কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও বেশি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে মানুষ বহু যুগ ধরে। সেই চেষ্টার ফলশ্রুতিতেই তৈরি হয়েছে ভয়েজ বা রিটেন কমান্ড নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে আনকোরা ছবি বা লেখা বানিয়ে ফেলার এআই টুলস।
অনেকেই ভয়ে ভোগেন ব্যাপারটা নিয়ে। আর্টিফিশিয়াম ইন্টেলিজেন্স বা এআই মানুষের কাজ ছিনিয়ে নেবে না তো? আবার অনেকে বেশ নিশ্চিন্ত মনে ভাবছেন, আরে ধুর! আর যাই হোক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনোই মানুষের সমান দক্ষতায় যেতে পারবে না। আর এভাবে ভাবার অন্যতম কারণ লুকিয়ে ছিলো এআই-এর কমান্ড দেওয়ার ত্রুটিতে।
বিজ্ঞাপন
মানুষ সাধারণত নির্দেশনা নিয়ে যেমন কোনো কাজ করতে পারে, তেমনি পরবর্তীতে প্রয়োজনমতো সেই নির্দেশনা অন্য মানুষকেও দিতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা নির্দেশনা নিয়ে কাজ করা পর্যন্তই। এর বাইরে তার নিজ থেকে নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আর এআই-এর এই ত্রুটিকে দূর করতেই এবার কাজ করছে ইউনিভার্সিটি অব জেনেভার একদল বিজ্ঞানী।
আরও পড়ুন- নিজের এআই ছবি তৈরি করবেন যেভাবে
মানুষ নির্দেশনা দিতে পারে যে স্নায়ুর জন্য, সেই মেকানিজমকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভেতরে স্থাপন করছে দলটি। আর্টিফিশিয়াল মডেল ব্রেইন তৈরি করেছে তারা, যেটাকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়ার ব্যাপারটাও শিখিয়ে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে আগে থেকেই ভাষার কমান্ড বুঝতে পারা ৩০০ মিলিয়ন নিউরন দিয়ে তৈরি এস-বার্ট নামের কৃত্রিম স্নায়ুর মডেলের উপরে কাজ করছে তারা।
বিজ্ঞাপন
'এই নিউরনের সাথেই আমরা আরও কয়েক হাজার নিউরনের সহজ একটি নেটওয়ার্ক জুড়ে দিয়েছি', কাজের ব্যাপারে জানাতে গিয়ে বলেন জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব বেসিক নিউরোসায়েন্সের পিএইচডি শিক্ষার্থী রেইডার রিভল্যান্ড।
আরও পড়ুন- এআই কীভাবে কাজ শেখে জানলে অবাক হবেন
পরীক্ষার প্রথম ধাপ হিসেবে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের যেই অংশ আমাদের তথ্য নিতে এবং ভাষা বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে সেই ওয়েরনিক'স এরিয়াকে বানান। দ্বিতীয় ধাপে কৃত্রিম মস্তিষ্ককে ব্রোকাস এরিয়া নির্মাণে পারদর্শী করা হয়, যেটা প্রথম ধাপের নির্দেশনা নিয়ে কাজ করে এবং শব্দ তৈরি করতে পারে। আর এই পুরো কাজটাই করা হয়েছে সাধারণ ল্যাপটপ কম্পিউটারে। আর সেখানের ইংরেজিতে লিখিত নির্দেশনাকে নেওয়া হয়েছে এআই-এ। সবশেষে মডেলের কাজ করার পারদর্শিতা যাচাই করে দেখেছে বিজ্ঞানীরা। যেখানে এআই শুধুমাত্র নির্দেশনা মেনে কাজ করতেই পারে না, একইসাথে পরবর্তীতে নির্দেশনা নিজস্বভাবে উৎপন্নও করতে পারে।
'দুটো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একে অন্যকে কাজের নির্দেশনা দিচ্ছে, তাও আবার সোজাসুজি ভাষার মাধ্যমে এমনটা এই প্রথম!' জানান প্রধান গবেষক আলেকজান্দ্রে পুগে।
তবে তাই বলে এখুনি কিছু বলে দেওয়া যাচ্ছে না। খুব ছোট্ট পরিসরে ব্যাপারটা হয়তো কাজ করেছে। কিন্তু গবেষণা যদি এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে একটা রোবট আরেকটা রোবটের সাথে কথা বলছে, তাহলে এই পদ্ধতি আদৌ কাজ করবে কিনা সেটা জানতে এখনো অনেকটা সময় বাকি।