সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আঁতুড়ঘর: মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আঁতুড়ঘর: মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড

রোববার প্রথম রাউন্ডের খেলা দিয়ে শুরু হচ্ছে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। বাছাইপর্ব শেষে মাঠে গড়াবে ‘সুপার টুয়েলভ’ তথা মূল পর্বের খেলা। এই আয়োজনে কোথাও ঘাটতি রাখছে না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। চার-ছক্কার মহারণ দেখতে দেশটিতে ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে লাখো ক্রিকেটপ্রেমী। তাদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত সাত ভেন্যুর শহরগুলো। অস্ট্রেলিয়ার সাতটি মাঠের মধ্যে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড হচ্ছে সব থেকে জনপ্রিয় ও বড় ম্যাচ ভেন্যুর একটি।   

এবারের বিশ্বকাপে মোট ১৬টি দল অংশগ্রহণ করবে। নয়নাভিরাম ও অপার সৌন্দর্যমন্ডিত অস্ট্রেলিয়ার মাঠের উইকেটের আচরণ হবে ভিন্ন। চিরাচরিত পেসারদের স্বর্গভূমি আর টেকনিক্যাল দক্ষতাসম্পন্ন ব্যাটারদের সহায়ক হবে অজিদের পিচগুলো।  


বিজ্ঞাপন


প্রায় মাসখানেকের জন্য যে ভেন্যুগুলোতে ক্রিকেটাররা ব্যাটে-বলে মুনশিয়ানা দেখাবে তার মধ্যে অন্যতম মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। জেনে নেয়া যাক অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনাগুলোর সাক্ষী মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (এমসিজি) এর আদ্যোপান্ত।

১৮৫৩ সালে মেলবোর্নে লক্ষাধিক দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করে বিশ্বকে অবাক করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। যা আজ পর্যন্ত ক্রিকেট বিশ্বে তৈরি হওয়া সবচেয়ে বেশি দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের আঁতুড়ঘরও বলা হয় মেলবোর্নকে। যেখানে আধুনিক ক্রিকেটের শোভা বর্ধিত হয়। 

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৮৫৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচের অনুষ্ঠিত হয়। তার ঠিক দুই বছর পরেই ১৮৫৬ সালের মার্চ মাসে ভিক্টোরিয়া এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্যে প্রথম ইন্টার কলোনিয়াল ম্যাচ হয় এই স্টেডিয়ামে।

ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটির আয়োজক ছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। ১৮৭৭ সালে হওয়া টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল অজিরা। অনেক প্রথমের সাক্ষী হওয়া সেই ম্যাচে ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট সেঞ্চুরি করে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন অজি ওপেনার চার্লস ব্যানারম্যান। সেই ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে অজি বোলার বিলি মিডউইন্টার জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। 
১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে ক্রিকেটেরও জন্মস্থান মেলবোর্ন। ৪০ ওভারের সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। সেবারও বিজয়ী হয় স্বাগতিক অজিরা।


বিজ্ঞাপন


দর্শক আগ্রহের শীর্ষে থাকা প্রায় সব ম্যাচই এই ভেন্যুতে আয়োজন করা হয়। কারণ এতো দর্শক ধারণ ক্ষমতার মাঠ অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয়টি নেই। ১৯৫৬ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে লর্ডসের পর এটিই একমাত্র স্টেডিয়াম যেটিতে একাধিকবার  ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৯৯১ সালে স্টেডিয়ামটি নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়। ২০০৬ সালে কমনওয়েলথ গেমসসহ বিভিন্ন বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এবং কনসার্টের আয়োজন করা হয় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।

এই মাঠে বেশকিছু ফুটবল ম্যাচও গড়িয়েছে। ২০১৭ সালে লাতিন আমেরিকার দুই ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এখানে। যেখানে একসঙ্গে ম্যাচ উপভোগ করেছে প্রায় লক্ষাধিক ফুটবলপ্রেমী। ম্যাচটিতে ১-০ গোলে জয় পায় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

এবারের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের ভেন্যু হবে মেলবোর্ন। ঐতিহাসিক এই মাঠে হবে আসরের ৭টি ম্যাচ। ২৩ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে এর বিশ্বকাপযাত্রা। এমসিজিতে এবার মুসলিম, খ্রিস্টান, হিন্দুসহ সকল ধর্মের মানুষদের প্রার্থনার জন্য কক্ষের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

কেমন হতে পারে উইকেটের আচরণঃ

মেলবোর্নের উইকেট মূলত ব্যাটিংবান্ধব উইকেট। পেসাররা বাউন্স পাবে। স্পিনাররা ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে সুবিধা পাবে। তবে আকর্ষনীয় বিষয় হল- অতীতের অনেক ম্যাচেই এ পিচে পেসাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ব্যাটারদের বড় স্কোর করতে দেয়নি।
তবে এ উইকেটে প্রথমে ব্যাট করাকেই শ্রেয় মনে করবে যে কোনো দল। মাঠটিতে প্রায় ১৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে প্রথম ব্যাটিং করা দল জয় পায় ৭ বার।

এফএইচ/এমএএম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর