চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল হিসেবে পরিচিত। এটি নানা দিক থেকে প্রায় মানুষের মতো যোগাযোগ করার ক্ষমতা রাখে এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ অতি দ্রুত সম্পাদন করতে সক্ষম। তবে, চ্যাটজিপিটির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যার ফলে কিছু কাজ করতে এটি অক্ষম। আসুন, চ্যাটজিপিটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানি।
১. শারীরিক কাজ বা ইন্টারঅ্যাকশন
চ্যাটজিপিটি একটি ডিজিটাল সহকারী, তবে এটি শারীরিক কাজ বা ইন্টারঅ্যাকশন করতে পারে না।
যেমন এটি কোনো ভারী জিনিস তোলা, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ করা বা শারীরিকভাবে কোনো কাজ করতে সক্ষম নয়।
এটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল বা বাস্তবিকভাবে কাজ করতে পারে না।
আরও পড়ুন: কিছু ফুল পচা মাংসের দুর্গন্ধ ছড়ায় কেন?
বিজ্ঞাপন
এটি সম্পূর্ণ একটি ভার্চুয়াল সিস্টেম, তাই শারীরিক দিক থেকে কোনো রকম ইন্টারঅ্যাকশন বা কার্য সম্পাদন এর দ্বারা সম্ভব নয়।
২. লাইভ তথ্য সংগ্রহ করা
চ্যাটজিপিটি বর্তমানে লাইভ তথ্য সংগ্রহ করে কোনোরকম ফলাফল দিতে সক্ষম নয়। এটি গতানুগতিকভাবে গত বছরের বা পূর্বের তথ্য দিয়ে ফলাফল প্রদান করে থাকে। তাই
এটি লাইভ আপডেট, রিয়েল-টাইম খবর বা অনলাইন ইভেন্ট অনুসরণ করতে পারে না।
ইন্টারনেট ব্রাউজিং বা লাইভ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে নতুন খবর জানানো চ্যাটজিপিটি থেকে পাওয়া সম্ভব না।
এটি যেসব তথ্য প্রদান করে থাকে তা তার ট্রেনিং ডেটার মধ্যে সীমাবদ্ধ, যার কারণে এটি নতুন বা চলমান ঘটনাগুলোর প্রতি অবগত নয়।
৩. ব্যক্তিগত ডেটা বা অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস
চ্যাটজিপিটি কোনো ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে বা কারো ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে কাজ করতে পারে না।
যেমন, এটি ইমেইল পাঠানো বা সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা সম্ভব নয়।
তাছাড়া এটি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সামাজিক অ্যাকাউন্টের কোনো ধরনের তথ্য বা ব্যবস্থা করতে পারে না।
এটি আপনার পার্সোনাল ডেটা অ্যাক্সেস না করেই কাজ করে, যেহেতু আপনার গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার জন্য এই সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে।
৪. চিকিৎসা, আইনি বা পেশাদার পরামর্শ
যদিও চ্যাটজিপিটি নানা বিষয়ে তথ্য প্রদান করে থাকে , তবে এটি কোনো আইনি, চিকিৎসা, বা পেশাদারী পরামর্শ দিতে সক্ষম নয়।
এটি কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ বা নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা সমাধান দিতে পারে না।
এছাড়া আইনগত পরামর্শ বা মামলা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ও সহায়তা করতে সক্ষম নয়।
এই ধরনের গুরুতর বা বিশেষজ্ঞ মতামত সবসময় একজন অভিজ্ঞ পেশাদারের কাছ থেকে নেওয়া উচিত।
৫. সৃজনশীলতা বা মানবিক অনুভূতির অভাব
যদিও এটি ভাষাগত দিক থেকে অত্যন্ত দক্ষ, তবে এতে মানবিক অনুভূতি বা সৃজনশীলতা পুরোপুরি নেই। মানুষের মতো আবেগ অনুভতি প্রকাশ করতে পারে না।
তাছাড়া শিল্পকর্ম বা গানের সৃজন করতে পারে না যা একজন মানুষের প্রকৃত সৃজনশীলতা থেকে বহিপ্রকাশ পায়।
এটি কেবল তথ্য প্রদান এবং সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম, তবে এর কোনো নতুন সৃজনশীল ধারণা বা গভীর মানসিকতার ওপর কাজ করতে পারে না।
৬. একাধিক ভাষা বা সংস্কৃতি নিয়ে পরিপূর্ণ ধারণা
চ্যাটজিপিটি পৃথিবীর অসখ্য ভাষায় কাজ করতে পারে, তবে বিশ্বের সকল ভাষা বা সংস্কৃতি সম্পর্কে এর ধারণা সীমিত।
এটি সব ভাষায় সাবলীল নয়, এবং ভাষাগত ত্রুটি বা ভুল হতে পারে।
এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশের সংস্কৃতি বা রীতিনীতি সম্পর্কে সঠিকভাবে সবসময় জানতে পারে না।
এটি শুধুমাত্র ট্রেনিং ডেটার ওপর ভিত্তি করে কাজ করে, তাই কোনও নির্দিষ্ট সংস্কৃতির গভীরতা বা বৈচিত্র্য এড়িয়ে যেতে পারে।
চ্যাটজিপিটি একটি অত্যাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, যা মানুষের মতো ভাষাগত দক্ষতায় সেবা প্রদান করতে সক্ষম। তবে, তার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা তাকে শারীরিক কাজ, লাইভ তথ্য সংগ্রহ, ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাক্সেস, এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে অক্ষম করে তোলে। এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর অটোমেটিক ইনপুট-আউটপুট ফাংশন, যা সাধারণ কাজগুলোর জন্য উপকারী। তবে, গভীর মানবিক অনুভূতি, সৃজনশীলতা এবং বিশেষজ্ঞ মতামতের ক্ষেত্রে এখনও এটি সক্ষম নয়।
এজেড