ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া পর্তুগাল নাকি বেশি ভালো খেলে- এই বিতর্ক নতুন নয়। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আলোচনাটি আবার জোরালো হলে, এবার স্পষ্ট অবস্থান নিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। পর্তুগাল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার সরাসরি এই ধারণা নাকচ করে দিয়েছেন যে রোনালদো না থাকলেই দল বেশি কার্যকর হয়। তাঁর মতে, জাতীয় দলে এমন কিছু গুণ রোনালদো এখনও এনে দেন, যা অন্য কারও পক্ষে সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়।
রোনালদো নিষেধাজ্ঞার কারণে না থাকায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে আর্মেনিয়াকে ৯–১ গোলে উড়িয়ে দেয় পর্তুগাল। তার আগে আয়ারল্যান্ডের কাছে হতাশাজনক হারের পর এই বড় জয় নতুন করে বিতর্ক উসকে দেয়। তবে ক্যানাল ১১-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রুনো বলেন, রোনালদো খেলছেন কি খেলছেন না- এটুকু দিয়েই পর্তুগালের পারফরম্যান্স বিচার করা বিষয়টিকে অতিরিক্ত সরল করে দেখা। তাঁর মতে, কৌশলগত বাস্তবতা অনেক বেশি জটিল এবং প্রতিটি খেলোয়াড় দলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শক্তি নিয়ে আসে।
বিজ্ঞাপন
ব্রুনো বলেন, “বক্সের ভেতরে ক্রিস্তিয়ানো এখনও খুবই উচ্চমানের একজন খেলোয়াড়। আমি জানি মানুষ কী ভাবছে- অনেকে বলে, রোনালদো না থাকলে আমরা নাকি বেশি স্বাধীনভাবে খেলি, খেলায় বেশি ফ্লুইডিটি আসে। কিন্তু যদি সত্যিই এমনটা হয়, তাহলে সেটা আংশিকভাবে আমাদেরই দায়। রোনালদো মাঠে আছে কি না, সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত নয়, কারণ সে আমাদের এমন কিছু দিতে পারে, যা খুব কম খেলোয়াড়ই পারে।”
৪০ বছর বয়সী রোনালদো পুরুষ আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা। ২০০৩ সালে অভিষেকের পর ২২৬ ম্যাচে তাঁর গোল ১৪৩টি। তবে ২০২২ বিশ্বকাপে তৎকালীন কোচ ফের্নান্দো সান্তোস তাঁকে বেঞ্চে বসালে এক সময় তাঁর আন্তর্জাতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে আল নাসরে দুর্দান্ত গোলের ধারাবাহিকতায় নতুন কোচ রবার্তো মার্তিনেসের অধীনে আবার জাতীয় দলে নিয়মিত হয়ে ওঠেন তিনি।
দলগত সমন্বয়ের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্রুনো বলেন, “আমি না খেললে আর বার্নার্দো (সিলভা) নাম্বার টেনে খেললে দল বেশি পজেশন পায়, আমি খেললে হয়তো শেষ পাসে বেশি অবদান রাখি। এভাবেই সব খেলোয়াড়ের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে- কেউ কিছু যোগ করে, আবার কিছু কমে যায়। ক্রিস্তিয়ানোও আমাদের মতোই। জাতীয় দলের লাভের জন্য আমাদের জানতে হবে, কীভাবে একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগানো যায়।”
এই সময়ের মধ্যে পর্তুগাল দারুণ সাফল্যও পেয়েছে। ইউরো ২০২৪ চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়ে জিতেছে উয়েফা নেশন্স লিগ। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চার জয় ও এক হারে গ্রুপসেরা হয়ে তারা নিশ্চিত করেছে মূল পর্বের টিকিট। পাঁচ ম্যাচে ২০ গোল করা পর্তুগাল হজম করেছে সাতটি। এই পর্বে পাঁচ গোল করে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন রোনালদোই।

