পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিক শক্তিধর দেশ আমেরিকা। শুধু সৈন্যসংখ্যা নয়, আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, গবেষণা ও প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল বাজেটের কারণে তাদের হাতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ও উন্নত মারণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান।
এই প্রতিবেদনে থাকছে আমেরিকার হাতে থাকা কিছু প্রধান অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ও জেট ফাইটারের তালিকা ও বিবরণ।
বিজ্ঞাপন
ফাইটার বিমান
১. জেট ফাইটার ও বোমারু বিমান
F-22 Raptor
বিশ্বের প্রথম স্টেলথ-সক্ষম সুপারসোনিক ফাইটার
বিজ্ঞাপন
রাডারে প্রায় অদৃশ্য
এয়ার-টু-এয়ার ও এয়ার-টু-গ্রাউন্ড দুই ধরনের হামলায় দক্ষ
গতিবেগ: ম্যাক ২+
F-35 Lightning II
মাল্টিরোল ফাইটার (একইসঙ্গে হামলা, গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা)
তিন ধরনের ভার্সন: F-35A (এয়ার ফোর্স), F-35B (মেরিন), F-35C (নেভি)
অত্যাধুনিক সেন্সর, ডাটা লিঙ্ক, স্টেলথ প্রযুক্তি

B-2 Spirit (Stealth Bomber)
স্টেলথ বোমারু, রাডারে ধরা পড়ে না
পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম
প্রায় ১১,০০০ কিমি পাল্লা
B-21 Raider (নতুন প্রজন্ম)
ভবিষ্যতের স্টেলথ বোমারু, B-2-এর উত্তরসূরি
রাডার-বিধ্বংসী এবং AI নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ
F-15EX Eagle II
পুরোনো F-15-এর উন্নত সংস্করণ
২২টি পর্যন্ত অস্ত্র বহনের ক্ষমতা
নয়া প্রযুক্তি সংযোজনসহ উন্নত যুদ্ধক্ষমতা

২. রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা
Tomahawk Cruise Missile
অত্যন্ত নির্ভুল, দীর্ঘপাল্লার ক্রুজ মিসাইল
আরও পড়ুন: রাডার প্রযুক্তির চোখ ফাঁকি দেয় কোন কোন যুদ্ধ বিমান?
১,৬০০+ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম
Trident II D5
সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
৭,৪০০+ কিমি পর্যন্ত পাল্লা
প্রতিটি মিসাইল একাধিক পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম
Minuteman III ICBM
ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র
১৩,০০০ কিমি+ পাল্লা
AGM-114 Hellfire
এয়ার-টু-গ্রাউন্ড মিসাইল, ড্রোন বা হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হয়
ট্যাংক, যানবাহন বা বাংকার ধ্বংসে ব্যবহার হয়

৩. ড্রোন ও রোবোটিক যুদ্ধব্যবস্থা
MQ-9 Reaper
দীর্ঘ সময় আকাশে ভেসে থাকতে পারে
নির্ভুল হামলার জন্য গাইডেড মিসাইল বহন করে
গোয়েন্দা নজরদারিতে কার্যকর
RQ-170 Sentinel (Stealth Drone)
গোপন নজরদারির জন্য ব্যবহৃত স্টেলথ ড্রোন
ইরান একবার একটি ধরার দাবি করেছিল
Loyal Wingman (পরীক্ষাধীন)
এআই-নির্ভর ড্রোন যা ফাইটার জেটের সাথে সঙ্গী হিসেবে উড়ে
ভবিষ্যতের অটোমেটেড এয়ার কমব্যাটের ধারণা
৪. নৌ-সামরিক শক্তি ও রাডার ব্যবস্থা
USS Gerald R. Ford-class Aircraft Carrier
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও আধুনিক বিমানবাহী জাহাজ
আরও পড়ুন: বি ২ বোমারু বিমান: পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও ভয়ংকর যুদ্ধ বিমান
বৈদ্যুতিক ক্যাটাপুল্ট সিস্টেম, উন্নত রাডার
প্রায় ৭৫টি বিমান ও ৪,৫০০+ সেনা বহনে সক্ষম
Aegis Combat System
আধুনিক যুদ্ধজাহাজে ব্যবহৃত স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
বিমান, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে

৫. স্পেস ও সাইবার সক্ষমতা
X-37B (গোপন স্পেস প্লেন)
বহুদিন ধরে গোপনে মহাকাশে থাকতে সক্ষম
কী কাজ করে তা গোপন, অনেকে একে "স্পেস অস্ত্র" বলে মনে করেন
CYBERCOM (সাইবার কমান্ড)
আমেরিকার সাইবার প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ ব্যবস্থার কেন্দ্র
শত্রুর ডেটা সিস্টেম হ্যাকিং, সাইবার যুদ্ধ ও AI টুল ব্যবহারে দক্ষ
আরও পড়ুন: টমাহক মিসাইলের নাম এখনো কেন মুখে মুখে?
যুক্তরাষ্ট্র শুধু অস্ত্রের আধিক্যে নয়, প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বেও শীর্ষে।
এআই, স্টেলথ, রিমোট সেন্সিং, মহাকাশ—সব ক্ষেত্রেই তারা ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বাজেট বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি—প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার (২০২৪)।
এমন প্রযুক্তি ও ক্ষমতার মিশেলে আমেরিকা আজও বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সামরিক শক্তি হিসেবেই স্বীকৃত।
এজেড

