বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর লড়াইয়ে নামার আগে লুইস এনরিকের দল ১০০০টি পেনাল্টি শটের অনুশীলন করেছিলেন। কিন্তু নকআউট পর্বে এসে বুনু নামক পর্বতের কাছে যেন নিস্তেজ হয়ে পড়ে স্পেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের রুখে দিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে মরক্কো। আফ্রিকার এই দেশটির হয়ে ইতিহাস গড়ার নায়ক গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু। পেনাল্টি শুটআউটে স্প্যানিশদের একটি গোলও করতে দেন নি ৩১ বছর বয়সী এ তারকা। সেই সুবাদে টাইব্রেকারে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে শেষ আটের টিকিট পায় আশরাফ হাকিমির দল। অথচ মরক্কোর ফুটবল ইতিহাসের স্বর্ণালি যুগের সূচনা করা বুনুর আফ্রিকার দেশটির হয়ে খেলারই কথা ছিল না। এই ফুটবলারের জীবনকাহিনী আপনাকে রোমাঞ্চিত করবে।
এই গোলরক্ষকের সামনে কানাডার হয়ে খেলার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি মরক্কোকে বেছে নেন। ২০১৩ সাল থেকে আফ্রিকার দেশটির হয়ে খেলা শুরু করেন তিনি।
সব কিছুকে ছাপিয়ে ২১ বছর বয়সে বদলে যায় তার ভাগ্য। স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের দ্বিতীয় সারির দলে সুযোগ পান তিনি। সেখান থেকে ২০১৪ সালে লোনে জারাগোজার দ্বিতীয় সারির দলে দুই মৌসুম খেলেন। এরপর স্প্যানিশ ক্লাব জিরোনায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে নিজ দলকে লা লিগায় উন্নীত করেন। তারপর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি এই মরক্কোর তারকাকে।
সেভিয়ার হয়ে ২০২০ সালে উয়েফা ইউরোপ শিরোপা জিতেন তিনি। তারপর স্প্যানিশ এই ক্লাবের সঙ্গে আরো ৪ বছরের চুক্তি করেন বুনু। এবারের বিশ্বকাপে স্পেনকে রুখে দিয়েই তিনি সবার নজরে আসেন নি। গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামের ম্যাচে মরক্কোর হয়ে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েও শুরুর একাদশে ছিলেন না ৩১ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। তখন অনেক আলোচনার জন্ম দিলেও শেষে জানা যায় কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি আর মাঠে নামেন নি।
বিজ্ঞাপন
— Maysoon (@maysoonzayid) December 6, 2022
মরক্কোর ফুটবল ইতিহাসে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ অর্জন এখন পর্যন্ত স্পেনকে রুখে দিয়ে শেষ আটে উঠা। এর পেছনের কারিগর কেবলই ইয়াসিন বুনু। কিন্তু এক সময় তার আফ্রিকার দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিনিধিত্ব করার আগে ইউরোপের দেশ কানাডার হয়ে খেলার সুযোগ ছিল। বুনু সেই সুযোগ না নিয়ে মরক্কোর লাল জার্সিতেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে হাঁটেন, এবং সেই পথে তিনি আজ আফ্রিকার দেশটির ফুটবল কিংবদন্তিদের তালিকায়।
এমএএম