শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মঙ্গলেও নাকি মানব বসতি ছিল, বিজ্ঞানীদের চাঞ্চল্যকর দাবি

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

mars

লাল গ্রহ মঙ্গলে নাকি এক সময় মানব বসতি ছিল। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। তারা দাবি করেন পরমাণু যুদ্ধে ভস্ম হয়ে গেছে সেই মানব সভ্যতা সবকিছু?

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ড. জন ব্র্যান্ডেনবার্গের গবেষণা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ব্র্যান্ডেনবার্গের দাবি ছিল, মঙ্গলের মাটিতে একসময় পুরো একটা সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু ভিনগ্রহীদের আক্রমণে সেই সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। পরমাণু হামলা চালিয়ে শেষ করে দেওয়া হয় সবকিছু। সেই দাবি এবার গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: মহাকাশে ‘ভ্যাম্পায়ার’ নক্ষত্রের সন্ধান!

মঙ্গলগ্রহে একসময় সভ্যতা ছিল বলে বরাবরই দাবি করে আসছেন ব্র্যান্ডেনবার্গ। ২০১১ সালেও সেই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। দাবি করেছিলেন, মঙ্গলের লাল রঙ এমনি এমনি হয়নি। একসময় নির্ঘাত সেখানে থার্মোনিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মঙ্গলের মাটিতে যে রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গিয়েছে, তা পৃথিবীতে পরমাণুকেন্দ্রের মাটিতে পাওয়া উপাদানের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। সেই সময় অধিকাংশ সতীর্থরাই ব্র্যান্ডেনবার্গের দাবিতে আমল দেননি। পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটলে তেমন কোনও গহ্বর বা তার কোনও চিহ্ন কেন নেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সকলে। 

mARSS

কিন্তু সম্প্রতি ব্র্যান্ডেনবার্গের দাবি গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে। কারণ ডানি জোনস পডকাস্টে অংশ নেওয়া জেসন রেজা জোরজানি ব্র্যান্ডেনবার্গের সেই দাবিতে কার্যত সিলমোহর দিয়েছেন। জেসন পিএইচডি করেছেন দর্শনে। 


বিজ্ঞাপন


তিনি কল্পবিজ্ঞান নির্ভর গল্প লেখেন। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে ব্র্যান্ডেনবার্গ তত্ত্ব দিয়েছিলেন, তা যথেষ্ট ‘উদ্বেগজনক প্রমাণ’। 

জেসন বলেন, প্রত্যেক গ্রহে ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের নির্দিষ্ট আইসোটোপ (রাসায়নিক উপাদানের) রয়েছে। সৌরজগতের সর্বত্র মোটামুটি ভাবে জেনন ১২৯-এর সমমাত্রিক আইসোটোপ রয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম মঙ্গলগ্রহ। 

GOTI

আর এই প্রসঙ্গেই ব্র্যান্ডেনবার্গের গবেষণা তুলে ধরেন জেসন তিনি জানান, মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে উচ্চ ঘনত্বের জেনন ১২৯ রয়েছে। মাটিতে রয়েছে ইউরেনিয়াম এবং থোরিয়াম। জেনন ১২৯ একটি  স্থিতিশীল, তেজস্ক্রিয়হীন গ্যাস, যা জেনন মৌলের একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং স্বাদহীন রূপ। পৃথিবীর বায়ুণমণ্ডলেও এই গ্যাস স্বল্পমাত্রায় পাওয়া যায়। পরমাণু চুল্লি থেকে নির্গত হয় এই জেনন ১২৯। 

মঙ্গলগ্রহের সাইডোনিক অঞ্চলে নাসা অতিমাত্রায় জেনন ১২৬ আইসোটোপ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত সাইডোনিয়াতে মনুষ্যনির্মিত স্তম্ভের মতো দেখতে কিছু কাঠামো রয়েছে। সেগুলো আসলে পিরামিড, তাতে মানুষের মুখের মতে নকশা বোঝা যায় বলেও দাবি করেন কেউ কেউ। যদিও নাসার দাবি, ছায়া এবং মাটির আকার মিলে  দৃষ্টিবিভ্রম ঘটে, তাতেই কাঠামোর উপর মুখ আঁকা বলে ঠাহর হয়।

mARSS

মঙ্গলে অতিমাত্রায় জেনন ১২৬ পাওয়া নিয়ে নাসার দাবি, পাথুরে মাটি থেকে গ্যাস বায়ুমণ্ডলে গিয়ে মিশেছে। যদিও ব্র্যান্ডেনবার্গ দাবি করেন, পরমাণু বিস্ফোরণের জেরেই এমনটা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, ব্র্যান্ডেনবার্গের দাবি, পৃথিবীর মতোই একসময় মঙ্গলগ্রহে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ ছিল। পৃথিবীর মিশর সভ্যতার সঙ্গে মঙ্গলের সভ্যতার তুলনা টানেন তিনি। 

জেসনের দাবি, আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-এর একটি রিপোর্টে, মঙ্গলে একসময় সভ্যতা থাকার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। গ্রহটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠলে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। আজ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি বছর আগে মঙ্গলে সভ্যতা ছিল এবং সেই সময়ই পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন জেসন। সিআইএ এবং ব্র্যান্ডেনবার্গের রিপোর্ট পাশাপাশি রেখে মিলিয়ে দেখার কথাও বলেন তিনি। জেসন আরও জানান, ১৯৮৪  সালে দো ম্যাকমোনাগলসকে মঙ্গলে নজরদারির দায়িত্ব দেয় সিআইএ। 

আরও পড়ুন: মহাকাশে জেগে উঠল মৃতপ্রায় এক নক্ষত্র, জানুন কীভাবে দেখবেন

মনরো ইনস্টিটিউট থেকে গোটা বিষয়টি পরিচালিত হয়। ‘মারস এক্সপ্লোরেশন মে ২২, ১৯৮৪ নামের একটি ‘গোপন’ রিপোর্ট ২০১৭ সালে সামনে আসে। সম্প্রতি ফের সেটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও সিআইএ মঙ্গলে সভ্যতার অস্তিত্ব নিয়ে কখনওই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি।

তথ্যসূত্র: এবিপি

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর