বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে যেন নতুন করে বিরোধের আগুন জ্বলে উঠেছে। ক্যাটাগরি–২ কোটায় প্রার্থী হয়েও পরে সরে দাঁড়ানো কিছু সংগঠক নির্বাচিত পরিচালনা পরিষদকে ‘অবৈধ’ দাবি করে এবার সিসিডিএমের অধীন সব লিগ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের ব্যানারে ৪৩টি ক্লাব একত্র হয়ে এ অবস্থান নিয়েছে।
সাধারণত নতুন মৌসুমের শুরু হয় প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ দিয়ে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটানোর ইচ্ছা ছিল না সিসিডিএমের। প্রস্তুতির প্রায় সব ধাপই এগিয়ে নিয়েছিল তারা। খেলোয়াড়দের দলবদল নির্ধারিত সময়েই সম্পন্ন হয়, কিন্তু কয়েকটি ক্লাবের অনমনীয় অবস্থানের কারণে ১৮ নভেম্বর থেকে লিগ শুরু করার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
পরবর্তী সূচিতে ১১ ডিসেম্বর শুরুর ইচ্ছা থাকলেও সেটিও পিছিয়ে গিয়ে ১৪ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০টি ক্লাবের মধ্যে ১৩টি তাদের বার্ষিক অনুদানের চেক বুঝে নিলেও বাকি কয়েকটির অবস্থান লিগ আয়োজনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ৭ অক্টোবর এবং ২ ডিসেম্বর- দুটি আলাদা সংবাদ সম্মেলনে অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন লিগ বর্জনের অবস্থান স্পষ্ট করে। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিসিবিও আজ (১০ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন ডাকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির সহ-সভাপতি ও পরিচালক ফারুক আহমেদ, সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন, ফ্যাসিলিটিজ কমিটির চেয়ারম্যান শানিয়ান তানিম এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান মোকসেদ আলম বাবু।
লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তারা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মাসুদুজ্জামান, আবাহনীর পরিচালক শেখ বশির আহমেদ মামুন এবং সূর্যতরুণের কর্মকর্তা ফাহিম সিনহার অভিযোগের জবাব দেন। এ ছাড়া বিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে লিগে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তামিমকে ধন্যবাদ জানান ফারুক।
ফারুক আহমেদ বলেন, প্রতিবাদের পথ অনেক রকম হতে পারে, কিন্তু খেলা বন্ধ করে দেওয়ার মতো পথ ক্রিকেটারদের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনবে না। তার ভাষায়, 'একটা ব্যাপার স্পষ্ঠ। যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, তারাই এখন লিগ বর্জনে সোচ্চার। প্রতিবাদের ভাষা অনেক আছে। তাই বলে ক্রিকেটকে বন্ধ করা প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। দেশে গুরুত্বপূর্ণ হলো খেলা। লিগ না হলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন ক্রিকেটাররা। সে কারণেই ক্রিকেটারদের স্বার্থে খেলা মাঠে গড়ানো দরকার।'
ক্লাব ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েনের প্রশ্নে তিনি আরও জানান, ক্লাবগুলোর দীর্ঘ দিনের বিনিয়োগ দেশের ক্রিকেটকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে, এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। তবে লিগ না হলে বোর্ড বিকল্প টুর্নামেন্ট আয়োজনের দিকেও নজর রাখছে। তিনি বলেন, 'ক্লাব ক্রিকেট টাকা পয়সা খরচ করে আজ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে ক্লাব ক্রিকেট শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত না হলে কিংবা সকল ক্লাব অংশ না নিলে ক্রিকেটারদের জন্য বিকল্প ভাবনাও আছে বিসিবির। এমনটাই জানিয়েছেন ফারুক আহমেদ-' ক্লাব ক্রিকেট না হলে বোর্ড বিকল্প টুর্নামেন্ট করবে।'
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে সিসিডিএম জানায়, ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের সংগঠনটি বিসিবি বা সিসিডিএমের স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনও নেই। তাই তাদের ঘোষণাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণযোগ্য মনে করছে না সিসিডিএম। সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান দীপন আরও বলেন, কথায়-বার্তায় বর্জনের হুমকি শোনা গেলেও কোনো ক্লাব এখনো পর্যন্ত নিজেদের লেটারহেডে লিখিতভাবে লিগে না খেলার সিদ্ধান্ত জমা দেয়নি।

