শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের আগে বিপাকে অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা 

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের আগে বিপাকে অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা 

ঘরের মাঠে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ২-০ লিড নিয়ে বেশ নির্ভার অজিরা। ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও দল নির্বাচন নিয়ে মধুর সমস্যায়ই পড়েছেন নির্বাচকরা। ওপেনিংয়ে ট্রাভিস হেডই চালিয়ে যাবেন নাকি উসমান খাজা নিজের জায়গা ফিরে পাবেন, তা নিয়েই যেন এক মধুর সমস্যা। 

অ্যাশেজের শুরু থেকে খাজারই ওপেনিংয়ে খেলার কথা ছিল। কিন্তু পার্থে প্রথম টেস্টে পিঠের চোটে পড়েন তিনি। এ কারণে প্রথম ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আসে। জ্যাক ওয়েদেরাল্ডের সঙ্গে খেলেন মার্নাস লাবুশেন। যদিও সফলতা আসেনি, উদ্বোধনী জুটিতে যোগ হয় কেবল ১ রান। সে ম্যাচে চারে ব্যাট করা খাজা আউট হন ৬ বলে ২ রান করে। 


বিজ্ঞাপন


একই ম্যাচ্র দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে ফের পরিবর্তন আনা হয়। লাবুশেনের বদলে ওয়েদেরাল্ডের সঙ্গী হন হেড। তাতেই বাজিমাত। অজি এই ব্যাটার ৮৩ বলে ১২৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে। দুই দিনেই ম্যাচ জিতে স্বাগতিকরা। 

ব্রিসবেনে দলের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে খাজা সুস্থ না হওয়ায় এবং হেড ওপেনিংয়ে দুর্দান্ত খেলায় তাকেই নামানো হয় ওয়েদেরাল্ডের সঙ্গে। প্রথম ইনিংসে এ জুটি ৭৭ রান তোলেন যা দলকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। এদিকে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ মাঠে গড়াবে আগামী ১৭ ডিসেম্বর। 

এর আগে প্রশ্ন ওঠেছে ওপেনিংয়ে কি ফের পরিবর্তন আসছে? উদ্বোধনী জুটিতে ওয়েদেরাল্ড থাকছেন এ কথা বলাই যায়। ব্রিসবেনে প্রথম ইনিংসে তিনি খেলেন ৭২ রানের ইনিংস। তাই তার সঙ্গী খাজা হবেন নাকি হেড তা নিয়েই প্রশ্ন। 

খাজা অবশ্য সিদ্ধান্তটা নির্বাচকদের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহেই ৩৯ বছরে পা দিবেন এই ওপেনার। ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে এসে আর এসব নিয়ে চাপ নিতে চান না তিনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “খেলার ইচ্ছা তো অবশ্যই আছে। তবে শেষ সিদ্ধান্তটা আমার হাতে নেই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা বিষয় শিখেছি- কোন জিনিস আমার নিয়ন্ত্রণে, আর কোনটা নয়। আমি শারীরিকভাবে নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত মনে করছি। বাকিটা কী হবে, সেটা দেখা যাক।”


বিজ্ঞাপন


নিজের ফিটনেস নিয়ে কোনো সন্দেহ রাখেননি তিনি। “আমি এখন শতভাগ ফিট অনুভব করছি। পার্থ টেস্টের আগেও নিজেকে এমনটাই মনে হয়েছিল। তবে এসব কখনো কখনো নিয়তির ওপর ছেড়ে দিতে হয়। নিজের দিক থেকে যা করার, সবই করেছি,” যোগ করেন তিনি।

চোট কাটিয়ে উঠতে বাড়তি পরিশ্রম করতে হয়েছে বলেও জানান এই ক্রিকেটার। “চোট পেলে উল্টো আরও বেশি খাটতে হয়- এটাই সবচেয়ে বিরক্তিকর। গত সপ্তাহজুড়ে আমি শুধু রিহ্যাব আর ট্রেনিং করেছি।”

ওয়ার্কলোড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভালোই চাপ গেছে শরীরে, তবে সেটাই আমি চেয়েছিলাম। যতটা সম্ভব নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করেছি। এখন আবার পুরো গতিতে দৌড়াতে পারছি। সব মিলিয়ে শরীর এখন বেশ ভালো সাড়া দিচ্ছে।” 

নিজের ব্যাটিং সক্ষমতা নিয়েও আত্মবিশ্বাসী খাজা। তার মতে, প্রয়োজন বুঝে খেলার গতি বদলানোর ক্ষমতা তার আছে, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিক থাকা। খাজা বলেন, “যখন দরকার হয়, তখন আমার গিয়ার বদলানোর সামর্থ্য আছে। কিন্তু এক–দুটি ম্যাচ নয়, দীর্ঘ সময় ধরে একই মান ধরে রাখাই আসল চ্যালেঞ্জ। শুরু থেকেই আমি সেটা মাথায় রেখেছি।”

তিনি জানান, পরিস্থিতি অনুযায়ী আক্রমণাত্মক খেলা বা ধীরগতিতে এগোনো- দুটোর জন্যই তিনি প্রস্তুত থাকেন। “আমি চাইলে বেশি শট খেলতে পারি, দ্রুত রানও তুলছি। তবে সবকিছু নির্ভর করে ম্যাচের অবস্থা, উইকেটের চরিত্র আর দলের চাহিদার ওপর। আমি আসলে সামনে যা থাকে, সেটার সঙ্গেই খেলি,” বলেন তিনি।

মিডল অর্ডারে ফেরার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অস্ট্রেলিয়ার এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ২০২২ সালে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার সময় চার ও পাঁচ নম্বরে ব্যাট করেছিলেন তিনি। “চার কিংবা পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে আমি বরাবরই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি,” বলেন খাজা। “সাধারণত ওপেনাররা পাঁচ নম্বরে ততটা মানিয়ে নিতে পারে না, বিশেষ করে স্পিন খেলতে গিয়ে। কিন্তু আমি প্রমাণ করেছি অস্ট্রেলিয়ায় স্পিনের বিপক্ষে আমি অন্যতম সেরা ব্যাটার।”

এই কারণে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে তার কোনো দ্বিধা নেই বলেই স্পষ্ট করেন খাজা। “আমার জন্য এটা কখনো সমস্যা ছিল না। আমি যে কোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারি,” আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে যোগ করেন তিনি। 

অ্যাডিলেডে জিতলেই ঘরের মাঠে অ্যাশেজে জয় নিশ্চিত হবে অস্ট্রেলিয়ার। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই যখন সিরিজ জয়ের সুযোগ তখন অজি নির্বাচকরা কি প্লেয়িং ইলেভেনে ফের পরিবর্তন আনবেন? 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর