বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র তিনি, আবার সমালোচিতও। সম্প্রতি আবারও বিতর্কের শীর্ষে সাকিব আল হাসান, অনলাইন জুয়া প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের অঙ্গ সংগঠন বেটউইনার নিউজের সঙ্গে তার চুক্তিতে বিব্রত বিসিবি। চুক্তি বাতিল করলেও তার এমন কাণ্ড মেনে নিতে পারছেন না অনেক ক্রীড়াভক্তই। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন মনে করেন সময় এসেছে দেশের স্বার্থে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার।
ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, 'বিসিবির উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। সাকিবের তো আরও আগে বিভিন্ন ধরণের শাস্তি হওয়ার কথা। তাও বৃহত্তর স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে মানবিকভাবে তার বিষয়গুলো দেখা হয়েছে। সে কিন্তু উচ্চ প্রতিষ্ঠিত তবে তার কাছে দেশ আগে না তার স্বার্থটা আগে। নিশ্চিতভাবে যখন প্রমাণিত হয়ে যায় এমন একটা মানুষ তার ব্যাপারে তো দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।'
বিজ্ঞাপন
সাকিব জেনে বুঝে এমনটা করেছেন বলেই মনে করেন সুমন, 'সাংবিধানিকভাবে আমাদের এখানে জুয়া অবৈধ। এইসব বেটিংয়ের কারণে আমাদের ফুটবল শেষ, ক্রিকেটও ধ্বংসের পথে। গত বছর একটা তথ্য গোপন করার কারণে তার সাজা হয়েছিল। তার মানে সে সাজাপ্রাপ্ত। সাজাপ্রাপ্ত মানুষ যখন পুনরায় অপরাধ করে তার মানে সে ডাবল ডেসপারেট এবং সে এটা জেনে বুঝে করেছে।'

এইতো ক'দিন আগেই বেটউইনারের নামটাও জানত না বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ। তবে সাকিবের কারণে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে বাড়তি পরিচিতি পেয়ে গেছে এই জুয়া সংস্থা ও তাদের নিউজ সাইট। ফলে চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ না করলেও প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য সফল।
সেদিকেও ইঙ্গিত করেন ব্যারিস্টার সুমন, 'সে যে এখন বাতিল করেছে, তার উদ্দেশ্য কিন্তু সফল। সে কিন্তু ওই কোম্পানির পুরা বিজ্ঞাপনটা করে ফেলেছে। কোম্পানিও কিন্তু খুশি।'
বিজ্ঞাপন
সাকিব কাণ্ডের পর আলোচনায় এসেছে সাধারণ মানুষের জুয়া খেলা। অনেকদিন ধরেই পিপি পোকার, ওয়ানএক্স বেটসহ অসংখ্য অনলাইন মাধ্যমে নির্বিঘ্নে জুয়া খেলে আসছে বাংলাদেশিরা। এতে আসক্ত হয়ে পড়ছেন অনেক তরুণ, বাদ নেই চাকরিজীবীরাও।
সাকিবের এই চুক্তি ভুল পথে যেতে তাদের উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন সুমন, 'সাধারণ মানুষ যখন জুয়া খেলে সেটার দায় নিতে হবে আইন শৃংখলা বাহিনীকে। তবে কোন আইডল যখন জুয়াকে প্রমোট করে বিসিবিকেও দায় নিতে হবে। সাধারণ মানুষ যখন জুয়া খেলে তার ফলোয়ার কিন্তু ১৫ মিলিয়ন না। ১৫ মিলিয়ন ফলোয়ারের একটা লোক যখন জুয়াকে প্রমোট করে এর মানে সে বাংলাদেশের তরুণদের বোঝাতে চাচ্ছে জুয়া খেলো, জুয়া খেললে দেশ আগাবে।'
বারবার বিতর্কিত কাণ্ডে লিপ্ত হওয়া সাকিবের দেশের জার্সি গায়ে দেবার অধিকার নেই বলেও মন্তব্য করেন সুমন, 'দুষ্টু গরু থাকার চেয়ে শূণ্য গোয়াল ভালো। জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটার মানে শুধু যে সে খেলবে তা না। খেলা ছাড়াও তার আচার আচরণ সবকিছু একটা দেশপ্রেমিকের মতো হতে হবে। নয়ত দেশের জার্সি গায়ে দেওয়ার অধিকার এদের নাই।'
এআইএ

