বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

মার্টিনেজের চেয়ে এগিয়ে ফরাসি গোলরক্ষক 

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

মার্টিনেজের চেয়ে এগিয়ে ফরাসি গোলরক্ষক 

সময়ের স্রোতে ভাসতে ভাসতে আরব্য রজনীর কাতার বিশ্বকাপ এসে দাঁড়িয়েছে ফাইনালের মঞ্চে। ৩২টি দল নিয়ে শুরু হওয়া ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ থেকে একে একে ছিটকে পড়েছে ৩০টি দল। আজ রাত ৯টায় লুসাইলে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত ৩৬ সেন্টিমিটার উচ্চতার সোনালি ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরার স্বপ্ন চোখে নিয়ে টিকে আছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ও কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্স। অপরদিকে দুটি দলেরই ফাইনালে ওঠার পেছনে তাদের গোলরক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। তাই বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচে সবার চোখে স্পটলাইটে স্কালোনি ও দেশমের দুই গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ এবং হুগো লরিস। 

এছাড়া চলতি আসরে আলবিসেলেস্তাদের গোলকিপার মার্টিনেজ আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তবে ১৪ বছরের অভিজ্ঞতার জোড়ে ফরাসি গোলরক্ষক লরিস তার থেকেও অনেক এগিয়ে আছেন। তাই আজ ফাইনালের মঞ্চে জাদুকরী পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সোনালী ট্রফি নিজের ঘরে উঠাতে চাইবেন ফরাসি গোলরক্ষক।  


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: যে কারণে মেসিই জিতবেন ‘গোল্ডেন বল’

অপরদিকে ফুটবলের প্রতিটি খেলায় সবচেয়ে বড় দায়িত্বটাই থাকে গোলরক্ষকের উপর। তাদের একটা ভুল ভেস্তে দিতে পারে দলের সকল পরিকল্পনা, সব স্বপ্ন। মূহূর্তের মধ্যেই বদলে যেতে পারে যে কোনো ম্যাচের পরিস্থিতি। কারন গোলপোস্ট আগলে রাখার গুরুদায়িত্বটাই তাদের কাঁধে। তাদের গ্লাভস জোড়ায় আস্থা রাখে গোটা দল। তাইতো কখনও তারা বনে যান প্লটের হিরো, কখনও বা ভিলেন। প্রতিপক্ষের খেলোয়ারের করা প্রতিটি আক্রমণের সামনেই বুক চিতিয়ে লড়াই করতে হয় তাদের। আর সেই লড়াই যদি হয় বিশ্বকাপের ফাইনালের ময়দানে, তাহলে তা হয়ে ওঠে নিজ দেশের মর্যাদার লড়াইও। আজকের ফাইনালেও তাই আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় থাকবেন এই দুজন- এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ও হুগো লরিস।  

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (আর্জেন্টিনা) 

২০২১ সালের কোপা আমেরিকাতে আলবিসেলেস্তেদের পথ-প্রদীপ হয়ে আবিভার্ব ঘটে এমির। ‘একটাও আন্তর্জাতিক ট্রফি নেই’ মেসির সেই আক্ষেপ মিটিয়েছেন তিনি। কোপা আমেরিকাতে কলম্বিয়ার বিপক্ষে যেভাবে টাইব্রেকারে পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন, তখনই সকল আর্জেন্টাইন ভক্তদের মন জয় করে নিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। এরপর ফাইনালেও ব্রাজিলের আক্রমণভাগের একের পর এক শট ফিরিয়ে আর্জেন্টাইন দুর্গ অক্ষত রেখেছেন তিনি। নীল-সাদা জার্সিতে অভিষেকের পর যেন স্বর্গ থেকে দূত হয়ে এসে দাঁড়ালেন আলবিসেলেস্তাদের গোলপোস্টে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ জিতবে আর্জেন্টিনা: সাবেক ব্রাজিলিয়ান তারকা

কোপায় গোল্ডেন গ্লাভস জেতা অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষক কাতারেও গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছেন। পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কির শট ঠেকিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে নিজের দলকে নক আউট পর্বে টেনে আনেন তিনি। এরপর শেষ আটের লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে বাজপাখির মতো দুটি শট ঠেকিয়ে দলকে নিয়ে যান সেমিতে। এছাড়া সেমিতে ক্রোয়েটদের বিপক্ষেও ক্লিনশিট রাখেন তিনি। পুরো আসরে আলবিসেলেস্তেদের প্রতিটি জয়ে অগ্রণী ভূমিকায় এই গোলরক্ষক। 

হুগো লরিস (ফ্রান্স)
 
২০১৮ সালে রাশিয়াতে অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। কাতার বিশ্বকাপেও তারকাসমৃদ্ধ ফ্রান্স দলে চুপিসারেই নিজের কাজ করে যাচ্ছেন হুগো লরিস। কাতার বিশ্বকাপ চলাকালেই কিংবদন্তি লিলিয়ান থুরামকে টপকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার অনন্য রেকর্ড নিজের দখলে নিয়েছেন লরিস। কিলিয়ান এমবাপ্পে, অলিভিয়ের জিরুদ, আন্তোয়ান গ্রিজম্যানদের কল্যাণে অবশ্য এখনও খুব বড় কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে। কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলে পাঁচটি গোল হজম করেছে তার দল। তবে সেমিফাইনালের গোলরক্ষকদের মধ্যেও একমাত্র তার নামের পাশেই কোনো ক্লিনশিট নেই। 

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের বিপক্ষে অতীত পরিসংখ্যানে এগিয়ে আর্জেন্টিনা 

কিন্তু অভিজ্ঞতার জোড়ে তিনি অনেক এগিয়ে। তবে আজ যদি ফরাসিরা আবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, তাহলে বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টানা দুবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরার বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হবেন তিনি। অন্যদিকে আজকের ম্যাচে খেলতে নামলেই আরেকটি রেকর্ড নিজের করে নিবেন তিনি। বিশ্বকাপের মঞ্চে গোলরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ২০ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়বেন তিনি। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে মোট ১৯টি খেলায় অংশগ্রহণের এই রেকর্ডে লরিসের সাথে যৌথভাবে স্থান দখল করে আছেন জার্মান অধিনায়ক ও গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যয়ার।  
 
এসসিএন/এসটি 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর