অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তৃতীয় দিন শেষে শক্ত অবস্থানে দিন শেষ করেছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ব্রিসবেনের গাবায় প্রথম ইনিংসে তারা বিশাল ৫১১ রান তুলেছে। ইংল্যান্ডের ৩৩৪ রানের জবাবে অজিরা ১৭৭ রানের লিড নিয়ে তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করে।
দিনের শুরুতে অপরাজিত দুই ব্যাটার অ্যালেক্স কেয়ারি ও মাইকেল নেসার মাঠে নামলেও খুব দ্রুতই ভাঙে তাদের জুটি। দলীয় ৩৮৩ রানে কেয়ারি ফিরলে নেসারও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে এরপরই মিশেল স্টার্ক ব্যাট হাতে ইংলিশ বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে যান। ডগল্যান্ড বোল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে ৭৫ রানের জুটি গড়ে মাত্রায় বাড়ান দলের সংগ্রহ। ১৪১ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসে ১৩টি চারে সাজানো ৭৭ রান করে স্টার্ক ফিরলে থামে অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকাও।
বিজ্ঞাপন
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটার অর্ধশতকের বেশি রান করেন। জেক ওয়েথার্ল্ড ৭৮ বলে ৭২, মার্নাস লাবুশানে ৭৮ বলে ৬৫, স্টিভ স্মিথ ৮৫ বলে ৬১, অ্যালেক্স কেয়ারি ৬৯ বলে ৬৩ রান করেন। দলের বড় সংগ্রহে সবাই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন ব্রাইডন কার্স। ১৫২ রানের বিনিময়ে তিনি নেন ৪ উইকেট। অধিনায়ক বেন স্টোকস নেন ৩ উইকেট, বাকিরা নেন একটি করে।
৫১১ রানের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৬ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। ফলে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংস হার এড়াতে এখনো ৪৩ রান করতে হবে বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকসদের। ৬ ওভার শেষে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৫ রান তুলে অসাধারণ আত্মবিশ্বাস দেখান ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। তবে ডিনার বিরতির পরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ইতিবাচক শুরু করলেও বিরতি থেকে ফিরেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড।
ডিনার পরের দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম আঘাত আসে। ডানহাতি পেসার স্কট বোল্যান্ডের গুড লেংথ বল নিচু হয়ে স্টাম্প ভেঙে দেয় বেন ডাকেটের। ১৫ রান করা ডাকেট সাজঘরে ফেরায় ভাঙে ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি। এরপর ওলি পোপ চেষ্টা করেছিলেন জ্যাক ক্রলির সঙ্গে একটা জুটি গড়ে দলকে স্থিতিশীল করতে। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি। মাইকেল নেসারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে নিজেকেই ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩২ বলে ২৬ রান করেই বিদায় নেন পোপ।
ইংল্যান্ডের রান তিন অঙ্কে যাওয়ার আগেই থামে প্রথম ইনিংসের হাফসেঞ্চুরিয়ান জ্যাক ক্রলির ইনিংস। ৪৪ রান করে নেসারের বলেই আউট হন তিনি। ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে না পারায় আরও চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় আশা জো রুটও দলকে হতাশ করেন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার ৩৬ বলে মাত্র ১৫ রান করেই ফিরতে বাধ্য হন। শুরুতে আম্পায়ার তাকে নট-আউট দিলেও অস্ট্রেলিয়ার রিভিউ নেওয়ার পর দেখা যায়, ক্যারির গ্লাভসে যাওয়ার আগে বলটি রুটের ব্যাট ছুঁয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
এরপর প্রায় একইভাবে আউট হন হ্যারি ব্রুক। বোল্যান্ডের অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা ডেলিভারিতে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় কিপার অ্যালেক্স কেয়ারির হাতে। ২১ বলে ১৫ রান করে আউট হন এই তরুণ ব্যাটার। ইনিংসের পতনের তালিকা আরও বড় করেন জেমি স্মিথ। মিচেল স্টার্কের গতির বাউন্সার সামলাতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।
শেষ বিকেলে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ইনিংস সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন উইল জ্যাকস ও অধিনায়ক বেন স্টোকস। দিনশেষে এই দু’জনই দলের হাল ধরে রেখে মাঠ ছাড়েন। তৃতীয় দিন শেষে ম্যাচের চিত্র বলছে, অস্ট্রেলিয়া সুবিধাজনক অবস্থানে, তবে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধ গড়তে পারলে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বাড়বে।

