বার্নাব্যুর শনিবারের রাতটা কিলিয়ান এমবাপের জন্য হয়ে থাকল স্মরণীয়। মাঠে যেমন, তেমনি ইতিহাসের পাতাতেও। সেভিয়ার বিপক্ষে ২–০ গোলের জয়ে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে গোল করে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে এক বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ গোলের ক্লাব রেকর্ডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পাশে বসে গেলেন ফরাসি তারকা। নিজের ২৭তম জন্মদিনে এমন অর্জন যে আলাদা আবেগই এনে দেয় তা লুকাননি এমবাপে।
ম্যাচজুড়ে একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছিলেন তিনি। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নাটক জমে উঠল। নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়ে আর ভুল করেননি এমবাপে। গোলটি ছিল ২০২৫ সালে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার ৫৯তম। রোনালদো এমন কীর্তি গড়েছিলেন ২০১৩ সালে, এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ গোল করেছিলেন পর্তুগীজ মহাতারকা।
বিজ্ঞাপন
ম্যাচ শেষে রিয়াল টিভিকে এমবাপে বলেন, “প্রথম মৌসুমেই রোনালদোর সমান কিছু করতে পারা অবিশ্বাস্য। তিনি আমার আইডল, রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। এমন একজনের পাশে নিজের নাম দেখা আমার জন্য গর্বের।”

এর আগে ম্যাচে রিয়ালকে এগিয়ে দেন জুড বেলিংহ্যাম। প্রথমার্ধের শেষ দিকে রদ্রিগোর ফ্রি-কিক থেকে দারুণ হেডে গোল করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনে নেমে যায় সেভিয়া, মারকাও দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে কাজটা সহজ হওয়ার কথা ছিল রিয়ালের জন্য। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
একাধিকবার থিবো কোর্তোয়ার অসাধারণ সেভ না পেলে ম্যাচের চিত্র অন্যরকমও হতে পারত। আইজ্যাক রোমেরো ও আলেক্সিস সানচেজ রিয়াল রক্ষণকে বেশ ভুগিয়েছেন। অন্য প্রান্তে এমবাপে কখনো গোলকিপারের গায়ে মেরেছেন, কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছেন। এক কর্নার থেকে তার হেডার লেগেছে ক্রসবারে।
বিজ্ঞাপন
মারকাওয়ের লাল কার্ডের পর রদ্রিগোর টার্ন করে নেওয়া শটও বার ছুঁয়ে ফেরে। রিয়াল তখনো স্বস্তিতে ছিল না। শেষ পর্যন্ত হুয়ানলু সানচেজের ফাউলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। স্পট থেকে গোল করে রোনালদোর বিখ্যাত উদযাপন করেন এমবাপে। সে উদযাপনের ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি, “ছোট্ট একটা সম্মান জানাতে চেয়েছি। ছোটবেলা থেকেই সে আমার আদর্শ। এখন সে আমার বন্ধু, এটাই সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার।”
দুই মিনিট পর আবার পেনাল্টির আশা জেগেছিল এমবাপের, কিন্তু ভিএআরের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদলে যায়। ফলে রেকর্ড ভাঙার সুযোগ আর আসেনি, এই মুহূর্তে রোনালদোর সঙ্গে ভাগাভাগিতেই থাকতে হলো তাকে।
এই জয়ে লা লিগায় রিয়ালের পয়েন্ট ৪২। শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার থেকে তারা এক পয়েন্ট পিছিয়ে, যদিও কাতালানরা এখনও ম্যাচ খেলেনি। সেভিয়া রয়ে গেছে নবম স্থানে। আর রিয়াল? বছরটা শেষ করল টানা তিন জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেখানে আলোটা সবচেয়ে বেশি পড়ল জন্মদিনের নায়ক এমবাপের ওপরই।

