যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির কেনেডি সেন্টারে রঙিন আলো আর তারকার মেলায় শেষ হয়েছে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র। ৪৮ দলের এই মেগা আসরে সবচেয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছে গ্রুপ ‘আই’ যাকে অনেকেই এখন থেকেই ‘গ্রুপ অব ডেথ’ বলতে শুরু করেছেন।
গ্রুপ আই-এর চার দল
-ফ্রান্স (দুইবারের চ্যাম্পিয়ন, সর্বশেষ ২০১৮ জয়ী, ২০২২ রানার্স-আপ)
-নরওয়ে (২৮ বছর পর বিশ্বকাপে ফিরছে, ইতালিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে সরাসরি কোয়ালিফাই)
-সেনেগাল (আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নদের উত্তরসূরি, মানে-জ্যাকসন-সারের দল)
-প্লে-অফ বিজয়ী (ইরাক/বলিভিয়া/সুরিনামের মধ্যে একটি)
বিজ্ঞাপন
দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স বরাবরই বড় টুর্নামেন্টে ভয়ংকর দল। দিদিয়ের দেশমের দলে রয়েছেন এমবাপে, উসমান দেম্বেলে, জুলস কুন্দে, গুস্তোসহ তারকাদের দীর্ঘ তালিকা। ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০২২ সালেও খেলেছে ফাইনাল। এবারও তাদের লক্ষ্য স্পষ্ট ট্রফি।
এদিকে নরওয়ে ২৮ বছর পর ফিরছে বিশ্বকাপে, এবং তারা ফিরছে দুরন্ত ফর্মের ওপর ভর করে। ইতালিকে ৪–১ গোলে হারানো, বাছাইপর্বের আট ম্যাচেই জয়, সব মিলিয়ে হলান্ড, ওডেগোর, সান্দের বার্গরা এখন ভয়ংকর এক দল। সর্বশেষ ১০ ম্যাচের ৯টিতে জয়ের রেকর্ডও তাদের বড় আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে।
এ ছাড়া আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসা সেনেগালও এই গ্রুপকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছে। সাদিও মানে, নিকোলাস জ্যাকসন, ইসমাইলা সার- এই তারকাদের আক্রমণভাগ যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি। চমকে দিতে পারে প্লে-অফ জয়ী দলও। ইরাক, বলিভিয়া বা সুরিনাম- এই তিন দলের যেকোনো একটি প্লে-অফ জয় করে জায়গা পাবে গ্রুপ আই-এ। ফলে গ্রুপটি আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে।
কেন এই গ্রুপ সবচেয়ে কঠিন?
বিজ্ঞাপন
ফ্রান্স-নরওয়ে ম্যাচকে ঘিরে ভক্তদের উৎসাহ তুঙ্গে। দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি অনেকেই এই ম্যাচটিকে দেখছেন এমবাপে বনাম হালান্ডের ব্যক্তিগত দ্বৈরথ হিসেবেও। দুজনই এমন খেলোয়াড়, যাদের একক নৈপুণ্যেই ম্যাচের ফল বদলে যেতে পারে। তাই ‘আই’ গ্রুপে এই লড়াই নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি উন্মাদনা কাজ করছে সমর্থকদের মধ্যে।
গ্রুপে থাকা সেনেগালকেও ভয় পাচ্ছে ফ্রান্স। ইতিহাস বলছে, আফ্রিকান দলটির কাছে হোঁচট খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে ফরাসিদের। ১৯৯৮ সালে ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপ জয়ের পর ফেভারিট হিসেবে ২০০২ সালের বিশ্বকাপে নামে ফ্রান্স। তবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই সেনেগালের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় তাদের। ওই জয়ই সেনেগালকে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে তোলার পথ করে দিয়েছিল।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও নজর কাড়ে সেনেগাল। শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিলেও বড় দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্য আছে, এটা জোরালোভাবেই প্রমাণ করেছে তারা।
ফ্রান্সের বিশ্বমঞ্চের অভিজ্ঞতা, নরওয়ের ঝড়ো ফর্ম, সেনেগালের আফ্রিকান আগ্রাসন, সব মিলিয়ে এই গ্রুপে প্রতিটি ম্যাচই হতে চলেছে উত্তেজনাপূর্ণ। আর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলান্ড বনাম এমবাপে। আধুনিক ফুটবলের দুই মহাতারকার লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে ফুটবল বিশ্ব।

