সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ভারতের বড় হারের পর গম্ভীরের সমালোচনায় মুখর সাবেক ক্রিকেটাররা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

ভারতের বড় হারের পর গম্ভীরের সমালোচনায় মুখর সাবেক ক্রিকেটাররা

দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের হারটা হয়েছে ভীষণ বড় ব্যবধানে। বৃহস্পতিবার মুল্লানপুরে সিরিজের সেই ম্যাচে ভারত পিছিয়ে পড়ে ৫১ রানে। ব্যাটিং হোক বা বোলিং—কোনো দিকেই প্রত্যাশামতো পারফরম্যান্স আসেনি। কয়েকজন খেলোয়াড় তো এমন ভুল করেছেন, যাকে সহজেই ভয়ানক বলে বর্ণনা করা যায়। তবে শুধু ক্রিকেটারদেরই দায় নয়; গৌতম গম্ভীরও কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে তিনি প্রায় প্রতিটি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার বদলে দেওয়ায় সাবেকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে।

এই ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদবকে ভিন্ন পজিশনে নামিয়েছিলেন গম্ভীর। বিষয়টি সাবেক ক্রিকেটারদের বিস্মিত করেছে। সুর্যকুমার নামেন অক্ষর প্যাটেলের পরে, আর ক্রিজে গিয়ে মাত্র ৪ বলে ৫ রান করে ফিরে আসেন।


বিজ্ঞাপন


সাবেক ভারতীয় ব্যাটার রবিন উথাপ্পা, যিনি ভারত দলে এবং কেকেআর- দুই দলেই গম্ভীরের সঙ্গে খেলেছেন, স্মরণ করিয়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের পর গম্ভীরের করা মন্তব্য। তাঁর মতে, গম্ভীরের নিজস্ব কথার সঙ্গেই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা তৈরি হচ্ছে।

উথাপ্পা বলেন, “সত্যি বলতে, গম্ভীর যা বলেছিলেন, সেটা মাথায় রাখলেই প্রশ্ন জাগে। সিরিজ শুরুর আগে তিনি বলেছিলেন—ওপেনিং জুটি ঠিক আছে, কিন্তু বাকিদের পজিশন নড়াচড়া করবে। ব্যক্তিগতভাবে এতে আমি রাজি নই। বড় রান তাড়া করতে হলে আপনার সেরা ব্যাটারদেরই সামনে পাঠাতে হবে। যদি ‘পিঞ্চ-হিটার’ পাঠান, তাহলে তাকে সে ভূমিকা পালন করতেই হবে। আজ অক্ষরকে যদি সেই দায়িত্বে পাঠানো হয়ে থাকে, তাহলে ২১ বলে ২১ রান নয়, ঝুঁকি নিয়ে মারতে গিয়ে আউট হলে মানা যেত। কিন্তু পুরো পরিকল্পনাই যেন অসংগত মনে হচ্ছে। শুরুতেই বড় ব্যাটার আউট হলে দলে স্থিরতা জরুরি। ভারতের এখনই এটি ঠিক করা দরকার, না হলে এটি খারাপ অভ্যাসে পরিণত হবে।”

বিশ্লেষণে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ডেল স্টেইন। তিনিও গম্ভীরের সিদ্ধান্তকে ‘বড় ভুল’ বলতে দ্বিধা করেননি।

স্টেইনের ভাষায়, “যাকে আপনি দলের সেরা ব্যাটার বলে মানেন, তাকে পরে নামানো পরীক্ষানিরীক্ষা নয়- এটা সরাসরি ভুল সিদ্ধান্ত। অক্ষর ব্যাট করতে পারে, ঠিক আছে। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে তাকে পাঠানোটা যেন নিছক ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেওয়া। যদি শুরু থেকেই স্লগ করতে পাঠানো হতো, তাহলে আলাদা কথা। আবার যদি বাঁ-হাত–ডান-হাত কম্বিনেশন বজায় রাখার ইচ্ছা থাকত, তাহলেও ব্যাখ্যা পাওয়া যেত। কিন্তু যিনি আউট হলেন তিনি ডানহাতি, ফলে ওপরে দুজন বাঁহাতিকে রাখা আরও অদ্ভুত। হয়তো দল কিছু পরীক্ষা করতে চাইছে, যেমন দক্ষিণ আফ্রিকাও করছে। কিন্তু আজকের ম্যাচে, যেখানে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল, সেখানে সেরা ব্যাটারদের ওপরেই ভরসা রাখা উচিত ছিল।”


বিজ্ঞাপন


শেষদিকে উথাপ্পা জোর দিয়ে বলেন, ভারতের শীর্ষ তিন ব্যাটারের জায়গা স্থির করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন।

তিনি আরও বলেন, “যে–ই ম্যাচ হোক, প্রথম তিন ব্যাটারের অবস্থান ঠিক থাকতেই হবে। এ জায়গাগুলো বিশেষ দক্ষতার দাবি করে। নমনীয়তা দরকার, কিন্তু সেটা পাওয়ারপ্লে পার হওয়ার পর। খেলোয়াড়রা প্রতিদিন নিজ নিজ ভূমিকা না জানলে ভরসা তৈরি হয় না। পিঞ্চ-হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে, কিন্তু সেটা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে—যেমন আবিষেক দ্রুত আউট হলে, আর তখনও সেরা ব্যাটারকে ওপরেই পাঠানো উচিত। সুর্যকুমার যদি এক নম্বর ড্রপে নামতেন, তাহলে প্রায় ৬০ বল হাতে পেতেন; অথচ তাকে নামানো হলো চার নম্বরে। এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকলে বড় টুর্নামেন্টে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বিশ্বকাপের মঞ্চে গিয়ে এমন সমস্যা দেখতে কেউই চাইবে না।”

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর