একটি শক্তিশালী ভার্চুয়াল সহকারী, যা আপনার স্মার্টফোনের দৈনন্দিন কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে পারে। বিশেষ করে এর ‘রুটিন’ ফিচার ব্যবহার করে একটি নির্দেশে একাধিক কাজ করা সম্ভব—যেমন অ্যালার্ম সেট, আবহাওয়ার খবর জানা, স্মার্ট ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ, বা গান চালানো।
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট রুটিন কী?
রুটিন হলো এমন একটি ফিচার, যা নির্দিষ্ট নির্দেশ, সময় বা অবস্থানের ভিত্তিতে একাধিক কাজ একসাথে সম্পন্ন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি বলেন “হেই গুগল, শুভ সকাল”, তাহলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইট চালু করবে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেবে, আপনার দিনের ক্যালেন্ডার পড়ে শোনাবে এবং গান বাজাবে।
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট রুটিন সেটআপ করার ধাপ
১. অ্যাপ চালু করুন: অ্যানড্রয়েডে সরাসরি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাপ খুলুন। আইওএস ব্যবহারকারীদের আগে অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
২. সেটিংসে যান: প্রোফাইল ছবিতে চাপ দিয়ে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট সেটিংস’ নির্বাচন করুন।
৩. রুটিন বিভাগ নির্বাচন করুন: ‘রুটিনস’ অংশ থেকে ‘ম্যানেজ রুটিনস’ বেছে নিন।
৪. নতুন রুটিন তৈরি করুন: “+” বোতামে চাপ দিয়ে একটি নতুন রুটিন তৈরি করুন এবং নাম দিন (যেমন “সকালের রুটিন”)।
৫. শুরুর নির্দেশ বেছে নিন: ভয়েস কমান্ড, নির্দিষ্ট সময় বা অবস্থান নির্বাচন করুন।
৬. কাজ যোগ করুন: লাইট অন করা, ক্যালেন্ডার পড়া, গান চালানো ইত্যাদি বেছে নিন।
৭. সংরক্ষণ করুন: সেভ করে শুরুর কমান্ড দিয়ে পরীক্ষা করুন।
জনপ্রিয় রুটিনের উদাহরণ
সকালের রুটিন: লাইট অন, আবহাওয়া জানা, দিনের ক্যালেন্ডার পড়া, পডকাস্ট চালানো।
কর্মস্থলে যাতায়াত: ট্রাফিক তথ্য, ক্যালেন্ডার ইভেন্ট, প্রিয় গান চালানো।
বাড়ি ফেরার সময়: লাইট অন, থার্মোস্ট্যাট সেট, পরিবারের সদস্যদের বার্তা পাঠানো।
ঘুমানোর আগে: ফোন সাইলেন্ট করা, অ্যালার্ম সেট, ঘুমানোর জন্য সঙ্গীত চালানো।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট রুটিন ব্যবহারের সুবিধা
সময় সাশ্রয়: পুনরাবৃত্ত কাজ স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় সময় বাঁচে।
দক্ষতা বৃদ্ধি: দৈনন্দিন কাজ সহজে সম্পন্ন হয়।
নিজস্ব কাস্টমাইজেশন: প্রয়োজন অনুযায়ী রুটিন তৈরি করা যায়।
হ্যান্ডস-ফ্রি ব্যবহার: কেবল ভয়েস কমান্ডেই কাজ সম্পন্ন।
অতিরিক্ত ডিভাইস সংযোগ: স্মার্ট লাইট, স্পিকার, থার্মোস্ট্যাট ইত্যাদির সাথে একীভূত করা যায়।
কার্যকর রুটিন তৈরির টিপস
বিভিন্ন রুটিন চেষ্টা করে দেখুন কোনটি সবচেয়ে উপযোগী।
রুটিনের নাম সহজ ও বর্ণনামূলক রাখুন।
সময়সূচি বদলালে রুটিন আপডেট করুন।
IFTTT-এর মতো অতিরিক্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন।
জিপিএস-ভিত্তিক রুটিন সেট করুন, যেমন বাড়ি পৌঁছালে লাইট চালু হওয়া।
আরও পড়ুন: কীভাবে ইউটিউব থেকে আয় করা যায়
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট রুটিন আপনার দৈনন্দিন জীবনকে আরও স্মার্ট ও স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে পারে। সঠিকভাবে রুটিন সেটআপ করলে সকালের প্রস্তুতি থেকে রাতের ঘুম পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই একটি নির্দেশে সম্পন্ন হবে।
এজেড

